বরগুনা: নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও পেশাগত অসদাচরণের দায়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির অভিযোগ এনে রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে বরগুনার নাগরিক সমাজ।
এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয় বরগুনার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ।
প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত মোঃ হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রী হালিমা আক্তারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে হালিমা আক্তারকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন এসপি হাবিব। এমন পরিস্থিতিতে নির্যাতিত হালিমা আক্তার কোনো উপায় না পেযে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর বরগুনার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
তার মামলার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। নিন্ম আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার পরে উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। তার আবেদনের পেক্ষিতে চার সপ্তাহের সময় দিয়ে নিম্ন আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
সকাল নয়টায় মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- এসপি হাবিবের নির্যাতিত স্ত্রী হালিমা বেগম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরগুনার সম্পাদক খাদিজা বেগম, নারী-নেত্রী হোসনে আরা হাসি, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি আলহাজ্ব আ. রব ফকীর, বরগুনার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান, বরগুনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও লোকবেতার বরগুনার স্টেশন ম্যানেজার মনির হোসেন কামাল প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসনের দাখিলকৃত অনিয়ম, দুর্নীতি এবং পেশাগত অসদাচরণের ২২টি গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার পদ থেকে গত বছর এপ্রিল মাসে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ সদর দফতরে নিযুক্ত করা হয়। ২০১৪ সালের শেষের দিকে পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান ভোলা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী ওই জন-প্রতিনিধি।
এছাড়া পুলিশ সুপারের প্রভাব খাটিয়ে নিজ বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার একাধিক স্থানীয় অধিবাসীকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে এসপি হাবিবের বিরুদ্ধে।