ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের সাত সদস্যের গ্রুপ
প্রতারণা করে মালামাল হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাইদুর রহমান হাওলাদার এবং মো. মোর্শেদ (৫০) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নগরে তারা ‘কাইজ্যা পার্টি’ নামেই পরিচিত।
পুলিশ জানায়, এই পার্টির সদস্যরা রিকশা নিয়ে ঘুরেন। এরপর যাত্রীর সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া করেন পার্টির কয়েকজন। ওই সুযোগে আরেকজন রিকশায় থাকা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান। সাইদুর এই গ্রুপের প্রধান। তাদের কাছ থেকে লুট করা চার লক্ষাধিক টাকার মেডিকেল মেশিন এবং দুই লক্ষাধিক টাকার কসমেটিকসসামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১০ থেকে ভিকটিম মহিউদ্দিন দুইটি মেডিকেল মেশিন নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় রিকশা নিয়ে হাজির হন সাইদুর। শেওড়াপাড়া আসার জন্য রিকশায় উঠে কিছু দূর যাওয়ার পর রিকশা নষ্ট হয়েছে উল্লেখ করে কিছুদূর হাঁটতে বলেন মহিউদ্দিনকে। কিছুদূর যেতেই সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা ২/৩ জন ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া লাগিয়ে দেন তার সঙ্গে। এই সুযোগে মালামালসহ রিকশা নিয়ে পালিয়ে যান সাইদুর। পরে থানায় অভিযোগ করলে বৃহস্পতিবার রাতে জড়িত দুজনকে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা এলাকা গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক কেরানীগঞ্জের শহীদনগর এলাকা মেডিকেল যন্ত্রাংশ এবং কসমেটিকস সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
ওসি মহসীন জানান, আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া গেছে। তাদের গ্রুপে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সাত-আটজন সদস্য আছেন। তারা কয়েকভাগে ভাগ হয়ে এই কাজ করেন। তাদের মধ্যে এক দল থাকেন হাঁটাওয়ালা। তারা সেই যাত্রীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া লাগান। একজন মাদলিওয়ালা। তিনি রিকশা চালান, রিকশা নিয়ে পালিয়ে যান। সাইদুর এই দলের মাদলিওয়ালা। আরেক দল পল্টিওয়ালা। যখন ওই যাত্রী ওই রিকশা খুঁজতে থাকেন তখন এই দল উল্টো রাস্তা দেখিয়ে দেন। মালামাল হাতিয়ে দেওয়ার পর সেই টাকার ৭০ শতাংশ সবাই সমানভাগে নেন। অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পান মাদলিওয়ালা এবং ১০ শতাংশ পান হাঁটাওয়ালা। তারা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এই প্রতারণা করেন।
প্রায় দুই বছর ধরে তারা এই কাজ করছেন। তাদের কাছ থেকে চার লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের মেডিকেল মেশিন এবং দুই লক্ষাধিক টাকার কসমেটিকস সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকাটাইমস