হোয়াইট হাউজের উগ্রবাদী সহিংসতা প্রতিরোধ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিষয়ে বার্তা আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি সারাহ সিওয়াল। গত বুধবার ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে সম্মেলন উপলক্ষে দেয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও জনগণের দাবি আদায়ে সিভিল সোসাইটির প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ অব্যাহত রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আহ্বান জানিয়ে আসছে বলেও জানান সারাহ সিওয়াল। ব্রিফিং পরিচালনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতের মুখপাত্র মেরি হার্ফস। এ সময় নিউ ইয়র্কের ফরেন প্রেস সেন্টার থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন বাংলাদেশের সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ সময় তিনি জানতে চান, বাংলাদেশ একটি মডারেট মুসলিম দেশ, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কটময় মুহূর্ত চলছে। গণতান্ত্রিক সমাজে সহনশীলতা অত্যন্ত জরুরিÑ বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য। অথচ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। একটি ভীতিকর পরিস্থিতি চলছে দেশটিতে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বলছে বাংলাদেশে বর্তমানে যা চলছে তা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় বরং এটি সন্ত্রাসবাদী ও উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড। অথচ পশ্চিমা দুনিয়ার সব গণমাধ্যমসহ সবাই জানে, এটি একটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সঙ্কট। কারণ ২০১৪ সালে একটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় আসে। এ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমনি একটি বাস্তবতায় বাংলাদেশ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে সম্মেলনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কী বার্তা থাকবে? জবাবে সারাহ সিওয়াল বলেন, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ যে এই সম্মেলনের মাধ্যমে উগ্রবাদী সহিংসতা প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ উন্মুক্ত হবে। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও জনগণের পক্ষ থেকে সরকারকে অ্যাডভোকেসি করতে সিভিল সোসাইটির প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ অব্যাহতভাবে উন্মুক্ত করে দিতে প্রসিডেন্ট ওবামা কয়েক দফা গুরুত্বারোপ করেছেন।
সারাহ সিওয়াল আরো জানান, এ সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে উগ্রবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয় নিরূপণ করা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়টি সম্মেলনের চতুর্থ অধিবেশনের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন শেষ হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ওয়াশিংটন রয়েছেন।
Prev Post