সশস্ত্র বাহিনীকে ধমক দেয়া আইএসপিআর’র বিজ্ঞপ্তি এবং সংবিধানে পানিশমেন্টের বিকল্প

0

sheikh-latestশেখ মহিউদ্দিন আহমেদঃ রোববার দিন ঘটা করে সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) নাম ঐ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে “সশস্ত্র বাহিনী একটি দেশপ্রেমিক সংগঠন, যা সম্পূর্ণরূপে সংবিধান ও দেশের আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।” অর্থাৎ সংবিধান ও আইন যা কাগজের পাতায় ছাপানো তার প্রতি সশস্ত্র বাহিনী অনুগত কিন্তু নাগরিক বা জাতির প্রতি নয়। এ কথাটিই সত্য ধরে নিতাম যদিনা এটি সেনা সদর থেকে প্রকাশের জন্য প্রেরিত হতো। কিন্তু চালাকিটা এইখানেই করা হলো যে মিসেস হাসিনা ওয়াজেদের দপ্তরের অধীন আইএসপিআর থেকে এ বিজ্ঞপ্তিটি দেয়া হয়েছে। সাধারণ চোখে এটিকে মিডিয়ার দিকে বার্তা মনে হলেও মূলত এর মাধ্যমে হাসিনা সশস্ত্র বাহিনীকে ‘ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের’ ধমক দিয়েছেন। কিন্তু হাসিনা ভুলে গেছেন সশস্ত্র বাহিনী যদি জনগনের পক্ষে চলে যায় তখন আর এই দুই টাকার সংবিধানও থাকে না আর ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দেয়ার আগেই ধমক দেয়ার লোকজন পানিশমেন্ট খেয়ে হারিয়ে যায়।

একথা এখন বুক উচিয়েই বলতে পারি শেখনিউজ ডট কমই হলো সবচেয়ে অগ্রগামী যারা নি:সংকোচে এবং নির্ভীকভাবে জাতীয় স্বার্থের অনুকূলে সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরের সংবাদ প্রকাশে এগিয়ে। আইএসপিআর’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি যে মূলত শেখনিউজ ডট কমসহ এই ধারার অন্যান্য মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে দেয়া তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সেনা সদরের বাইরে গিয়ে হাসিনা ওয়াজেদের অধীনস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আওতাধীন আইএসপিআর থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকে সাদা চোখে দেখার কোনই অবকাশ নেই। ‘

পার্শবর্তী দাদাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত একটি অনলাইন পোর্টালে যখন আইএসপিআর এর এই বার্তাটিকে নিউজ হিসেবে প্রকাশ করে লেখা হয় ইংগিতপূর্ণ হুমকী খটকা সেখানেই। তবে কি হাসিনা ভয়ংকর কোন হুমকীর ভেতর নিজেকে আবিস্কার করেছেন? তবে কি হাসিনা ৫৭ জন সেনা অফিসারের হত্যাকান্ডের সহযোগিতার জন্য প্রতিশোধের ভয়ে দ্বিগ্বিদিক হয়ে এরূপ বিক্ষিপ্ত আচরণ শুরু করেছেন? নিলে ওই নিউজ পোর্টাল আইএসপিআর’র বিজ্ঞপ্তির সাথে এই ভাবে কয়েকটি লাইনে কেন অযাচিতভাবে জুড়ে দেবে,”বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা বাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের ইতিহাস রয়েছে। সর্বশেষ ২০০৭ সালের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থানে অস্থিরতার মধ্যে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ হয়েছিল। তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন আওয়ামী লীগ তার গত মেয়াদে প্রণয়ন করেছে।বর্তমান পরিস্থিতি জরুরি অবস্থা জারির মতো নয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার সংসদে দেওয়া বক্তব্যে অসাংবিধানিক ক্ষমতা দখলের জন্য ‘ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের’ বিধান যোগ করার কথা তুলে ধরেছিলেন।”

