‘আমি এখন স্বাধীন, আমার জন্মদাতা আমাকে মুক্ত করে দিয়েছে। সব সন্তান বড় হলে তাকে বাবা-মা মুক্ত করে দেয়। এখন আমি সবার সাথে কাজ করতে পারব। এটা আমি কেন, যে কোনো শিল্পীর জন্যই অনেক সম্মান ও গর্বের। বাংলাদেশের শিল্পী সংকটের এতটুকু যদি পূরণ করতে পারি তাহলে আমার চলচ্চিত্রে আগমনকে সার্থক মনে করব। বাবা-মা আমাকে জন্ম দিয়েছে, যখন তারা মনে করেছে আমি আমারটা বোঝার মতো সচেতন তখন তারা আমাকে জাজের হাতে তুলে দিয়েছে। জাজ আমাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য সঠিকভাবে তৈরি করেছে। অভিভাবক হিসেবে তারাও মনে করছে আমি এখন অভিনয় করার উপযুক্ত, তাই আমাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আমার আশা থাকবে নতুন যাদের নিয়ে এসেছে তাদেরকেও সবার সঙ্গে কাজ করতে দেবে।’
গতকাল রোববার ১৭ মে, বিকেল ৪টায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিইও আলিমুল্লাহ মাহি অভিযোগ করেন, ‘গত কয়েকদিন আগে মাহির যে নোংরা ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, এমনকি দুদিন ধরে তাঁকে নিয়ে যেসব গোপন অভিসারের কথা পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে তাতে আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। তাই জাজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাহিকে নিয়ে আর কোনো সিনেমা নির্মাণ করা হবে না, কারণ এতে জাজের সুনাম নষ্ট হবে।’
এ বিষয়ে মাহি বলেন, ‘আমার কোনো নোংরা ভিডিও বের হয়নি। সবাই জানে এটা মিথ্যা। আর চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে আমাদের প্রায়ই দেশের বাইরে যেতে হয়। এসব নিয়ে কেউ নোংরা কথা বললে প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা বানিয়ে বলা যাবে। গত প্রায় এক বছর আমি কাজের প্রযোজনে অনেক দেশেই গিয়েছি। কেউ চাইলে সেগুলো নিয়েও এ ধরনের অভিযোগ আনতে পারে। এসব মিথ্যা অভিযোগ আমার দর্শকরা কখনোই বিশ্বাস করবে না। আমাকে বিপদে ফেলার চেষ্ট করা হচ্ছে এমন বিষয়টি আমি আগে থেকেই টের পেয়েছিলাম, যে কারণে এর আগে আমি একবার চলচ্চিত্রে আর কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কখনো বুঝতে পারিনি এত নোংরাভাবে আমাকে কেউ উপস্থাপন করতে পারে। স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারার আনন্দটা মাটি হয়ে যায়, যখনই বাজেভাবে কেউ অভিযোগ করে।’
জাজ প্রযোজিত মাহির অভিনীত শেষ দুটি ছবি ‘অগ্নি ২’ এবং ‘অনেক দামে কেনা’। এই দুটি ছবির ভবিষ্যৎ জানতে চাইলে আলিমুল্লাহ গতকাল এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘এই দুটি ছবিতেই মাহির কাজ শেষ। যে কারণে এই ছবিগুলোতে কোনো সমস্যা হবে না। আর ছবি সময়মতো সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। দর্শক তাঁকে গ্রহণ না করলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। এটা মেনে নিয়েই আমরা ছবি দুটি মুক্তি দেব।’
এ বিষয়ে মাহি বলেন, ‘জাজের কল্যাণে দর্শক আজ আমাকে মাহি নামে চেনে। জাজ-ই আমাকে নায়িকা বানিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি দর্শকরা আমাকে নিরাশ করবেন না। তাদের ভালোবাসায় সাধারণ মাহি থেকে আজকের এই মাহি আমি। আশা করি, তাঁদের উৎসাহ নিয়েই বাকি পথ পাড়ি দেব।’
মাহি যদি বাইরের প্রযোজনা সংস্থার ছবিতে কাজ করে, সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জাজের সিইও আলিমুল্লাহ বলেন, ‘জাজের কোনো ছবিতে মাহি থাকছেন না। এমনকি মাহি জাজ থেকে কোনো সহযোগিতাও পাবেন না। জাজের প্রযোজনায় তাঁর শেষ দুই ছবির পরিচালক আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবেন, তবে শুধু মাহির ডাবিং বাইরে করতে হবে। কারণ মাহি আর জাজে ঢুকতে পারবেন না। প্রয়োজনে ওই পরিচালকের কাছ থেকে আমরা টাকা কম নেব।’
এ বিষয়ে মাহি বলেন, ‘অভিভাবক যখন সন্তানের ওপর রাগ করেন, তখন অনেক আবেগ কাজ করে। আমাকে জাজে ঢুকতে দেওয়া হবে না এটা আবেগের সিদ্ধান্ত। তাদের রাগ কমলেই বিষয়টি মিটে যাবে। তা ছাড়া জাজের বাইরে অনেকেই কাজ করছে। কিন্তু আমার বেলায় সেটা অনেক কষ্টের। অনেকটা বাবা-মা হাসপাতালে কিন্তু আমি দেখতে যেতে পারছি না ব্যাপারটা অনেকটা এমন। কারণ আমি জাজকে নিজের বাবা-মায়ের মতোই মনে করি’।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘ভালোবাসার রং’ ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন মাহি । এ ছাড়া ‘অন্যরকম ভালোবাসা’, ‘পোড়ামন’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘অগ্নি’, ‘কি দারুণ দেখতে’, ‘দবির সাহেবের সংসার’, ‘ময়নামতি’, ‘দেশা : দ্য লিডার’, ‘ওয়ার্নিং’, ‘রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’ ইত্যাদি জাজ প্রযোজিত এবং মাহির অভিনীত ছবি।