যে প্রভুদের পরিকল্পনায় ও ইঙ্গিতে আওয়ামী সরকার পিলখানায় সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সেই প্রভুদের ইঙ্গিতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মানুষের চলমান আন্দোলন এখন জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে পরিনত হয়েছে। একদিন বাংলার মাটিতে খুনিদের বিচার হবেই। পিলখানায় সেনা হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে লন্ডনে যুক্তরাজ্য সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় ইস্ট লন্ডনে অবস্থিত লন্ডন স্কুল অব কমার্স এন্ড আইটি’র অডিটোরিয়ামে সেনা হত্যাকান্ড উপলক্ষে আয়োজিত ‘পিলখানা ম্যাসাকার: ইটস্ ইমপ্যাক্ট অন ন্যাশনাল ডিফেন্স, সেকুরিটি এন্ড সুভেরেইনটি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস পালনের দাবি করেন।
যুক্তরাজ্য সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ড. কেএমএ মালিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শেখনিউজ ডট কমের প্রধান সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ, পেশাজীবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তারিক বিন আজিজ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব) ফারুক আহমেদ, প্রবাসী সংগঠক এস কে আজাদ, লেখিকা ফেরদৌস আরা, এডভোকেট নাসির আহমেদ অপু, সলিসিটর একরামুল হক মজুমদার, ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি লিটন, মাওলানা শামীম প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী। আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার তমিজ উদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব) জহির উদ্দিন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুল মোর্শেদ, সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান, ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান টিপু, অ্যাডভোকেট আলী আকবর প্রমুখ।
শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দ্বারা জাতির প্রতিরক্ষা লাইনকে ধংস করে হাসিনা সরকার প্রভুদের ইঙ্গিতে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। জাতির ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই প্রতিহিংসা অব্যাহত রয়েছে। বিডিআর এ হত্যাকারীদের একটি দল বিমান বন্দর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় র্যাবের একটি দল বিমানবন্দর ঘেরাও করে রাখলে র্যাবের তৎকালীন ডিরেক্টর গোয়েন্দা নিজে হুমকি দিয়ে ঐ র্যাবের টিমকে প্রত্যাহার করে আনে। হুমকি প্রদানকারী ঐ অফিসার এখন ব্রিগেডিয়ার এবং সে শেখ পরিবারের আত্মীয়। সে সম্প্রতি লন্ডনের বাংলাদেশ মিশনে মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেছে। এই সকল চিহ্নিত খুনিদের কারনেই আজ জাতি বিপর্যস্ত। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা না গেলে জাতির অস্তিত্ব বিলীন হবে।
মেজর (অব) ফারুক আহমেদ বলেন, সামরিক ব্যাপার যখন রাজনৈতিকভাবে হ্যান্ডেল করা হলো তখনই এটা প্রমাণিত হয়েছে, পিলখানা হত্যাকান্ড একটি সুদূর প্রসারী রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। এছাড়া কিছু প্রশ্নের জবাব-ই প্রমাণ করে দেয়, পিলখানা হত্যাকান্ডে কে বা কারা জড়িত। সেদিন প্রধানমন্ত্রী ডিএডি তৌহিদের সঙ্গে কেন দীর্ঘ বৈঠক করলেন?
ড. কেএমএ মালিক বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা হত্যাকান্ডের নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পিলখানা হত্যাকান্ড ছিল পরিকল্পিত ঘটনা। এটা আওয়ামী লীগের নীলনকশার অংশ। এ ঘটনার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে দুর্বল এবং সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা আশা করবো, বিএনপি ক্ষমতায় এলে জড়িতদের চিহ্নিত করে যথাযথ বিচার করা হবে।
নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ বলেন, বাংলাদেশে রক্তের হলিখেলায় মেতে আছেন হাসিনা। স্বাধীনতার পর তার বাবা ৪০ হাজার রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা করেছে। হাসিনা বাবাকে ছাড়িয়ে গেছেন। এখন তার বিদায়ের পালা। জাতীয়তাবাদী আদর্শের ঠিকানা, গণতন্ত্রের জননী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করলে বাংলাদেশে যে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিস্ফোরিত হবে, তাতে হাসিনা জ্বলে-পুড়ে মরবে।
ব্যারিস্টার তারিক বিন আজিজ বলেন, হাসিনা আগুন নিয়ে খেলছেন। গুলি করে, গুম করে বিশ্ব ইতিহাসে কোনো শক্তি ক্ষমতায় টিকতে পারেনি, হাসিনাকেও বিদায় নিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করলে শুধু শেখ হাসিনা নয়, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হবে। অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।