আমরা ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখব, পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত সামরিক তদন্ত কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি মিসেস হাসিনা। সেনাবাহিনী পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করায় বিরক্তি প্রকাশ করে হাসিনা তা নাকচ করে দেন। প্রথমদিকে এ কমিটির কার্যপরিধি বিদ্রোহের সময় খোয়া যাওয়া সেনাবাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদের হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত সামরিক বিষয়েই সীমাবদ্ধ ছিল। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে সেনাবাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়ায় হাসিনা ক্ষুব্ধ হন।তখন থেকেই সেনাবাহিনীকে শেকল পড়ানোর কাজ শুরু হয়। সাফল্যজনকভাবে সেটি হাসিনা করতেও সমর্থ হয়েছেন তবে ভারতের সহায়তায়। ভারতের প্রতিরক্ষা স্বার্থ এবং নিজের পারিবারিক ও দলীয় স্বার্থ একই সমন্ত্রালে নিয়ে আসতে সক্ষম হওয়ায় এই সফলতা আসে। তিনি এবং ‘র’ সক্ষম হয়েছেন অনেক দালাল এবং গণবিরোধী অফিসার ও সদস্য তৈরী করতে। এটি ওপেন সিক্রেট। এটি বলে কি হবে তার পরোয়া আমি করি না। কোরান শরিফ শপথ করে কোন সেনা অফিসার ভীত হয়ে গর্তে ঢুকে যেতে পারেন, কিন্তু মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা আমি ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাওয়ার চিন্তাও করি না।

তবে সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের জন্য একটি বার্তা আমিও দিচ্ছি। এটি সার্বজনীন আইন। জুরিসপ্রুডেন্স এর অন্যতম দার্শনিকদের লিখিত তত্বগুলোর উপরই বিশ্বের আইনগুলো তৈরী ও বিবর্তিত হয়। তাদেরই কিছু উদ্ধৃতি দেয়া হলো সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের জন্য। আইনের ও সংবিধানের ফাক ফোকর আমরাও জানি। ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের উল্টো রাস্তাও আমাদের জানা আছে। শুনুন তাহলে: St. Augustine said that, ”There is no law unless it be just”. Aquinas said: ”So the validity of law depends upon its justice.” As per Duguit what he called THE PRINCIPLE OF SOCIAL SOLIDARITY, The State is nothing more than an organisation of indivisuals and it is they who issue commands and carry out decisions. Duguit proceeded to assert that when the state ceased to promote Social Soliderity there is a duty to REVOLT AGAINST IT.

Austrian jurist and legal philosopher Hans Kelsen (1881-1973) wrote,……. Law is valid only as positive law. A norm is valid because it has been created in a certain way, that is, in a way determined by another norm, therefore that other norm is the immediate reason for the validity of the new norm.

A change of the basic norm may take place by, for instance, a group of individuals seizing power by force and removing the legitimate government and introducing another form of government. If they succeed and the old order ceases, and the new one begins to function because the individuals whose behaviour the new order regulates actually behave in conformity with the new order, then this new order is considered as a valid order. The principle of legitimacy is restricted by the principle of effectiveness. (General Theory of Law and State, 1946).

এই সংবিধান আর আইনের কাগুজে ধমক দিয়ে দেশপ্রেমিকদের কোন লাভ নেই। যা হবার তা হবেই। নিরস্ত্র নাগরিকদের রক্তের এই হলি খেলা বন্ধে সশস্ত্র বাহিনী না এগিয়ে এলে প্রবাসী বা বিপ্লবী সরকার হবে। হতে পারে বিপ্লবী সশস্ত্র বাহিনী। কোন কিছুই অসম্ভব নয়। মানুষের মুক্তির আকাংখা পৃথিবীর ইতিহাসে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারা সম্ভব নয়; কেবল সাময়িক দাবিয়ে রাখা যায়।
সূত্রঃ www.sheikhnews.com

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More