রঙ্গুনিয়া : ‘আমার ছেলেকে কোন বিএনপি-জামাতের লোক মারেনি, মেরেছে আমারই দলের লোক। যে দল থেকে আমি একটা জীনিস পেয়েছিলাম আর তা হলো মুজিব কোর্ট। আজ দল থেকে আর একটা জীনিস পেলাম আর তা হলো আমার সন্তানের লাশ। জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীনকরেছিলাম, স্বাধীন দেশে আমার সন্তানের লাশ কাঁধে নেবো বলে!!’ এই কথা গুলো প্রবীন রাজনীতিবীদ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল ইসলাম বেবী চৌধুরীর। এই কথাগুলো বলতে বলতে তিনি বার বার সন্তান খুনের বিচার চাইলেন সবার কাছে।
রবিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বাদে আছর সম্পন্ন হলো যুবলীগ নেতা জসীম উদ্দীন বাসেকের নামজের জানাযা। হাজীপাড়া সরকারী প্রাথামিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্টিত এই জানাযায় অংশ নেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত জনসাধারণসহ প্রায় হাজার তিনেক মানুষ। জানাযায় আগতরা দাবি করেন, এই হত্যাকান্ড ষড়যন্ত্রমূলক ও পূর্বপরিকল্পিত। অত্যন্ত সুকৌশলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ি শান্তির হাট ওয়াসায় কন্ট্রাকটারি কাজ দেবে বলে ফোন করে ডেকে নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসের সাহায্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
তাই এই ফোন যে করেছে তাকে গ্রেফতার করলে তার মাধ্যমে সব বেরিয়ে আসবে বলে তারা মনে করেন। উপজেলা আওয়ামী-যুবলীগ সভাপতি সামসুদ্দোহা সিকদার আরজু বলেন, ‘হাজীপাড়ায় ৮৪-৮৫ সনে এই একটি মাত্র পরিবার ছিলো যেটি আওয়ামীলীগের পক্ষে রাজপথে সোচ্চার ছিলো। চাইলে নুরুল ইসলাম বেবী ভাই অনেক টাকা কামাতে পারতো কিন্তু তিনি অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি।
জানাযায় আগত মুসল্লিদের পক্ষে তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে দাবী করেন, অভিলম্বে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে ফোন করে তাকে বুড়ির দোকান নিয়ে গিয়েছিল তাকে গ্রেফতার করে তার মাধ্যমে খুনিদের গ্রেফতার করা হোক। অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান আলী শাহ্ও তার বক্তব্যে খুনিদের শাস্তি দাবি করেন। আর প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য পারিবারিক ও স্থানিয় সুত্রে জানা যায় পোমরা ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী জসিম উদ্দিন বাসেকের সাথে বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও ব্যবসায়িক ভাগভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইউনিয়নের বুড়ির দোকান এলাকায় শনিবার(১৪ ফেব্রুয়ারী) সন্ধায় তাকে ওয়াসার কাজের কন্ট্রাকটারি দেবে বলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর একটি ফার্নিসারের দোকানে বসে কথা বলছিল বাসেক। হঠাৎ কিছু চিহ্নিত দুর্বত্ত লাঠিসোঠা ও দারালো দা-ছুড়ি নিয়ে তার উপর চড়াও হয় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাতœকভাবে যখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানিয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া অবস্থায় গাড়িতে মারা যায়।