কিছুটা দুরন্তপনা, কিছুটা উচ্ছ্বাস, অনেক স্বপ্ন, খানিকটা ভয়- এটাই হচ্ছে টিনএজ। আগামীর জন্য নিজেকে তৈরি করার সময়। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যায়ে জানতে হবে নিজেকে
ফাহমিদা জাবীন
টিনএজ সময়টা এমন- না খুব বড়, আবার না ছোট। মাত্র শৈশব পার হয়ে আসা এই সময়ের সাথে খাপ-খাওয়াতে গিয়ে অনেকেই বুঝতে পারে না কী করতে হবে। কিভাবে সাজতে হবে, কিভাবেই বা পরিচর্যা করতে হবে নিজের ত্বক ও চুলের। কেউ কেউ ওজন কমানোর চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া একেবারে ছেড়ে দেয়, কেউ আবার কড়া সাজ নিয়ে অন্যের কাছে অপ্রস্তুত হয়। তাই এই সময়ে নিজের সম্পর্কে কিছু বিষয় জেনে রাখা খুব প্রয়োজন।
প্রথম কথাই পরিচ্ছন্নতা : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি নজর দিতে হবে প্রথমেই। কারণ এই বয়সে ত্বক এমনিতেই সুন্দর থাকে। শুধু পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে। এর জন্য অনেক টাকা খরচ করারও প্রয়োজন নেই। ঘরোয়া নানা পদ্ধতিতেই ত্বক পরিষ্কার করা যেতে পারে। তবে কিনজার ও ময়শ্চারাইজার কেনার সময় অবশ্যই ত্বকের ধরন অনুযায়ী কিনতে হবে।
নিজেই তৈরি করুন সুগার স্ক্রাব : ত্বক পরিচর্যায় স্ক্রাব একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে ঘরেই তৈরি করা যায় চমৎকার স্ক্রাব। দুই ভাগ চিনি আর এক ভাগ তেল একসাথে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার স্ক্রাব হিসেবে পুরো বডিতে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর গোসল করুন। ত্বক থাকবে সতেজ ও উজ্জ্বল।
ত্বক পরিচর্যায় নারকেল তেল : খুবই সাধারণ ঘরোয়া উপকরণ নারকেল তেল সৌন্দর্য পরিচর্যায় হতে পারে চমৎকার উপাদান। বডি স্ক্রাব, হেয়ার মাস্ক, মিল্ক বাথ অথবা ময়শ্চারাইজার সব কিছুতেই নারকেল ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত চুলের জন্য ড্রাই শ্যাম্পু : যাদের চুল তৈলাক্ত তারা প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। বড় শপিং মলে ড্রাই শ্যাম্পু পেয়ে যাবেন। এর বিকল্প হিসেবে হাতে অল্প পাউডার ঘষে চুলে হাতটা বুলিয়ে নিন। তৈলাক্ত ভাব কমে যাবে।
হেয়ার কালার নির্বাচনে সতর্ক হোন : সবাই হেয়ার কালার করছে বলেই করতে হবে, এভাবে না ভেবে বরং যদি কালার করতে চান তাহলে এমন কালার নির্বাচন করুন যা আপনার গায়ের রঙের সাথে মানায়। একইভাবে কতটা চুল কালার করাবেন সেটাও আগেই বিউটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে নিন। হেয়ার কালার করা একটি জটিল বিষয়; তাই এর জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
সব সময়ের জন্য ভেসলিন : মেকআপ তোলার জন্য ভেসলিন সবচেয়ে ভালো কাজ করে। বিশেষ করে চোখের মেকআপের। অন্য দিকে, ঠোঁটের যত্নেও এটি খুবই কার্যকরী। ঠোঁটে ভেসলিন মেখে নরম টুথব্রাশের সাহায্যে ঘষে নিন। পরে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। ঠোঁট নরম ও মসৃণ থাকবে।
ব্রণের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন : যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তাদের উচিত ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। না জেনে নানা জিনিস ব্যবহার করে অনেকেই ব্রণপ্রবণতা বাড়িয়ে দেয় ও সমস্যায় ভোগে। তাই শুরুতেই সঠিক চিকিৎসা নিলে ওই সমস্যায় পড়তে হবে না।
ভালো কোম্পানির প্রসাধনী বেছে নিন : এই বয়সে চুল ও ত্বক এমনিতেই ভালো থাকে; তাই খুব বেশি প্রসাধনীর প্রয়োজন পড়ে না। তার পরও যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করেন, কেনার আগে সেগুলো অবশ্যই ভালো কোম্পানি দেখে কিনতে হবে।
প্রসাধনীর ওপর অর্থ ব্যয় না করে পরিচর্যার ওপর ব্যয় করুন : কিনজার, মেকআপ রিমুভার, পলিশ রিমুভার- এসব পণ্যের জন্য বেশি অর্থ ব্যয় না করে বরং ময়শ্চারাইজার, ফাউন্ডেশন, লিপকালার এ জাতীয় পণ্যে ব্যয় করুন ভালো ফল পাবেন।
প্রসাধনী কেনার আগে পরীক্ষা করুন : ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক, ব্লাশ, পাউডার এসব কেনার আগে পরীক্ষা করে দেখুন এগুলো আপনার স্কিনের সাথে মানানসই কি না। মাশকারা, আইশ্যাডো, লিপগ্লস এগুলো কেনার আগে অবশ্য পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন : ত্বক দীর্ঘ দিন সুন্দর রাখতে চাইলে টিনএজ থেকেই নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ফাউন্ডেশন বেশি নয় : প্রতিদিন ফাউন্ডেশন ব্যবহার ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে পারে। তাই সারা মুখে ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে শুধু চেহারার স্পট, ব্রণ ইত্যাদি ঢাকার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।
চোখ ও ঠোঁট দুটো একসাথে হাইলাইট করার চেষ্টা করবেন না; বরং একটাকে হাইলাইট করুন। হাত-পায়ের যত্ন নেয়াও যেন বাদ না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।