এনাম চৌধুরী: শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ৫ জানুয়ারী ২০১৪-এ বিনাভোটে নির্বাচিত অর্ধেকেরও বেশী সংসদ সদস্য এর গরু-ছাগলের সরব-উপস্থিতিসহ পাঁচ পার্সেন্ট ভোটে নির্বাচিত সরকারে মহা ক্ষমতাময়ী এক নারী ! সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা অবশ্যই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হতে হবে নিয়ম থাকলেও ২০১৪ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যে সেটা জোটেনি। কিন্তু তারপরও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী (?) প্রশাসনকে নিজের স্বাধ্য মতো ব্যবহার করে যিনি বাংলাদেশের মানুষকে প্রতিদিন ‘ক্রস ফায়ার’ আর বন্দুক যুদ্ধের নামে ‘লাশ’ উপহার দিচ্ছেন। জলজ্যান্ত মানুষ হাওয়া হয়ে যাচ্ছে আর তিনি বলছেন দেশে গণতান্ত্রিক সরকার কায়েম রয়েছে।
সরকার বিরোধী কিংবা সরকারের সমালোচনাকারী একটি রাজনৈতিক দলও সভা-সমাবেশ দূরে থাক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ‘মানববন্ধন’ করার অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। ব্যানার নিয়ে রাস্তায় নামামাত্র পুলিশের রাবার বুলেট, টিয়ারসেল, গুলি নিক্ষেপ একটি অতি তুচ্ছ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সহজ ভাষায় শেখ হাসিনা তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার অভিপ্রায় যেভাবে প্রতিটি মিটিং-সমাবেশে বলে বেড়ান প্রকৃত অর্থে সেটাই বাস্তবায়ন করেছেন এখন স্বাধীন বাংলাদেশে।
‘এক নেতার এক দেশ’ গণতন্ত্রকে নিজের ‘ছকে’ সাজিয়ে সমাবেশ, সেমিনারে বলে বেড়িয়ে অদ্ভুদ এক গণতন্ত্রের সৃষ্টি করেছেন শেখ মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। স্বাভাবিক মৃত্যুর কোন গ্যারান্টি যে রাষ্ট্রে সেটিই এখন বাংলাদেশ। প্রকাশ্য রাজপথে পশুর মত মানুষ হত্যা করা হয় কিন্তু অপরাধী ধরা পড়েনা ! অথচ কোঁথায় ময়লার গাড়ী পুড়লো, কুরআন-হাদীস কিংবা ইসলামী বই পুস্তুক সহ নিরীহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রদের ধরে নিয়ে এসে তাদের ‘জিহাদী মৌলবাদী বানানোর উৎসব এখন প্রতিনিয়তই দেখা যায় ! গণতন্ত্রের নামে সরকার, সমর্থক ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ তাদের সহযোগীদের সন্ত্রাসের তান্ডবের মাঝেও শেখ হাসিনা তার নিজস্ব তন্ত্রের ‘গণতন্ত্র’ দিয়ে বাংলাদেশকে শান্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ?
অতছ মানুষ হত্যার প্রকাশ্য নির্দেশ দান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একমাত্র নারী এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসে যিনি দিয়ে ছিলেন তিনি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। গোটা দুনিয়া যার মুখ দিয়ে শুনেছে “একটি লাশের বদলে দশটি লাশ’ ফেলার নির্দেশ ! ২৮ অক্টোবর ২০০৬-এ সারাদেশের আওয়ামীলীগ সমর্থক নেতা-কর্মীদের লঘি-বৈঠা দা-কুড়াল নিয়ে রাজপথে নেমে তৎকালীন নির্বাচিত সরকারকে প্রতিরোধ করার নির্দেশ দেওয়ার পর ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন এলাকায় রক্তের কি হোলিখেলা ঘটেছিলো সেটা গোপন কিছু নয় !
গণতন্ত্রের বড় বড় বুলি আওড়িয়ে মানুষ হত্যার গণতান্ত্রিক অদ্ভুদ সংস্কৃতির সৃষ্টিকারী শেখ হাসিনা এখন কার্যত বাংলাদেশকে তার নিজের সম্পত্তির স্টাইলে ব্যবহার করছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি এমন কোন নোংরা শব্দের বাদ রাখছেন না যা তিনি (শেখ হাসিনা) অপব্যবহার না করছেন।
শত শত মায়ের বুক খালি হচ্ছে, গুম হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য শিশুর পিতা, ক্রসফায়ারের নামে বিধবা নিঃশ্বেষ করে দেয়া হচ্ছে নব বধুর স্বপ্নকে ! এরপরও শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বাণী প্রচার করছেন ! হিংস্রতারও শুধু একটা শেষ আছে, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে সে পশুবৃত্তির যেন কোন শেষ নেই !
