ঢাকা: রায় নিয়ে মন্তব্য করার জেরে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে আইনজীবী তাজুল ইসলাম ও জামায়াতের তিন নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার সকালে চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১- এ এই আদেশ দেন।
অব্যাহতি পাওয়া জামায়াত নেতারা হচ্ছেন- জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ, ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
তবে ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবদুল জব্বার খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে তা জানতে রুল জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এটিএম আজহারুল ইসলামের রায়ের পর ডাকা হরতাল এবং রায় নিয়ে মন্তব্য করায় তিন জামায়াত নেতা, দুই শিবির নেতা এবং অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করে প্রসিকিউশন।
পরে গত ১ জনুয়ারি ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর ৪৯ পৃষ্ঠার এসব অভিযোগ লিখিত আকারে জমা দেয়া হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজহারের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো।’
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ডিফেন্সের যে সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে তা এক ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলেও মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।
এসব সাক্ষ্য-প্রমাণে মৃত্যুদণ্ড হওয়া দূরের কথা, এসব অভিযোগ দাখিলের জন্য প্রসিকিউশনের জরিমানা হওয়ার দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজহারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো’ তাজুলের এমন বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে।
তাজুল ইসলাম জামায়াত-শিবিরের প্রপাগাণ্ডা হিসেবে কাজ করছেন এবং ট্রাইব্যুনালের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপবাদ ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর তাজুলের বক্তব্যের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল-১ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
প্রসিকিউটর মালুম বলেন, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের রায়ের পর আসামিপক্ষ থেকে তাজুল ইসলাম যে বক্তব্য, অঙ্গভঙ্গি ও শব্দচয়ন করেছেন তা মোটেও আইনজীবীসূলভ ছিল না।
এ অভিযোগ শুনে প্রসিকিউশনকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পরামর্শ দেয় ট্রাইব্যুনাল। সে হিসেবে তাজুল ইসলাম, জামায়াতের আমিরসহ তিন নেতা ও ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।