ঢাকা : ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে না যেতে প্রশাসন এবং ক্ষমতাশীন দলের লোকেরা মৃত্যু ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। দুই কান কেটে নির্বাচন কমিশন শাসকদলের পক্ষে উঠে পড়ে লেগেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘খুলনার বিভাগে যেসব পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে সে সমস্ত এলাকায় ডিআইজি সরাসরি থানার ওসিকে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থীর সমর্থক কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হুমকি দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তারা যেন নির্বাচনের দিন পোলিং এজেন্ট না হয় এবং ভোট দিতে না যায়। মূলত বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে এলাকা ছাড়া করার জন্যই ডিআইজি এই নির্দেশ দিয়েছেন। ডিআইজির এই নির্দেশ খুলনা বিভাগের অনেক এসপিও জানে না বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় আগামীকালের পৌর নির্বাচন নিয়ে সরকারের নগ্নরূপ উম্মোচিত হলো।’
তিনি আরো বলেন, ‘বরিশাল মুলাদীর স্থানীয় এমপি আবুল হাসনাত আবদুল্লার নির্দেশে বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপনের নেতৃত্বে আওয়ামী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মুলাদী উপজেলা বিএনপির সভাপতির বাড়িতে হামলা করে এবং ধানের শীষের এজেন্ট ও সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসছে যে, আগামীকাল ভোটকেন্দ্রে গেলে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানালে তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।’
বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর সরকার সমর্থকদের হামলার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘বহিরাগত সন্ত্রাসীদেরকে ভোটকেন্দ্র দখলের জন্য নির্বাচনী এলাকায় রাখা হয়েছে। মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী দলীয় প্রার্থী কামালউদ্দিন খান প্রায় ৩/৪ হাজার লোক পৌর এলাকায় এনেছে। যাদের দিয়ে পৌর নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করা হবে বলে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় যেসব প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা প্রায় সবাই ওই এলাকার আওয়ামী লীগ চিহ্নিত কর্মকর্তা। তিনি বেশ কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেন।’
নির্বাচনের আগে বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে নির্বাচন প্রত্যাহারপত্রে আবেদন করাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। উদাহারণ হিসেবে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী সাইদুর রহমান লিটন ও তার ভাই বাবলু ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুব পঞ্চাত ও ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুব ও তার ভাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশ তাদেরকে বলে- অঙ্গিকারনামায় স্বাক্ষর কর যে, আমি নির্বাচন প্রত্যাহার করেছি।’
এদিকে কিশোরগঞ্জের এক বিএনপি নেতাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান রিজভী আহমেদ।