রাজনৈতিক সঙ্কট প্রধানমন্ত্রীর তৈরি করা : বিবিসি : হাসিনার পদত্যাগেই সমঝোতা

0

P1_bbc+hasinaশুক্রবার বিবিসির অনলাইনে প্রকাশিত ‘ইলেকশন ডিভিশনস পুশ বাংলাদেশ টুয়ার্ডস দ্য ব্রিংক’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট প্রধানমন্ত্রীর তৈরি করা। দেশের জনসমর্থন এখনও বিএনপির পক্ষে। আর এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সমঝোতার পথকে সহজ করবে
উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
জনসমর্থন বিএনপির প্রতি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর তৈরি করা এ সঙ্কটে জনসমর্থন এখনও বিএনপির পক্ষে। আর এজন্য তার পদত্যাগই সমঝোতার পথকে সহজ করে দিতে পারে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৩ মাসের জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার কোর্টের রুল অনুসারে ২০১০ সালে এ ব্যবস্থা বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দল বিএনপি ও তার প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের দাবি, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে কারচুপি হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে হরতাল, অবরোধে দেশটি অচল হয়ে পড়েছে। এ ধরনের অবস্থা দেশটিকে খাদের কিনারে নিয়ে যেতে পারে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দেশটিতে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করা হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনে সরকার অনড় বলেই দেখা যাচ্ছে যা সহিংসতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
একতরফা নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলোর উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে উদ্বিগ্ন উন্নয়ন সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ধরনের নির্বাচন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে। তারা এরই মধ্যে দুই দলকেই সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন আয়োজনে ঐক্যমত্যে পৌঁছার আহ্বান জানিয়েছেন।
জরুরি অবস্থা জারি হলেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যদি সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ে আসে তাহলে নির্বাচন অবশ্যই স্থগিত হয়ে যাবে। বর্তমান সংবিধান মতে শেখ হাসিনা নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
জরুরি অবস্থা জারি হলে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা নেবে তা সবচেয়ে বড় বিষয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা কী ঐক্যবদ্ধ এবং শেখ হাসিনাকে সমর্থন করবেন এখনকার মতো। যদি নির্বাচন রক্তাক্ত সহিংসতায় রূপ নেয় কিংবা যদি জরুরি অবস্থা বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় তাহলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের বিষয়টি জোরাল হয়ে উঠবে।
নির্বাচন নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রের সমঝোতার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছ, অনেকে আশাবাদী ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর মধ্যস্থতায় বাংলাদেশের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিতের ব্যাপারে একটা সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে।
এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা চলমান থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। ভঙ্গুর অর্থনীতির উন্নয়ন কঠিন হয়ে পড়বে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More