ঝালকাঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে অমান্য করে অবাধে চলছে কোচিং বাণিজ্য। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন কিছুই জানেন না। আর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন এ বাণিজ্য করছে মাধ্যমিক শিক্ষকরা। অথচ ঝালকাঠির প্রতিটি সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শ্রেণীর শিক্ষকরা অবৈধভাবে এ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষকরা নিম্নমানের বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই পড়তে ও কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের। বিনিময়ে এসব অসাধু শিক্ষকরা পাচ্ছে মূল্যবান উপঢৌকন ও মোটা অংকের অর্থ। এ কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মনে করে তারা। বছর শুরু হতে না হতেই শিক্ষার্থীদেও অকৃষ্ট করতে ঝালকাঠি শহরের সর্বত্র দেখা যাচ্ছে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন। এসব কোচিং সেন্টার থেকে লাখ লাখ টাকা আয় হলেও সরকার কোন রাজস্ব পাচ্ছে না।
সরকারি আইন অমান্য করে এসব চললেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দেখার কেউ নেই। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা অনুযায়ী এসব সম্পূর্ন নিষিদ্ধ হলেও শিক্ষা কর্মকর্তাদের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অভিভাবক মহলে। তারা এ বাণিজ্য রোধে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছেন। এমনকি প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান কামনা করছেন।
দেশের সরকারি বেসরবারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য নীতিমালায় উল্লেখ করা হয় ‘এক শ্রেনীর শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোচিং পরিচালনা করে আসছে। এটি বর্তমানে এমন এক পর্যায়ে পৌছেছে যেখানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোচিং বাণিজ্যর সাথে যুক্ত শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছে। যা পরিবারের উপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে। এ ব্যয় নির্বাহে অভিভাবকগণ হিমসিম খাচ্ছেন। এছাড়া অনেক শিক্ষক শ্রেণী কক্ষে পাঠদানে মনোযোগী না হয়ে কোচিংএ বেশী সময় ব্যয় করছে। এ ক্ষেত্রে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকগণ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ সম্পর্কিত হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা রিট পিটিশন নং ৭৩৬৬/২০১১ এর আদেশের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর কোচিং বাণিজ্য বন্ধে একটি গেজেট নোটিফিকেশন বা অন্য কোন রূপ আদেশ প্রদানের নির্দেশনা আছে। সার্বিক পরিস্থিতি ও হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকার কর্তৃক এ নীতিমাল প্রনয়ন করা হয়েছে’ বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।
Prev Post
Next Post