পিতার কাঁধে যুবক সন্তানের লাশ, পুত্রের কাঁধে পিতার লাশ এখন প্রতিদিনই বাংলাদেশে বহণ করতে হচ্ছে। তবুও নাকি ‘গণতন্ত্র’ আছে বাংলাদেশে।
সাংবাদিকতায় ইংলিশে “হিউম্যান ইন্টারেস্ট স্টোরি” একটি কথা চালু আছে। যেটাকে বাংলায় বলা হয় ‘মানবিক আবেদন সম্পন্ন সংবাদ’। ভয়ানক দূর্ঘটনা কিংবা মৃত্যু সংক্রান্ত সংবাদের সাথে এই ধরনের সংবাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
প্রায়ই দূর্ঘটনা, মৃত্যু সংবাদ কিংবা অন্যান্য মানবিক বিভিন্ন সংবাদের সাথে কিছু ছোট ছোট সংবাদ শিরোনাম দেখি এভাবে : “ঈদের নীলজামা পড়া হলো না ছোট্ট আনোয়ার” ‘বাবার কেনা পুতুল নিয়ে গুমিয়ে আছে চিরনিন্দ্রায় আদরের শিমুল”। এমন মানবিক আবেদন সম্পন্ন সংবাদ পড়ে পাঠকের মনে যেমন গভীরভাবে নাড়া দেয়, তেমনি মনে হয় এ কষ্ঠ বুঝি স্বজন হারানো মানুষগুলোর সাথে আপন আত্মা একাকার হয়ে গেলো।
স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশের সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ২৫ জানুয়ারী শনিবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মালোয়েশিয়ায় ইন্তেকাল করেছেন। পয়তাল্লিশ বছর বয়সেী আরাফাত রহমান বাংলাদেশের মানুষের কাছে তেমন একটা পরিচিতি ছিলেন বললে চলে। কারণ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি ছিলেন রাজনীতির বাইরে এক নিভৃতচারী সাদাসিদে মানুষ।
খেলা-ধূলার প্রতি ঝোঁক থাকলেও বরাবরই তিনি ছিলেন প্রচার বিমুখ। শৈশবে পিতাকে হারিয়েছেন। কৈশোর ও যৌবনের সোনালী দিন গুলোতে মা বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকায় তারা দুই ভাই ছিলেন বলতে গেলে অনেকটাই একাকী। আর জীবন সাজানোর সম্ভাবনাময় দিনগুলোর শেষ দিনটা পর্যন্ত আরাফাতকে হাসপতালে মৃত্যুযন্ত্রণায় কাটাতে হয়েছে।
ওয়ান-ইলেভেনে ফখর-মঈনুদ্দীনের অবৈধ সেনা সরকারের নির্যাতনে তারা দুই ভাই তারেক রহমান ও আরাফাত জীবন থেকেও বলতে গেলে পঙ্গু প্রায়। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুণরোদ্ধারের এক মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমানের দেশ প্রেমের চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন কোন নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র বাকী রাখেনি তারা যা ঐ পরিবারটির প্রতিহত করা হয়নি। আর তথ্য সন্ত্রাস ও অমানবিকতার সবচেয়ে ঘৃণিত শিকার হয়েছেন শহীদ জিয়ার দুই উত্তর সূরী তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান।
মঈন-ফখরের যৌথ বাহিনী কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তারা দুই ভাইকে শারীরিক নির্যাতন করলেও দুই উদ্দিনের অবৈধ কার্যকলাপের স্বীকৃতি প্রদানের শর্তে ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনা ঘৃণিত অপপ্রচারের মাধ্যমে জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের শেষ খেলায় যেন মেতে উঠেছেন। গত প্রায় ৬ বছর থেকে শেখ হাসিনা অমানবিক নির্যাতনের এমন কোন খারাপ শব্দ বলা যায় বাদ রাখেননি, যেগুলো ব্যবহার না করেছেন !
শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার আদরের সন্তান আরাফাত রহমান এখন না ফেরার দেশে। গঞ্জনা-লাঞ্চনা, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অপমান আর না পাওয়ার গভীর ক্ষত নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। মায়ের মমতার স্পর্শ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন জীবনের করুন দিনগুলোতে। বেগম জিয়াও পারেননি দশ-মাস দশদিন যে সন্তানকে পরম মমতায় পেটে ধরেছিলেন সেই নাড়ী ছেড়া ধনকে একটু ভালবাসার স্পর্শ দিতে। প্রিয় কোকোকে দেখতে পারেননি তিনি, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস পেড়িয়ে বছরের পর বছর। অকালে স্বামী হারা সহজ সরল এক গৃহবধু থেকে রাজনীতিতে আসা আপোষহীন দেশ নেত্রীর সম্মানে ভূষিত বেগম জিয়ার জীবনের এতো বড় দুঃসহ যন্ত্রনার দিনেও তাকে অপমান করার সুযোগটুকু যেন হাত ছাড়া করেনি দুষ্ঠ চক্র। পুত্র শোকে যখন হাহাকার করছেন তখন তাকে শুনতে হয়েছে ‘শিষ্টাচার’ শিক্ষার অভাবের সবক। আর সেই সবকটি প্রদান করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান হত্যায় অন্যতম ‘বেনিফিসিয়ারী’ ইকবাল সুবহান। যার পদবী এখন প্রধানমন্ত্রীর ‘তথ্য উপদেষ্ঠা।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যাকান্ডের পর যখন দেশের সাংবাদিক সমাজ এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ঐ ইকবাল সুবহানকেও দেখা গিয়েছিলো সম্মুখভাগে। আন্দোলন যখন তুঙ্গে এবং নির্মম ঐ হত্যার ঘটনায় যখন সরকারের ভীত-নড়েচড়ে তখন হঠাৎ করেই ইকবাল সুবহানের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হয়। এর পরের ঘটনায় সকলেরই জানা। ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিকদের মাঝে ফাঁটল ধরিয়ে হঠাৎ দেখা গেলো মন্ত্রীর মর্যাদায় বেচারা তথ্য উপদেষ্ঠা ! এরপর সাগর-রুনী হত্যার বিচার দাবী যেন অন্যায় আব্দারে পরিণত হয়ে গেলো।
সাগর-রুনীকে হত্যার পর শেখ হাসিনা যেভাবে বলেছিলেন, ‘কারো বেড রুম পাহারা দেয়ার দায়িত্ব আমাদের নয় ?’ ঠিক সেভাবেই ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সমাজের দাবীকে ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করতে তার পিতার খুনে অন্যতম বেনিফেসিয়ারী ইকবাল সুবহানকে দিয়ে দিলেন তথ্য উপদেষ্ঠার পদ। এখানে আরো ‘সেলুকাস’ আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেক দুষ্ঠুক্ষত হাসানুল হক ইনু। যার যন্ত্রনায় শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান বলতে গেলে শান্তিতে দেশ পরিচালনা করতে পারেনি নি। একদিকে ছিলো তার দলের চাটার দল, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও চোর গোষ্ঠি আর অপর দিকে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে খুনী গণবাহিনী। শেখ মুজিবুর রহমান যখন ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ খুন হলেন তখন ঐ হাসানুল হক ইনু সেনাবাহিনীর টাংকের সামনে দাঁড়িয়ে উল্লাস করেছিলো। মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দিয়ে বলেছিলো ‘ফেরাউনের মৃত্যু হয়েছে।’ সেই ইনু শেখ হাসিনার মন্ত্রী সভার তথ্যমন্ত্রী !!
ইতিহাসের দুষ্ঠুচক্রের হোতারা এখন জাতিকে তথ্য জানাতে গিয়ে পুত্র শোকে কাতর বেগম জিয়াকে শিষ্টাচার জ্ঞান দিচ্ছে। জানি না এরা কখন মানবিকতার শিক্ষা গ্রহণ করবে ? কখন এদের মুনষ্যত্বের বিকাশ সাধিত হবে ? কখন এদের জিহ্বা সামলে কথা বলবে।
আরাফাত রহমান কোকো না ফেরার দেশে চলে গেছেন। কাঁদিয়ে গেছেন তার স্নেহময়ী দুই সন্তান, প্রেমময়ী স্ত্রী, সবচেয়ে প্রিয়জন মা বেগম খালেদা জিয়াকে। শোকার্ত মা, ভাই, স্ত্রী, সন্তান চিরবিদায় জানিয়েছেন তাদের চির আপনজনকে। বনানী করবস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। একজন সাবেক সেনাপ্রধানের সন্তান হিসেবে তার কবর হওয়ার কথা ছিলো সামরিক কবরস্থানে। একজন্য ইন্তেকালের পর সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছিলো। কিন্তু রাজনীতির দুষ্ঠু নীতি ও হিংসাত্মক মনোভাবপোষণকারী একটি বিশেষ স্থানের নির্দেশ না থাকায় কোকোর মৃতদেহ সেনা কবরস্থানে চিরনিদ্্রায় রাখার সুযোগ পাননি তার পরিবার।
বিস্ময়ের বিষয়, যে সেনাবাহিনী কখনো তাদের নিয়মের একবিন্দু ভঙ্গ করে না, সেই বাহিনীও নিয়মকে রীতিমত বুড়ো আঙ্গুল দেখালো। কোকোর মরদেহের সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটা কি অমানবিকতা নয় ? প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সেনা কবর স্থানটির মুল দায়িত্ব প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান শেখ হাসিনার। অতএব কবর হুকুমে সেনাবাহিনীর আন্তঃসংযোগ বিভাগ এর সংশ্লিষ্ট শাখা কোকোর মরদেহ সেনা কবরস্থানে দাফনের অনুমতি প্রদান করেনি সেটা বুঝার জন্য কি এ বিষয়ে কোন ডিগ্রী নিতে হবে ?
কোকোর জানাযা প্রমাণ করেছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কত জনপ্রিয় ছিলেন। প্রমাণ করেছে শেখ হাসিনা কিংবা তার অনুসারীদের হাজারো প্রপাগান্ডা কোন কাজে লাগেনি জিয়াউর রহমানের দুই পুত্রের বিরুদ্ধে। বরং প্রমাণ করেছে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি এখনো বাংলাদেশের শতভাগ মানুষের আস্থা রয়েছে। তারা বিশ্বাস করেনি আওয়ামীলীগের কোন ধরনের প্রপাগান্ডাই কাজে লাগেনি সহজ অর্তে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অপচর্চায় তারা যে সিদ্ধ হস্ত সেটা প্রমাণ করেছে শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে তার দলের নেতা-পাতিনেতাদের আচরণে।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অপমান-অপদস্থ করতে এমন কোন হীন কৌশল বাকী নেই যেটার আশ্রয় গ্রহণের তারা বাকী রেখেছে। তারা মাঠে-ময়দানে, সংসদে দাঁড়িয়ে বেগম জিয়াকে অশালিন ভাষায় মুধু কথাবার্তাই বলেনি, বেগম জিয়ার সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর চেহারা শহীদ জিয়ার মতো কেন হলো না এমন নোংরা কথাবর্তা বলে অশ্লিল ইঙ্গিত করতেও ছাড়েনি। কতটুকু প্রতিহিংসা পরায়ন এবং ঘৃণ্য মন-মানষিকতার হলেও এমন আচরণ করতে পারে সেটা পাঠকই বিবেচনা করবেন।
বলছিলাম পুত্রশোকে শোকাতুর ইকবাল সুবহানরা বেগম খালেদা জিয়াকে শিষ্টাচার জ্ঞান দিচ্ছেন, অথচ প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে সংসদে দাঁড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়া পুত্রের ইন্তেকালের পর কোন কালারের শাড়ী পড়ছেন সেটা নিয়েও মন্তব্য করতেও শেখ হাসিনার রুচীতে বাঁধেনি।
কোকোর ইন্তেকালের পর বেগম জিয়াকে শান্তনা দিতে যাওয়া শেখ হাসিনার যে একটি পরিকল্পিত ড্রামা সেটা এখন পরিস্কার বিষয়। নয়তো শহীদ জিয়ার যে সন্তানের চেহারা তার বাবা-মায়ের মত নয় বলে অশ্লীল-ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য করতে যার নূন্যতম শালীনতা বোধ বা রুচীতে ধরেনি সেই মহিলা কি উদ্দেশ্য নিয়ে গুলশানে গিয়েছিলেন সেটা কি বলার অপেক্ষা রাখে ? যাকে সন্ত্রাসী জননী, ডাকাত সরদার, চোর-ডাকাত পুত্রের মা, খুনী, মোল্লা ওমর, অঙ্কে ফেল, সিরিয়ালের নায়িকা, কোকোর সাথে জিয়াউর রহমানের চেহারার মিল নেই, ক্যান্টনমেন্টে কোকোর জন্ম, খুনী বলতে মুখে আটকায়নি। সহযোদ্ধা রাজনৈতিক নেত্রী সম্পর্কে এমন মন্তব্য করতে দ্বিধা হয়নি, সেই বেগম জিয়াকে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
বক্তব্যের শব্দ চয়ন, শারীরিক ভঙ্গি, কথা বলার ধরণ ও চোখের ভাষাই যার রুচিহীন এমন মানুষের সাথে স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী সাক্ষাৎ করেন এটা স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো হয়েছে ? কোন ধরনের শিষ্টাচারহীনতা নয় !