অভিনেত্রী দিতির শারীরিক অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত। টিউমার ও ক্যানসারের পর এখন তিনি পারকিনসন রোগে ভুগছেন। এ রোগটির অবস্থাও বেশ নাজুক পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন ভারতের মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমাটোলজির (এমআইওটি) চিকিৎসকরা। দিতি এখন হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পারকিনসন রোগের দ্বিতীয় অবস্থায় আছেন এ চিত্রনায়িকা। যা থেকে পরিপূর্ণ সুস্থতা কখনওই সম্ভব নয়। অপরদিকে হাসপাতালটিতে তাদের খরচও বাড়ছে ক্রমশ। তাই দিতির দুই সন্তান মাকে দেশে এনে চিকিৎসা করার কথাও ভাবছেন।
তবে এ মুহূর্তে দিতির শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ, তাই কিছুটা সুস্থ হলে তাকে দেশে আনার পরিকল্পনা তার পরিবারের সদস্যদের।
দিতির সঙ্গে এখন হাসপাতালে আছেন তার মেয়ে লামিয়া ও ছেলে সাফায়েত চৌধুরী। এদিকে দিতির বিষয়টির বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক মুসফিকুর রহমান গুলজার। ঢাকা থেকে মুঠোফোনে নিয়মিত খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি এবার দিতিকে হাতপাতালে ভর্তির সময়ও তিনি সেখানে ছিলেন।
তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূলত ক্যানসার ও টিউমারের চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পারকিনসন রোগটি হয়েছে। এ রোগে রোগী সুস্থ হয় না। আর দিতি অনেকদিন ধরেই হাসপাতালটির আইসিইউতে আছেন। অর্থনৈতিকভাবেও এ পরিবার বেশ চাপের মুখে আছে। যদি আইসিইউতে রেখে তার সুস্থতা সম্ভব হতো, তাহলে কষ্ট করে হলেও এটা চালিয়া যাওয়া যেত। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান এখন তার তেমন কোনও উন্নতি আনতে পারবে না। তাই আমি তার ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কথা বলে বললাম, দেশে এনেই নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে।’
দিতির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এ পরিচালক আরও বলেন, ’দিতির স্মৃতিশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শরীরও এই মুহূর্তে ভ্রমণ করার মতো অবস্থায় নেই। সে একটু সুস্থ হলে দেশে ফিরবে। আশা করছি আগামী সপ্তাহে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
এদিকে পারকিনসন রোগের সুস্থতা সম্পর্কে জানতে একজন বিশেষজ্ঞ ফার্মাসিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, রোগটির প্রথম ধাপেই রোগী স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরতে ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় পর্যায় থেকে সেটা আরও দুরুহ হয়ে যায়। রোগী এক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি ও চিন্তা ক্ষমতা হারায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শারীরিক কর্মদক্ষতাও হ্রাস পায়।উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ জুলাই ভারতের এমআইওটি হাসপাতালে দিতির মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। এর আগে ঢাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েন দিতি। তখন তার মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরে আসেন। এ সময় তিনি বাসায় থাকতেন। এরপর হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ৩০ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার উন্নতি না হওয়া তাকে আবারও চেন্নাইয়ের হাসপাতালটিতে নেওয়া হয়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দিতির মস্তিষ্কে দ্বিতীয়বারের মতো অস্ত্রোপচার করা হয়। এর পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে