ইসলামে ‘বেপর্দা’ নারীও নিরাপদ

0

Liton-Nondiইসলামী ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফের কোন সূরার কোন আয়াতে কম কাপড় পরিহিত – ‘বেপর্দা’ (পর্দা না মানা) নারীদের বিবস্ত্র করার কথা বলা আছে? এমন কোনো নির্দেশ রয়েছে ঠিক কার বর্ণিত হাদিসে? কোনো নারী ইসলাম বা ইসলামী আদেশ না মানলেই কি মুসলমান পুরুষ তার বস্ত্রহরণের অধিকার পেয়ে যায়? নাকি এ মহান ধর্মে যে কোনো নারীই নিরাপদ?

পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা -এর ১৮৭ নম্বর আয়াতে নারী ও পুরুষের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, “তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ], তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ]।” অর্থাৎ পুরুষ ও নারীকে পরস্পরের পোশাক বলছে ইসলাম। সেই নারীর বস্ত্রহরণে যে পুরুষেরা মহান আল্লাহর নামে শ্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন, তারা কি আদৌ মুসলমান? নাকি ইসলামকে কলুষিত করার বিধর্মী কৌশলে পথভ্রষ্ট কোনো গোষ্ঠী? তারা কী জানে না যে সূরা নূর -এর ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, “(হে নবী) মোমিন পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং যৌন পবিত্রতা রক্ষা করে চলে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যাহা কিছুই করে, আল্লাহ তৎসম্পর্কে পরিজ্ঞাত।” – নাকি তারা নেহাতই জন্মসূত্রে মুসলমান? যারা কখনো কোরআন বোঝার তাগিদই অনুভব করেনি। যুগে যুগেই যে এরা থাকবে সে ইঙ্গিতও রয়েছে সূরা বাকারা -এর তিনটি আয়াতে। আয়াতগুলো জেনে রাখুন-

০৮। মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে ‘আমরা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করি’। কিন্তু তারা [প্রকৃতপক্ষে] বিশ্বাস করে না। ০৯। আল্লাহ্‌ ও বিশ্বাসীদের তারা প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু [এর দ্বারা] তার শুধুমাত্র নিজেদের প্রতারিত করে অথচ তারা [তা] বুঝতে পারে না। ১০। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি; এবং আল্লাহ্‌ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন; তারা [ভোগ করবে] নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী।”

পহেলা বৈশাখ, ১৪২২। বাংলার ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে নিশ্চয়ই। এ দেশেরই এক শ্রেণীর (অ)-মানুষ ইসলামের দোহাই দিয়ে সেদিনের সংঘবদ্ধ যৌনত্রাসের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নারীদের যেভাবে দোষারোপ করছেন, তাতে এক মুসলিম পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি অন্তত বিব্রত। কারণ পবিত্র কোরআন কখনোই এমন বাড়াবাড়িকে সমর্থন করে না। স্বদেশী মুসলমানদের এই গোমরাহের পথ থেকে ফেরানোর তাগিদ অনুভব করেই এ লেখাটি তৈরী করতে বসেছি। আল্লাহ আমাকে এটি সম্পন্ন করা তওফিক দেবেন, সে ঈমানও রয়েছে। কারণ নিশ্চয়ই এসব তারই নির্দেশে হচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিচলিত মন নিয়ে তাই কোরআন, হাদিসেই দিয়েছি ডুব। আর খুব খেয়াল করে দেখেছি, সর্বজ্ঞ আল্লাহ বহুবার সেইসব পথভ্রষ্টদের সতর্ক করে দিতে চেয়েছেন, যারা নারীর পোশাকের দোহাই দিয়ে যৌন সন্ত্রাস চালানোকে হালাল করতে চেয়েছে, চাচ্ছে এবং চাইবে। যেমন সূরা নিসা -এর উল্লেখিত আয়াতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন ‘পুরুষদের বলে দিন’। আবার আমাদের নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো অপরিচিত নারীর প্রতি যৌন লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন তার চোখে উত্তপ্ত গলিত লৌহ ঢেলে দেওয়া হবে (ফাতহুল কাদির)।” এখনো কারো কী মনে হচ্ছে না বৈশাখের বস্ত্রহরণকারীরা কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কাজ করেছে। আর তাদের সমর্থন করে ওই সুমহান গ্রন্থ এবং নবীকে কলঙ্কিত করেছন একদল বিভ্রান্ত অনুসারী। এ বিভ্রান্তির দায় কার, সে আলোচনায় পরে আসছি।

পহেলা বৈশাখের ওই ঘটনা পর যারা বলেছেন –

-‘আলহামদুলিল্লাহ – এটা আল্লাহর পক্ক (পক্ষ) হতে।’
– ‘এটা ইসলাম থেকে দূরে যাওয়ার ফল।’
– ‘ইসলামের বাইরে গেলে এমনি হবে।’
– ‘যে নারী , পরপুরুষকে দেখানোর জন্য সেজে বের হয়, তাদের জন্য এটাই পাওনা !’
– ‘ওখানে (বর্ষবরণে) না গেলে কী হয় না! এর জন্য মেয়েরাই দাই (দায়ী)।’
– ‘তোমাদেরকে আল্লাহ বেইজ্জতি না করে ছেড়ে দিবে ভেবেছ?’
– ‘আধা বিবস্ত্র নারী পুরা বিবস্ত্র হবে এটাই স্বাভাবিক।

