ঢাকা : সম্প্রতি বাংলাদেশি মডেল সাবিরা হোসাইনের আত্মহত্যার বিষয়ে মতামত তুলে ধরে সোশ্যাল সাইট ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সেখানে তিনি জনপ্রিয় তারকা সুচিত্রা, শাবানা, ববিতা, রাজ্জাক, অমিতাভসহ ‘অনেক তারকার’ বিরুদ্ধে ধর্মান্ধতা, পুরুষতান্ত্রিকতা এবং কুসংস্কারে ডুবে থাকার অভিযোগ এনেছেন।
[ads1]বৃহস্পতিবার (২৬ মে) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এ দাবি করেন।
তিনি লিখেন, ‘চলচ্চিত্রে অভিনয় করলে, নাটক-থিয়েটার করলে বা মডেলিং করলেই মন-মানসিকতা আধুনিক হয় না। সুচিত্রা, শাবানা, ববিতা, রাজ্জাক, অমিতাভ এবং আরও অনেক তারকাই ধর্মান্ধতা, পুরুষতান্ত্রিকতা আর কুসংস্কারে ডুবে ছিলেন এবং আছেন। পুরুষের সঙ্গে সংসার না করলে জীবন অর্থহীন হয়ে যায় বা সন্তান জন্ম না দিলে নারীর জীবনের কোনো মূল্যই থাকে না—এগুলোকে বিশ্বাস করে শিক্ষিত নয়, অশিক্ষিত মানুষ। শোবিজে অশিক্ষিতর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।’
সাবিরার আত্মহত্যার সঙ্গে বলিউড অভিনেত্রী জিয়া খানের আত্মহত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি লিখেন, ‘বলিউডের নায়িকা জিয়া খান আত্মহত্যা করেছিল যে কারণে, সে কারণে বাংলাদেশের মডেল সাবিরা হোসাইনও আত্মহত্যা করেছে। একই কারণে অনেক মেয়েই আত্মহত্যা করে। প্রেমিক অপমান করেছে, বা প্রতারণা করেছে, সুতরাং বেঁচে থাকার, তারা মনে করে না, কোনও প্রয়োজন আছে। সমস্যার সমাধান সাধারণত তারা এভাবেই করে। এমনই তুচ্ছ, তারা বিশ্বাস করে, তাদের নিজের জীবন।’[ads2]
বাধ্য হয়ে যারা পতিতাবৃত্তি করছেন তারা সবচেয়ে বেশি প্রেমিকের কাছে প্রতারণার শিকার হন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘প্রেমিকপুরুষগুলো তাদের ছলে বলে কৌশলে বিক্রি করে দিয়েছে পতিতালয়ে। চরম দুঃসহবাসেও তারা আত্মহত্যা করে না। বরং যুদ্ধ করে নিজেকে নয়তো নিজের সন্তানকে নরক থেকে বাঁচাবার জন্য। আমি বলতে চাইছি না আত্মহত্যার অধিকার মানুষের নেই। জন্মের পর বেঁচে থাকার যেমন অধিকার আছে, মরে যাওয়ারও অধিকার আছে। তবে অকারণে মরে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। যত যাই ঘটুক জীবনে, জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই।’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি এমন দেখেছি অনেক, প্রেমে পড়লেই মেয়েরা বড় দুর্বল, বড় ক্ষুদ্র, বড় মূল্যহীন, বড় অকিঞ্চিৎকর, বড় অপ্রতিভ, বড় অবলা, বড় অসহায় হয়ে ওঠে। আত্মসম্মানবোধ লোপ পায়। হয় প্রেমের সংজ্ঞা পাল্টাক, নয়তো মেয়েরা পাল্টাক। ক’দিন পর পরই মেয়েদের আত্মহত্যার খবর শুনতে আর ভাল্লাগছে না।’[ads1]