জেলার ৪টি সংসদীয় আসন হাতছাড়া হবার পর সংরক্ষিত নারী আসনেও কোনো এমপি না পাওয়ায় কুড়িগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। জেলায় সরকারি দলের কোনো সংসদ সদস্য না থাকায় আবারও উন্নয়ন বঞ্চনার আশংকা করছেন তারা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়জয়কার সত্বেও জেলার ৪টি আসনই হাতছাড়া হয় আওয়ামী লীগের। আসন ছেড়ে দেয়ায় ৩টিতে জয়লাভ করে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ও একটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে লড়ে বিজয়ী হন জাপার (মঞ্জু) প্রার্থী।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দলের নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ত করার স্বার্থে সংরক্ষিত নারী আসনে একজন সদস্য
চেয়েছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ দাবীতে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখাও করেছেন জেলা নেতৃবৃন্দ। কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক এমপি মো: জাফর আলীর স্ত্রী লাইলী বেগমকে প্রথম পছন্দ ছিল জেলা নেতাদের। পাশাপাশি উলিপুর উপজেলার সভাপতি মতি শিউলী, অধ্যক্ষ নাসিমা বানু ও গত সংসদের নারী আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ নাজমীন সুলতানা, লাভলী বেগম ও আসমা জাহান সাথী এমপি হতে জোর লবিংও করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দলের প্রার্থী তালিকায় কুড়িগ্রামের কারো নাম না দেখে হতাশ নেতা-কর্মীরা।
জেলার ৩টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এসব আসনে জাপা প্রার্থীদের অনুকূলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। অন্যটিতে জাপা প্রার্থীর কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাকির হোসেন।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এরশাদের ছেড়ে দেয়া কুড়িগ্রাম-২ আসনের উপ-নির্বাচনে মাত্র ১২ হাজার ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া তৎকালীন বিএনপির প্রার্থী এবং বর্তমানে বিরোধী দলের চীফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় সংসদ সদস্য হতে পারেননি জেলা আওয়ামী লীগের কাণ্ডারী মো: জাফর আলী। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে। তাদের সবার প্রত্যাশা ছিল নারী আসনে একজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার। কিন্তু প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিল না থাকায় তারা হতবাক হয়েছেন। শুক্রবার দিনভর এ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম শাহী ও ভোগডাঙা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাপ উদ্দিন জানান, জাফর আলীসহ জেলার কোনো নেতা এমপি হতে না পারায় এবং সংরক্ষিত আসনেও কাউকে এমপি হবার সুযোগ না দেয়ায় জেলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
উলিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, দলের ভেতর একটি অংশের ষড়যন্ত্রের কারণে প্রবল সম্ভাবনা থাকা সত্বেও মতি শিউলী এমপি হতে পারলেন না। এ নিয়ে দলের ভেতর চাপা উত্তেজনা চলছে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবুল বলেন, আমরা যে উন্নয়ন করেছি, তার ধারাবাহিকতা আর রক্ষা করা সম্ভব হবেনা। কুড়িগ্রামবাসী আবারো উন্নয়ন বঞ্চনার শিকার হবেন।
সূত্রঃ নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম