১ লাখ মানুষের সাড়ে ৪ কিলো দুর্ভোগ

0
খানাখন্দ আর ভাঙ্গাচোরা কাঁচা রাস্তা দিয়েই সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে
খানাখন্দ আর ভাঙ্গাচোরা কাঁচা রাস্তা দিয়েই সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে

মানিকগঞ্জ (বালিরটেক) ঘুরে এসে: ২৬ বছরেও পাকা হয়নি দক্ষিণ মানিকঞ্জের পুটাইল, ভাড়ারিয়া, হাটিপাড়া ও বলড়া ইউনিয়নের একমাত্র সড়কটি। কাঁচা খানাখন্দে ভরা সাড়ে চার কিলোমিটারের এ মেঠোপথ দিয়ে চলতে পারে না কোনো মটরগাড়ি এমনকি রিক্সা-ভ্যানও। এ রাস্তার দুর্ভোগ এড়াতে উল্লেখিত এলাকার প্রায় এক লাখ মানুষকে ২৭ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মানিকগঞ্জ সদরে যেতে হয়। অথচ এ দুর্ভোগ দেখেও দেখছে না সংশ্লিষ্টরা।

স্বাধীনতার পরপরই পুটাইল ইউনিয়নের পুটাইল বাজার থেকে ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বালিরটেক বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের অধীনে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। সদরের সঙ্গে দক্ষিণ মানিকগঞ্জবাসীর যোগাযোগের একমাত্র পথই এটি।

সম্প্রতি পুটাইল, বালিরটেক, শানবন্ধা এলাকা ঘুরে এবং এলাকাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল না করলেও রিক্সা, ভ্যান থেকে শুরু করে সব যানবাহনই এই সড়ক দিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে যাতায়াত করতো। এখন সেটাও হচ্ছে না। গত ২৬ বছরেও সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় উল্লেখিত ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থমকে আছে।

এছাড়া কৃষকরাও উৎপাদিত ফসল জেলা সদরে বা আশপাশের ইউনিয়ন এবং হাট-বাজারে সরবরাহ করতে না পারায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

২৬ বছরের সংস্কারবিহীন পুটাইল-বালিটেক সড়ক
২৬ বছরের সংস্কারবিহীন পুটাইল-বালিটেক সড়ক

১৯৮৮ সালের বন্যায় রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যায় এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এই ভাঙা এবং খানাখন্দে ভরা সড়কে লোকজন পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারলেও রিক্সা-ভ্যান বা অন্যকোনো যান কোনোভাবেই চলাচল করতে পারে না। এমনকি জরুরী ভিত্তিতে কোনো রোগীকে জেলা সদরে কিংবা অন্যান্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়ার মতও কোনো উপায় নেই।
এ ব্যাপারে পুটাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দক্ষিণ মানিকগঞ্জবাসীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই সড়ক। ২৬ বছর ধরে সড়কটি যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে আছে। সড়কটি পাকা করলে এখানকার মানুষের দুর্ভোগ মোচন হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘পুটাইল-বালিরটেক সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় বিশেষ করে ভাড়ারিয়া এবং পুটাইল ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও পাকা করা প্রয়োজন।’

শানবান্দা গ্রামের ইউপি মেম্বার ওয়াজুদ্দিন বলেন ‘২৫-২৬ বছরেও এই সড়কটি কেন সংস্কার বা পাকাকরণ হয়নি তা আমার বুঝে আসছে না। সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় আমাদের এলাকাবাসীকেও ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। অথচ এই সড়কটি পাকা করা হলে জেলা সদরের সঙ্গে দুরুত্ব কমে মাত্র ৭ কিলোমিটার হবে।’

সমাজসেবক আউয়াল বকস্ বলেন, ‘সড়কটি ভাল না হওয়ায় পুটাইল ও ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা ফসল দ্রুত সময়ে সদরে নিতে পারেন না। পরিবহন খরচ বেশী দিয়ে ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে জেলা সদরে নিতে হয়। ফলে লাভের বেশীর ভাগ টাকাই পরিবহন খরচে লেগে যায়। সড়কটি সংস্কার হলে পরিবহন খরচ কমবে, কৃষকও তার ন্যায্য দাম পাবে।’

স্থানীয় ডাক্তার নজরুল ইসলাম, এনজিও কর্মী লাবলু মিয়া ও উত্তম জমাদার বলেন, ‘সড়কটির কারণে পুটাইল ও ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের জরুরি কোনো রোগীকে জেলা সদরের চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে নেয়া যায় না। ভ্যান বা রিক্সা কোনোটাই চলতে পারছে না এই সড়কে।’

মানিকগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর বারেক হাওলাদার বলেন, ‘চলতি অর্থ বছরে রাস্তাটি সংস্কার বা উন্নয়নের পরিকল্পনা নেই। আগামী অর্থ বছরে (জুলাই মাসের পর) গুরুত্ব দিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হবে।’

বাংলামেইল২৪ডটকম
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More