বুধবার ফেসুবকে দেওয়া শেষ প্রোফাইল ছবির পোস্টে লিখেছিলেন, ‘এটা আমার শেষ আপলোড’৷ ছবিতে তাঁর সঙ্গেই ছিল সহপাঠী আর এক তরুণীর ছবি৷ পোস্টটি দেখে শিউরে ওঠেন বন্ধুরা৷ অজানা আতঙ্কে পোস্টও আসতে থাকে একের পর পর৷ কেউ লেখেন, ‘ফোন ধরছিস না কেন?’ কেউ বলেন, ‘ভাই, বাড়ি যা প্লিজ৷’ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে।
বাবা শ্রীপতি সেনের অভিযোগ, ছেলের মৃত্যু অস্বাভাবিক৷ যদিও শনিবার পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি তিনি৷ তবে জানালেন, ‘তরুণীর বাবার হুমকিতেই অপমানিত হয় শান্তনু৷ তার জেরেই ছেলে আত্মহত্যা করে৷’ তবে, ময়না-তদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
শ্রীপতিবাবু জানান, গত দেড় বছর ধরে সহপাঠী ওই তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল শান্তনুর৷ মেয়ের বাড়িতে সম্প্রতি জানাজানি হয়ে যায় সে-কথা৷ অভিযোগ, বুধবার মধ্যমগ্রামের কালীবাড়ি এলাকায় শ্রীপতিবাবুর ফাস্টফুডের দোকানে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে আসেন তরুণীর বাবা৷ প্রভাবশালী ওই ব্যবসায়ী জানান, তার মেয়ের সঙ্গে যেন কোনও সম্পর্ক না রাখে শান্তনু৷ অন্যথা হলে দোকান বন্ধ হবে৷ শান্তনুর কলেজেও পড়াও হবে না৷ ছেলের কারও সঙ্গে সম্পর্ক আছে কি না, তা জানতেন না শ্রীপতিবাবু৷ তিনি আশ্বাস দেন, বাড়ি ফিরে ছেলের সঙ্গে কথা বলবেন৷ বৃহস্পতিবার পরীক্ষা ছিল৷ যা কথা হওয়ার তার পরে হবে বলে জানিয়ে ছিলেন শান্তনু৷
নির্ধারিত সময়ের পরও বুধবার বাড়ি না-ফেরায় মধ্যমগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্রীপতিবাবু৷ বারবার ফোন করেও তার সঙ্গে সংযোগ করা যায়নি বলেও জানান৷ পরে বন্ধুদের মাধ্যমে ফেসবুকের পোস্টটির কথা জানতে পারেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ পুলিশের কাছ থেকে ছেলের দেহ উদ্ধারের খবর পান শ্রীপতিবাবু৷ তিনিই ছেলের দেহ শনাক্ত করেন৷
ঘটনার পর থেকেই শোকস্তব্ধ শান্তনুর পরিবার৷ মধ্যমগ্রাম ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রকাশ রাহা বলেন, ‘ছেলেটি ভালো৷ ওর মৃত্যু খুন না অন্য কিছু, তা তদন্ত করে জানা যাবে৷’