প্রেমিকার আত্মহত্যা মেনে নিতে না পেরে একই পথের পথিক হলেন প্রেমিকও। প্রেমিকা সামিরার (১৮)আত্মহত্যার দেড় মাস পরেই আত্মহত্যা করলেন জাবেদ হোসেন (২২)। সোমবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়।
জানা যায়, প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হলে পরিবার থেকে মেনে নেওয়া হয়নি সেই সম্পর্ক। নানাভাবে অপদস্ত আর অপমাণ করা হয় কলেজছাত্রী সামিরা আলম নিকাকে। ভালোবাসার মানুষটিকে পরিবার মেনে না নেওয়ায় নিজেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় সামিরা। নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে এই তরুণী।
প্রেমিকার আত্মহত্যার খবর জেনে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে নিজেকে সামলে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ জাবেদ হোসেন (২২) নামের প্রেমিক তরুণটিও বিষপানে আত্মহত্যা করে।
নিহত জাবেদ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ছোট ছিলোনিয়া গ্রামের মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়ির প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের একমাত্র পুত্র। জাবেদ ফটিকছড়ি কলেজের চলতি এইচ এস সি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাবেদের সঙ্গে একই ক্লাসের ছাত্রী সামিরার এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি তাদের এই প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি পারিবারে জানাজানি হলে অভিভাবকরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। এ অবস্থায় সামিরার পরিবার জাবেদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে বাধা দিলে সে গত ২৪ মার্চ নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। প্রেমিকার আত্মহত্যার পর জাবেদ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। প্রায় দেড় মাস ধরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় জাবেদও বিষপান করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাবেদকে প্রথমে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরের দিকে মারা যায়।
তবে জাবেদের ঘনিষ্ট বন্ধু আনোয়ার জনি বলেন, নিকার সাথে জাবেদের শুধুই বন্ধুত্ব ছিল। নিকার মৃত্যুর আগে জাবেদসহ আমি নিকাকে হাসপাতালে দেখতে যাই। নিকার এমন মৃত্যুর পর জাবেদ মানসিকভাবে খুবই ভেঙ্গে পড়ে। তার উপর নিকার মৃত্যুর জন্য জাবেদ দায়ী বলে অনেকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আসছিল। তার এই যন্ত্রনা থেকে কয়েকদিন আগেও বিষপানে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে সে।