তারাই একটু ভেবে দেখুন তো – আমার দয়াল মহানবীর একজন উম্মত হয়ে তার দরবারে দাঁড়িয়ে আপনারা এই কথাগুলো বলতে পারতেন কি? নাকি আগে নিজের বিরুদ্ধে, আপন কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জেহাদ করার কথা ভাবতেন।

হে মুমিন মুসলমান ভাইয়েরা, সেদির ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজে দেখলাম বোরখা পরিহিত এক নারী তার শরীরে হাত দেয়ার অপরাধে একজনকে চড় দিচ্ছে। অর্থাৎ পর্দাশীল নারীরাও সেদিন শ্লীলতাহানীর হাত থেকে রেহাই পাননি। এরপরও আপনারা (ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা) বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন কি? আপনাদের আরো স্মরণ করিয়ে দেই সূরা নিসা –এর ৭৫ নম্বর আয়াত। যেখানে আল্লাহ বলছেন, “তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই করছ না অসহায় নারী,পুরুষ ও শিশুদের রক্ষার জন্যে? যারা বলে হে আমাদের প্রতিপালক! জালেমের এই জনপদ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী পাঠাও ৷” পরের আয়াতেই তিনি বলেন, “যারা বিশ্বাসী তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা তাগুত বা অসত্যের পক্ষে যুদ্ধ করে ৷ সুতরাং তোমরা শয়তানের অনুসারী ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ৷ নিশ্চয় শয়তানের কৌশল দুর্বল৷”

human-bond-against-sex-assault

উপরের শেষ আয়াতটি একটু গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন। আল্লাহ সেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে – “ঈমানদাররা শুধু আল্লাহর ধর্ম রক্ষা এবং তা শক্তিশালী করার জন্য যুদ্ধ করে, ক্ষমতা বা পদের জন্য নয়৷ মুমিনের জন্য শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি যথেষ্ট ৷ কিন্তু কাফেররা খোদাদ্রোহী শক্তি ও জালেমদের শাসন শক্তিশালী করার জন্য যুদ্ধ করে। তাদের লক্ষ্য অন্যদের ওপর কর্তৃত্ব করা এবং নিজ দেশের সীমানা বৃদ্ধি করা।” একটু ভেবে দেখুন, আজ ইসলামকেও অমনই এক চেহারা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে কী’না। মুসলমানদের উগ্রপন্থী হিসাবে প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে কেউ কিছু করছেন কী’না – সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন। ইসলামকে ধ্বংসের উদ্দেশে কারা এর নামে বিশৃঙ্খলা তৈরী করছে, সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের গোয়েন্দা তৎপরতায় প্রসূত আলেম, ওলামাদের বয়ানে বিভ্রান্ত না হয়ে কোরআনের শিক্ষায় আলোকিত হোন, আত্মপোলদ্ধি জাগান। আর অবশ্যই মনে রাখবেন, সীমালঙ্ঘন বা বাড়াবাড়ির ব্যাপারে মহান আল্লাহ বার বার সতর্ক করেছেন। আর আমাদের প্রাণের নবী মোহম্মদ (সঃ) তার বিদায় হজের ভাষনে বলেছেন, “সাবধান! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কোরো না। এমন বাড়াবাড়ির কারণে অতীতে বহু জাতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।”

সূরা হুজরা’তে আল্লাহ বলছেন, “হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে এবং তোমাদেরকে পরিণত করেছি বিভিন্ন জাতিতে ও বিভিন্ন গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার।” – অর্থাৎ কোরআনের বক্তব্য অনুযায়ী – মানুষ যে বিভিন্ন জাত, মত বা গোত্রে বিভক্ত, এটা খোদারই ইচ্ছায়। এই বিভেদ এখন যেমন আছে, আগেও ছিলো। কিন্তু আপনি কি এমনটা কখনো শুনেছেন – আমাদের প্রিয় মহানবীর যমানায়, তার খেলাফতে বসবাসকারী/ভ্রমণরত কোনো বিধর্মী জনগোষ্ঠী/উপজাতির বেপর্দা নারী তৎকালের মুসলমানদের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছে? শোনার কথা নয়। কারণ মুসলিম মূল্যবোধ তখনও দূষিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। বরং মুসলমানদের চারিত্রিক গুনের মোহে বিমোহিত হয়েও ইসলামের ছায়া তলে এসেছিলো মানুষ। সূরা বাকারা -এর ৬২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট বলছেন – “যারা ঈমান আনে [এই কোরআনে], এবং যারা ইহুদীদের [ধর্মগ্রন্থ] অনুসরণ করে, এবং খৃশ্চিয়ান, এবং সাবীয়ান, যারাই ঈমান আনে আল্লাহ্‌র [একত্বে] শেষ [বিচার] দিবসে এবং সৎ কাজ করে, তাদের জন্য পুরষ্কার আছে তাদের প্রভুর নিকট। তাদের কোন ভয় নাই তারা দুঃখিতও হবে না।” অর্থাৎ ইসলাম শুধু মুসলমানদেরই সুখবর দেয়না, অন্যান্য কিতাব অনুসারীদেরও তাদের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেয়। স্মরণ করিয়ে দেয় ভালো কাজের ইনাম। তবে ধর্ম রক্ষা বা প্রচারের নামে হানাহানিকে ইসলাম সমর্থন করে না। একই সূরার ১৯০ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, “আল্লাহর ওয়াস্তে লড়াই কর তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।”

ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বিশ্বব্যাপী এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে যাতে মনে হয়, প্রচলিত ধর্মগুলোর মধ্যে কোরআনেই নারীকে সবচেয়ে বেশী অবমাননা করা হয়েছে এবং সবচেয়ে কম অধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকে এই অপপ্রচার বিশ্বাসও করছেন, কোরআন যাচাই করে বা না করেই। যারা এমন প্রচার চালিয়েছে বা চালাচ্ছে তাদের নিশ্চয়ই কোনো অসৎ কোনো উদ্দেশ্য আছে। সে আলাপে যাচ্ছি না, বা এ বিষয়ে কারো কোনো বিশ্বাসেও আমি আঘাত হানতে চাইছি না। শুধু আরো কিছু আয়াত উল্লেখ করে যাচ্ছি –

সূরা আন-নাহল এর ৯৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “যে ভাল কাজ করে এবং বিশ্বাসী, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, আমি তাকে অবশ্যই দান করব এক পবিত্র শান্তিময় জীবন এবং তারা যা করত তার জন্য তাদেরকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।” কোরআনের ৪০ নম্বর সূরা আল-গাফির -এর ৪০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে – “যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে সে কেবল তদনুরূপ প্রতিফল পাবে। আর যে ব্যক্তি ভাল কাজ করে সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক, সে যদি বিশ্বাসী হয় তবে এরূপ লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেথায় তাদেরকে দেয়া হবে বেহিসাব রিযিক।” আর সূরা লুকমান -এর ১৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষকে তার মাতা-পিতা সম্বন্ধে নির্দেশ দিয়েছি তাদের সাথে সদাচরণ করতে। তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দু’বছরে তার দুধ ছাড়ানো হয়। সুতরাং শোকরগুজারী কর আমার এবং তোমার মাতা-পিতার।”

সূরা নিসা -এর সাত নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,“পুরুষদের জন্য অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়; এবং নারীদের জন্যও অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়, হোক তা অল্প কিংবা বেশী। তা অকাট্য নির্ধারিত অংশ।”১৯ নম্বর আয়াতে রয়েছে – “হে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। আর তাদের আটকে রেখ না তাদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করতে, কিন্তু যদি তারা কোন প্রকাশ্য ব্যভিচার করে তবে তা ব্যতিক্রম। তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন করবে।” একই সূরার ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, “পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ।” এছাড়া আন-নূর -এর চার নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “যারা কোন ভাল নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই প্রকৃত দুষ্ট ও মিথ্যাবাদী।”
সূরা আল-আহযাব -এর ৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাজ “নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজাদার পুরুষ ও রোজাদার নারী, স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী পুরুষ ও স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী নারী এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী–এদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান।”

অতএব হে বাংলার মুমিনগণ, সচেতন হন। সতর্ক করে দিন আপনার সকল মুসলমান ভাইকে। যাতে তারা ইসলামের নামে অনৈসলামিক কিছু করে আমাদের প্রিয় নবীকে লজ্জিত করার সুযোগ না পায়। মনে রাখবেন, কোরআনে পুরুষ ও নারী শব্দটি সম্ভবত সমসংখ্যক বার উল্লেখ করা হয়েছে। আর আমাদের মহানবী (সঃ) এ’ও বলেছেন, “এ কথা সত্য যে, নারীদের উপর পুরুষের যেমন কিছু অধিকার আছে তেমনি পুরুষের উপরও নারীদের কিছু অধিকার আছে।” আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে শেষ করছি। পবিত্র কোরআনে নিকাব-সহ প্রচলিত বোরখার কোনো ইঙ্গিত আমি পাইনি। হিজাবের ক্ষেত্রে খোদ মুসলিম স্কলারদের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। বেশীরভাগ স্কলার কোরআনের আলোকে হিজাবকে সমর্থন করেন। তবে আরেকটি পক্ষ মনে করে কোরআনে নারীদের পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে কিছু স্বাধীনতা ও নমনীয়তা রাখা হয়েছে যেটা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে কিছুটা পরিবর্তনশীল হতে পারে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More