ঢাকা: সমাদৃত টেলিভিশন চ্যানেলের নতুন রূপ অনলাইন টিভি। একদিকে তথ্য প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নয়ন, অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের উৎপাতে অতিষ্ঠ দর্শকদের নির্মল বিনোদন আর সর্বশেষ সংবাদ জানানোর প্রয়াস থেকেই চালু হয় অনলাইন টিভি। তাই দর্শক টানতে প্রচলিত স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ইতিমধ্যে অনলাইন ভার্সন চালু করেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগেও চালু হয়েছে বেশ কিছু অনলাইন টেলিভিশন। অনলাইন টেলিভিশনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দর্শক নিজের সুবিধামতো সময়ে একেবারে বিনামূল্যে পছন্দের অনুষ্ঠান দেখতে পারেন। তাছাড়া স্মার্ট ফোনেরও মাধ্যমেও এ ধরনের চ্যানেলের অনুষ্ঠান উপভোগ করা যায়। তাই প্রতি নিয়তই অনলাইন চ্যানেলের কদর বাড়ছে। সম্প্রতি ‘পপকর্ন টিভি’ নামে একটি অনলাইন টেলিভিশন চ্যানেল চালু করেছেন নাট্যনির্মাতা রেদওয়ান রনি। পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে থাকা এই চ্যানেলটি নিয়ে বেশ আশাবাদী এই নির্মাতা বলেন, ‘অনলাইন টেলিভিশন যুগের চাহিদা। দিন যত যাচ্ছে মানুষ তত প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে। তারা হাতের মুঠোয় সবকিছু রাখতে চায়। এ কারণেই অনলাইন টেলিভিশন চালু করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ শুধুমাত্র নিজের পছন্দের অনুষ্ঠানগুলোই দেখতে চায়। এ জন্যে তাদের প্রয়োজন পছন্দ করার অপশন। যা কেবল অনলাইন টেলিভিশনেই সম্ভব।’
তারকা দম্পতি হিল্লোল-নওশীন যৌথভাবে ‘থার্ডবেলডটকম’ নামে একটি অনলাইন টিভি পরিচালনা করছেন। ‘বানাবো লোকাল, মাতবে গ্লোবাল’ এই স্লোগান নিয়ে পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে রয়েছে চ্যানেলটি। এ প্রসঙ্গে হিল্লোল বাংলামেইলকে বলেন, ‘দর্শকদের রুচি ও চাহিদার কথা চিন্তা করেই চ্যানেলটি চালু করেছি। লাইভ কনসার্ট থেকে শুরু করে রূপচর্চা সবকিছুই এখানে থাকবে। তাছাড়া নতুন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী থাকবে পুরানো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলোও।’ অনলাইন টেলিভিশনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চাহিদা ও রুচি বদলেছে। তাছাড়া মানুষের কর্মব্যস্ততা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও, পছন্দের অনুষ্ঠানটি সময় মতো দেখতে পারে না। কিন্তু অনলাইন টেলিভিশনে এটা কোন সমস্যা না। তাই আমি মনে করি, অনলাইন টেলিভিশন আমাদের জন্যে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।’
এদিকে বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রফেশনাল ব্রডকাস্টিং সার্ভার ব্যবহার করে নিয়মিত ভাবে সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। তাছাড়া বেশকিছু চ্যানেল ফ্রি সার্ভারও ব্যবহার করছে। এ ব্যাপারে অনলাইন নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘অনলাইন টেলিভিশন বিষয়টা আমাদের দেশে নতুন হলেও, প্রতি নিয়তই এর চাহিদা বাড়ছে। শুধুমাত্র ব্রডকাস্টিং সার্ভার ব্যবহার করে যে কেউ এ ধরনের একটি চ্যানেল চালু করতে পারে। কারণ এটি প্রচলিত টেলিভিশনের মতো লাইসেন্সের আওতায় পরে না। তাছাড়া দেশে এখন পর্যন্ত অনলাইন নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি। তবে অনলাইন নীতিমালা পাস হলে এটা অবশ্যই নীতিমালা অনুসরণ করে চালাতে হবে।’
এছাড়া কেটিভি, বিদেশ টিভি, ইউএনএন টিভি সহ, ভয়েস মেরিনা সহ বেশ কিছু অনলাইন টিভি তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
অনলাইন টিভির জনপ্রিয়তা উত্তর উত্তর বেড়েই চলেছে। তবে ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি পেলে অনলাইন টিভির দর্শক আরো বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।