মোঃ খলিলুর রহমান, প্রজন্মের ভাবনা: আশে-পাশে প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় বাংলাদেশী নাটক দিন দিন বাজার হারাচ্ছে! বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে ভারতীয় চ্যানেল গুলোর অবাধ প্রবেশের ফলেই নাকি এমনটি ঘটছে ।সুযোগের সদ্ব্যবহার নাকি সবাই করে! সেরকমটা করছে ভারতও । বাংলাদেশে প্রচারাধিকার পেয়ে বাংলাদেশে স্থায়ী বাজার সৃষ্টি করে নিয়েছে ভারতীয় নাটক গুলো। শব্দের মান, চাকচিক্য ছবি, পারিবারিক কাহিনী নিয়ে নির্মিত হওয়ায় সহজেই এদেশের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে তাদের নাটক এবং সিরিয়াল গুলো। পরিবারিক কহিনী নির্ভর নাটক নির্মিত হলেও, মূলত শিক্ষামূলক কোন উপাদানই থাকে না তাতে। যুবক-যুবতীর অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক সরাসরি দেখনো হয় ভারতীয় নাটকে, যা পরিবারের সকলের সাথে দেখা না গেলেও নিজের বিবেক বোধকে তুচ্ছ করে দেখছে এদেশের মানুষ। যার কারণে বিপথে যাচ্ছে এদেশের তরুণ-তরুণীরা। তাছাড়া প্রত্যেকটা নাটকেই পরকীয়া কে সরাসরি কিংবা পরোক্ষ ভাবে উপজীব্য করে কাহিনি দেখানো হয় । বউ-শ্বাশুড়ির মধ্যে ফাটল ধরানো সহ সংসারে যত প্রকার অশান্তি আছে তার সবগুলোরই হাজার-লক্ষ উপায় প্রদর্শন করা হয় সেই নাটকগুলোতে । এছাড়াও বিভিন্ন সময় নাটকগুলোর নামানুযায়ী পোশাক/অলংকার বের করে ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানগুলো । সেগুলো না পেয়ে আত্মহত্যার মত ঘটনাও ঘটেছে ।
অপরদিকে একসময় বাংলাদেশী নাটকের জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া থাকলেও এখন মান, কাহিনী এবং অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে খাঁদের কিনারায় পড়ে হাঁপাচ্ছে বাংলাদেশী নাটক। ভারতীয় নাটকের যে জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে তৈরী হয়েছে তা সহজে কমবে না। এজন্য দরকার বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল গুলোকে নিয়ন্ত্রন করা অথবা ভারতে বাংলাদেশী চ্যানেল গুলোর প্রবেশ নিশ্চিত করা এবং বিজ্ঞাপনের সময় কমিয়ে মান সম্পন্ন নাটক তৈরী করা। তা না হলে ভারতীয় নাটকের কাছে বাংলাদেশী নাটকের অসহায়ত্ব দিন দিন প্রকট হবে। সেই সাথে নৈতিক/সামাজিক অবক্ষয়ে শেষ হয়ে যাবে মানুষের ‘সংস্কৃতি’ । তাই সময় থাকতে ‘বিষফোড়া’ ভারতীয় চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করাই ভাল ।