ঢাকা: ম্যাচটি নিয়ে দর্শকদের মাঝে যেন একটু বেশিই রোমাঞ্চ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অসাধারণ পারফরম্যান্স, পাকিস্তানের অফ ফর্ম এবং ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের হার- ১৬ বছর পর আরও একটি নর্দাম্পটন সৃষ্টির আশায় আজ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দর্শকরা। অথচ, নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ম্যাচে নেই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। পরিবর্তে সহকারী অধিনায়ক সাকিব আল হাসান পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব।
টসে জিতে সাকিব আল হাসান ব্যাট করার সিদ্ধান্তই নিলেন। ঠিক দুপুর আড়াইটায় শুরু হলো বাংলাদেশ-পাকিস্তান ব্যাট-বলের লড়াই। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে ব্যাট করতে নামলেন সৌম্য সরকার। শুরুতেই বল করতে আসেন পাকিস্তানের জুনায়েদ খান। তাকে মোকাবেলা করেন তামিম ইকবাল। প্রথম বলেই এক রান নিয়ে নিলেন তামিম। এরপর পঞ্চম বলে গিয়ে সৌম্য নিলেন এক রান। এভাবেই প্রথম ওভারে দু’জন রানের খাতা খোলেন।
প্রথম বাউন্ডারির মার মারেন তামিম দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে রাহাত আলিকে। এরপর একের পর এক পাকিস্তানি বোলারদের ওপর রীতিমত ঝড় বইয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। অষ্টম ওভারে আলোচিত বোলার ওয়াহাব রিয়াজকে আনা হয়। কিন্তু তাকেও দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিছাড়া করে স্বাগত জানান সৌম্য সরকার।
১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এসে মারাত্মক ভূলটা করে বসলেন সৌম্য সরকার। ওয়াহাব রিয়াজের বল ঠেকান তামিম। উল্টো দিক থেকে দ্রুত রান নিতে তামিমকে কল দেন সৌম্য। কিন্তু নিজেই ঠিকমত পৌঁছাতে পারেননি ক্রিজে। তার আগেই উইকেট ভেঙে দেন ওয়াহাব। সুক্ষ ব্যবধানেই রান আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। তার আগে স্কোরবোর্ডে ৩৬ বলে ২০ রান যোগ করেন তিনি। তিনটি ছিল চারের মার।
বিশ্বকাপে অসধারণ পারফরমার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশার বেলুন অনেক বেশি ফুলে উঠেছিল। কিন্তু ভক্তদের হতাশই করলেন তিনি। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫ রান করেই সাজঘরে ফিরে যেতে হলো টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যানকে। ২০তম ওভারের শেষ বলে রাহাত আলির বলে বোল্ড হয়ে যেতে হলো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও তামিম আর মুশফিকের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সমালোচকদের কঠিক জবাবটা ব্যাট হাতেই দিলেন তামিম। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারে ২৯তম হাফ সেঞ্চুরি। ৭৫ বলে হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছে যান তামিম। হাফ সেঞ্চুরি করেই থেমে থাকেননি তামিম। ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরিটাও তুলে নিলেন তামিম। ২০১৩ সালের মার্চের পর (প্রায় ২ বছর রপর) সেঞ্চুরিটা করলেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছাতে তামিম খেলেন ১১২ বল। ১২টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
তামিমের সঙ্গে সঙ্গে মুশফিকও আছেন তার নিজের সেরা ফর্মে। বিশ্বকাপের সেই ফর্ম যেন মিরপুরে ফিরিয়ে আনলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত দু’ব্যাটসম্যান মিলে ১৭৮ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। ১৩২ রান করে ফিরে যান তামিম ইকবাল। ৪২তম ওভারের চতুর্থ বলে ওয়াহাব রিয়াজের বাউন্সারকে পুল করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন তামিম। মিড অফে তার ক্যাচটি ধরেন অভিষিক্ত মোহাম্মদ রিজয়ান। ১৩৫ বলে ১৩২ রান করে ফিরে গেলেন তামিম।
তামিমের পর মুশফিকও সেঞ্চুরি করেন। প্রথমে ৪২ বলে করেন হাফ সেঞ্চুরি। এরপর ৬৯ বলে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১৩টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কায় সাজান তিনি তার এই ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৭৭ বলে অবশ্য ১০৬ রান করে আউট হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিমও।