মনোয়ার জাহান চৌধুরী, সিলেট
সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সিলেট ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। কিন্তু কমিটি অনুমোদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা স্থগিত করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন নিয়ে রীতিমতো চলছে নানা নাটকীয়তা! আর সৃষ্টি হয় কমিটি অনুমোদন নিয়ে ধূম্রজালের। কেন্দ্রীয় সংসদের এমন নাটকীয়তায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, হতাশা। তবে কি কারণে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানাতে পারছেন না সিলেটের পদধারীরাও। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট ছাত্রদলের এক শীর্ষ নেতা মানবকণ্ঠকে জানান, সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ নিয়ে এ নাটকীয়তার সৃষ্টি। ওই নেতা আরো জানান, প্রথমে কেন্দ্র থেকে কমিটি অনুমোদনের কথা স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করা হয়। যে কারণে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন নিয়ে ধূম্রজালেরও সৃষ্টি হয়েছে।
সিলেট ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদিত ওই কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা স্থান পাননি। আর যারা স্থান পেয়েছেন তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করছে না কেন্দ্রীয় সংসদ; এমন অভিযোগও তৃণমূলের।
দীর্ঘ একযুগ পর ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাঈদ আহমদকে সভাপতি ও রাহাত চৌধুরী মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮ সদস্যের সিলেট জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে নূরুল আলম সিদ্দিকী খালেদকে সভাপতি ও আবু সালেহ মো. লোকমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক কমিটি। ওই কমিটি ঘোষণার পরই সিলেটে বিদ্রোহ দেখা দেয়। পদবঞ্চিতরা কমিটিবিরোধী আন্দোলনে নামেন। একই সঙ্গে কমিটিতে স্থান পাওয়া চার নেতাও পদ প্রত্যাখ্যান করে বিদ্রোহীদের আন্দোলনে শামিল হন। বিষয়টি মীমাংসা করতে কেন্দ্রীয় সংসদের শীর্ষ নেতারাও ব্যর্থ হন। এমনকি বেশ কয়েকবার সিলেট বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও ছাত্রদলের বিরোধ মেটাতে উদ্যোগী হন। কিন্তু তাদের সে উদ্যোগও বিফলে যায়। আর রয়ে যায় সিলেট ছাত্রদলে দ্বন্দ্ব, কোন্দল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় সংসদ। বিষয়টি সিলেট ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে জানাজানি হলে দেখা দেয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বিদ্রোহ। আর ওই বিদ্রোহ ঠেকাতেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি বলে দাবি করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে সিলেট জেলা ছাত্রদল নেতা আবদুল কাইয়ুম অভিযোগ করে মানবকণ্ঠকে বলেন, জেলা এবং মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকায় কিছু বিতর্কিত ব্যক্তিকে স্থান দিয়েছেন। এমনকি ত্যাগী এবং পরীক্ষিতদের বাদ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করিয়েছেন। তবে যতটুকু জানি সিলেট ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হলেও শুধু বিদ্রোহ ঠেকাতে ওই কমিটি এখন ঘোষণা দেয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন কাইয়ুম।
এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান বলেন, সিলেট জেলা ছাত্রদল একটি কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছে। আমরা তা যাচাই-বাছাই করছি। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
Next Post