বলিউডে একসময় রূপালি পর্দায় দাপিয়ে বেরিয়েছেন এই অভিনেত্রীরা। এখন বয়স হয়েছে, অভিনয়ের সঙ্গে সম্পর্কও অনেকটা ভেঙেছে। নিজেদের গ্ল্যামার ও রূপ ধরে রাখতে একসময়ে নিজেদের বেশ ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতেন এই অভিনেত্রীরা। কিন্তু এখন বয়সের ভারে, চেহারাতেও এসেছে আমুল পরিবর্তন।
আসুন দেখে নেওয়া যাক বলিউডের অতীতের গ্ল্যামারাস ১৫ অভিনেত্রীদের ছবি, বর্তমানে বয়সের সঙ্গে যাদের চেহারায় এসেছে আমুল পরিবর্তন।
সাধনা: ষাট-সত্তরের দশকের অভিনেত্রী সাধনা। চুলের সামনে ব্যাংগ কাটের ফ্যাশন প্রথম তিনিই এনেছিলেন। রাজ কাপুরের শ্রী ৪২০সিনেমা দিয়ে অভিনয়ের জগতে পা রাখা। তার অভিনীত হাম দোনো, লাভ ইন শিমলা সিনেমা বিখ্যাত হয়েছিল।
বৈজন্তী মালা: জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী তথা পঞ্চাশ-ষাটের দশকের অভিনেত্রী বৈজন্তী মালা। দক্ষিণী ছবি দিয়েই অভিনয়ে পা রাখা। দিলীপ কুমার, রাজ কাপুরের সঙ্গে একাধিক হিট ছবি দিয়েছিলেন বৈজন্তী মালা।
ওয়াহিদা রহমান: বর্তমানে নিজের বার্ধক্যকেও অত্যন্ত গ্ল্যামারাস উপায়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন এই অভিনেত্রী। কাগজ কে ফুল, গাইডসিনেমায় তার অভিনয় আজও সবার মনে গেঁথে রয়েছে। যদিও এখনও টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও বলিউডের ছবিতে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করে অভিনয়ের শখটা জিইয়ে রেখেছেন।
তনুজা: ১৯৬৬ সালে অভিনয় শুরু করেছিলেন অপরূপ সুন্দরী এই অভিনেত্রী। এরপর হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি বহু বাংলা সিনেমায় দাপিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। আপাতত বার্ধক্যজনিত অসুখে চলতে ফিরতে কষ্ট হয়।
সায়রা বানু: মাত্র ১৬ বছর বয়সে বলিউডে পা রাখেন সায়রা বানু। জংলি, পড়োশন, দিওয়ানার মতো হিট সিনেমা দিয়েছেন। দিলীপ কুমারকে বিয়ে করার পর অভিনয় থেকে অবসর নেন সায়রা বানু।
রাখী গুলজার: বর্তমানে ৬৯ বছরের এই অভিনেত্রী বহুদিন পর্যন্ত অভিনয় করে গিয়েছেন। ত্রিশূল, বর্ষাত কি এক রাত, শর্মিলির মতো হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে সবার মন কেড়েছিলেন। পাশাপাশি বাংলায় পরমা, শুভ মহরত-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। করণ অর্জুন, রাম লক্ষ্মণ সিনেমায় মায়ের চরিত্রে তার অভিনয় আজও সকলের মনে গেথে আছে।
আশা পারেখ: অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা, নির্দেশনা সব দায়িত্ব সমানভাবে পালন করেছেন আশা পারেখ। ১৯৫২ সালে আসমানসিনেমায় শিশু অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করা শুরু। দিল দেকে দেখো, তিসরি মঞ্জিল, লাভ ইন টোকিও,দো বদন, কোরা কাগজ-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন আশা পারেখ।
ববিতা কাপুর: বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর ও কারিনা কাপুরের মা ববিতা কাপুরও এক সময়ের নামী অভিনেত্রী ছিলেন। কাল আজ অওর কাল, হাসিনা মান জায়েগি, ফর্জ– প্রমুখ সিনেমায় অভিনয় করেছেন ববিতা। রণধীর কাপুরকে বিয়ে করার পর চলচ্চিত্র দুনিয়াকে বিদায় জানান ববিতা।
জয়া বচ্চন: জনপ্রিয় অভিনেত্রীর পাশাপাশি নামী রাজনীতিবিদও বটে জয়া বচ্চন। ১৯৫৫ সালে সিআইডি সিনেমায় অভিনয় দিয়ে বলিউডে পা রাখা। এখনও মাঝে মধ্যেই সুযোগ পেলেই অভিনয় করেন।
নীতু সিং: ঋষি কাপুরের স্ত্রী, রণবীর কাপুরের মা নীতু সিংয়ের পরিচয় শুধু এখানেই আটকে নয়। ষাটের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন নীতু সিং। তার চোখের সৌন্দর্যে মাতোয়ারা ছিলেন অনেকেই। ঋষি কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন নীতু। এখনও মাঝে মাঝে সময় পেলে ঋষি কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন।
জিনাত আমান: নিজের সাহসী স্টাইল স্টেটমেন্টের জন্য চিরকাল জনপ্রিয় ছিলেন প্রাক্তন এই মিস ইন্ডিয়া। তার অভিনীত হরে রাম হরে কৃষ্ণা, হীরা-পান্না, কুরবানি, সত্যম শিবম সুন্দরম, ডন, লাওয়ারিশ সিনেমা জনপ্রিয়।
কিমি কাতকার: আশি-নব্বইয়ের দশকের সাহসী অভিনেত্রী ছিলেন কিমি কাতকার। তাকে রীতিমতো সেক্স সিম্বল হিসেবেই দেখা হত।টারজান সিনেমায় খোলামেলা পোশাক ও সাহসী অভিনয়ের জেরে দর্শকদের চোখ কপালে উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎই বলিউড থেকে হারিয়ে গেলেন কিমি কাতকার। আপাতত স্বামী ছেলেকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্নে বসবাস করছেন।
টিনা মুনিম: টিনা মুনিম নামেই বলিউডে খ্যাত ছিলেন এই সুন্দরী স্টাইলিশ অভিনেত্রী। পরে অনিল আম্বানীকে বিয়ে করে টিনা আম্বানি নামে পরিচিত হন। সত্তর আশির দশকে রূপোলি পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি।
মীনাক্ষি সেশাদ্রী: আশির দশরকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী দুর্দান্ত নৃত্যশিল্পীও বটে। ১৯৮১ সালে জাপানের টোকিওতে মিস ইন্টারন্যাশনাল হিসেবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। বিয়ের পর অভিনয় থেকে অবসর নেন মীনাক্ষী। তারপর প্রায় অন্তরালে। টেক্সাসে পরিবারের সঙ্গে থাকেন তিনি। অভিনয় ছাড়লেও নাচ এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন মীনাক্ষী।
অনু আগরওয়াল: আশিকি খ্যাত অভিনেত্রী অনু আগরওয়াল। প্রথম সিনেমাই বক্স অফিসে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়। এর পরে কিং আঙ্কেল সিনেমায় অভিনয় করেন অনু। ১৯৯৯ সালে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন অনু। ২৯ দিন কোমায় থাকার পর ফের ধীরে ধীরে সুস্থ জীবনে ফিরে আসেন।