অভাবের তাড়নায় নিজের শরীরের কিডনী বিক্রি করতে চায় পীরগঞ্জের হামিদা বেগম। তার স্বামীর জমি ভাসুর-দেবররা কৌশলে কেড়ে নিয়ে তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ায় অন্যের বাড়িতে দিনাতিপাত করছে সে।
গৃহবধূ হামিদা জানায়, পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের দুধিয়াবাড়ীর মৃত-শমসের আলীর কন্যা হামিদা বেগম। প্রায় ১০ বছর আগে বগুড়া সদর থানার পেছনের সাফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সেখানে তার এক ছেলের (হযরত আলী- ৮ বছর) জন্ম হয়। ৪ বছর আগে ওই স্বামী মারা গেলে পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের ঘাসিপুরের সিরাজ উদ্দিনের শ্রবন প্রতিবন্ধী ছেলে গোফফার মিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় তার বিয়ে হয়। সেখানেও তার এক ছেলের (হানিফ মিয়া-দেড় বছর) জন্ম হয়।[ads1]
গোফফার মিয়া নিজে রোজগার করে প্রায় ৬ বিঘা জমি ক্রয় করেন। গাছ-গাছালীসহ বসত ভিটে সবই ছিল। কিন্তু গোফফার শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও বর্তমানে অক্ষম হওয়ায় তার বড় ভাই রাজা মিয়া, ছোট ভাই-মোকছদে আলী ও ওয়াদুদ মিয়া জমিগুলো ক্রয়ের নামে কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ফলে হামিদা তার দুই ছেলে, স্বামী গোফফার এবং হামিদার মা জয়নব বিবিকে নিয়ে একই গ্রামের একটি বাড়িতে পরিত্যক্ত ঘরে বসবাস করছে। সেখানেও আর বেশি দিন আশ্রয় জুটবে না বলে জানায় সে। পরিবারের ৫ সদস্যের খাবার যোগাতে স্বামী-সন্তানসহ হামিদা প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার উপজেলা সদরের বিভিন্ন বাসা ও দোকানে ভিক্ষে করেন। এ সময় কয়েকটি স্থানে হামিদা তার শরীরের কিডনী বিক্রি করার কথা বলেন। হামিদা জমির দলিলপত্র দেখিয়ে বলেন, ‘মোর স্বামীর সউগ (সব) জমি কাড়ি (কেড়ে) নিয়া বাড়িত থাকি বারি করি দিছে। একন সবার খাবার যোগাও কি করি। মোক একনা বাঁচাও ভাই। কতই আর অভাব সহ্য করবো। ছোট ছোলগুলা খাবার জন্যে খালি কান্দে। অরা কতই আর ভোগ (ক্ষুধা) সহ্য করে। সেই জন্যে একটা কিডনী বেঁচিম বলেই কেঁদে ফেলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘শ্বশুর বাঁচি আছে। কিন্তু ব্যাটাদের (ভাসুর-দেবর) জন্যে কিছুই করবার পারে না।’[ads2]