ঢাকা: এবার এক ভিন্নতর পরিবেশে পালিত হল শাহবাগে ‘গণজাগরণ মঞ্চের’ দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর যেখানে এই সংগঠনের ডাকে কয়েক লাখ মানুষ সমবেত হয়েছিলেন, সেখানে মাত্র ২ বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়েছেন শ খানেক লোক।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গণজাগরণে মঞ্চের এক সমাবেশে শাহবাগে প্রায় কয়েক লাখ লোকের সমাগম হয়েছিল। বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, সেটা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বড় গণজমায়েত।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, গণজাগরণ মঞ্চের কিছু বিতকির্ত কর্মকাণ্ডের কারণেই ২ বছরের মাথা আজ তাদের এই দুরাবস্থা। এর মধ্যে রয়েছে- কিছু গণজাগরণকর্মীর ইসলাম বিরোধী ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক।
সংগঠনটির বিপক্ষে আমার দেশ পত্রিকা ও কিছু ডানপন্থী মিডিয়া অবস্থান নিয়ে তাদের সম্পূর্ণ বিতকির্ত করে ফেলে। এই ঘটনার পর আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় আমার দেশ, ইসলামিক টিলিভিশন ও দিগন্ত টেলিভিশন।
বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহের জন্য বুধবার মিডিয়া কর্মী ও অন্যান্যদের মুঠোফোনের মেসেজে আহ্বান জানান মঞ্চের সংগঠক ইমরান এইচ সরকার।
মুঠোফোনের মেসেজে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দেশ, দেশের শিক্ষা, অর্থনীতি, মানুষ ও দেশের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় চলে আসুন শাহাবাগে’।
একই সঙ্গে মেসেজটি অন্যদের মধ্যে ফরওয়ার্ড করার আহ্বানও জানানো হয়।
অথচ বৃহস্পতিবার শাহবাগে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১টা থেকে শ খানেক গণজাগরণকর্মী জড়ো হয়ে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকের রাস্তার একপাশ বন্ধ করে বিভিন্ন ধরণের শ্লোগান দিচ্ছেন।
অপর দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে কামাল পাশার নেতৃত্বে মঞ্চের অপর পক্ষ অবস্থান নিয়েছে। যাতে সর্বসাকল্যে ২৫ জন লোক রয়েছে এবং এখানে অংশ নিয়েছে জাসদ ছাত্রলীগ, যুদ্ধাপরাধী বিচার মঞ্চ, ব্লগারদের কয়েকটি সংগঠনের সমন্বয়ক সংগঠন ‘বেয়াফ’সহ আরো কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ইমরান সরকারের সমাবেশ থেকে বলা হয়, রাজনীতির নামে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ ও জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বেলা একটার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে কামাল পাশা চৌধুরী জানান, বিকেল তিনটা থেকে তার সমর্থক অংশটিও শাহবাগে লাগাতার অবস্থান করবে।
‘মানুষ হত্যার রাজনীতি বন্ধ কর করতে হবে’, ‘হত্যা খুনের রাজনীতি, চাই না’, ‘যে হাত মানুষ পোড়ায়, সে হাত ভেঙে দাও’ এবং ‘আমার ভাই পুড়ছে কেন? প্রশাসন জবাব চাই’সহ বেশ কয়েকটি স্লোগান দিচ্ছে ইমরান অংশের সমর্থকেরা।
পাশেই কামাল পাশা চৌধুরীর অংশটিও মাইকে বিভিন্ন প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশন করছে। এতে এই এলাকায় ব্যাপক শব্দদূষণ হচ্ছে।
তবে এই আয়োজনে পাওয়া জায়নি গনজাগারন মঞ্চের অনেক নেতাদেরি, ছিল খুব অল্প সংখক কর্মী সমর্থক। কেন এই দুর্দশা গণজাগরণ মঞ্চের? প্রশ্ন আছে কিন্তু উত্তর নেই।