বুঝতেই পারলাম না কখন কি করে এমন কঠিন অসুখ বাঁধিয়েছি ! ডাক্তার মুখের উপর বলে দিলেন, লিম্ফোমা নামের কঠিন অসুখ এখন আমি আমার শরীরে বহন করছি। প্রচুর টাকা লাগবে এতো টাকা পাবো কই? আল্লাহ্ এত বড় পরীক্ষা কেন নিচ্ছেন ! প্লিজ সব্বাই উদার মনে আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার সকল বন্ধু বান্ধব ও আপন জনের কাছে অনেক দোয়া চাই।
ফেসবুকে এমনটাই বললেন ক্যান্সার আক্রান্ত সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমান স্বীকৃতি।
শ্রোতাদের মন জয় করতে সঙ্গীতযুদ্ধের একজন প্রতিশ্রুতিশীল সৈনিক তিনি। শ্রোতারাও তাকে দিয়েছে জনপ্রিয় শিল্পীর খেতাব। কিন্তু কে জানতো একটু একটু করে তার শরীরে বাসা বেঁধেছে ঘাতকব্যাধি ‘ননহজকিন লিম্ফোমা’।
স্বীকৃতি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে কিছুদিন আগে গেলে এই রোগটি ধরা পড়ে। সেখানে তাকে জরুরী ভিত্তিতে ভর্তি হতে বলা হলে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ভর্তি হতে পারেননি। চিকিৎসা ছাড়াই সেখান থেকে গত ২৮ আগস্ট ঢাকায় ফিরেছেন এই গায়িকা। এখন অপেক্ষায় আছেন উন্নত চিকিৎসার, যার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থের।
প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী স্বীকৃতি সবার কাছে সহযোগিতা ও দোয়া চেয়েছেন। ২৭ আগস্টে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ক্যান্সার আক্রান্ত এই গায়িকা জানিয়েছেন আরো বেশি গান গাওয়া আর বেঁচে থাকার আকুলতা।
স্ট্যাটাসে স্বীকৃতি লিখেছেন ‘প্রিয় আপনজন ও বন্ধু জন। অনেক বেশী বেশী গান গাইতে চাই। সুস্থ হয়ে উঠতে চাই। সবার সাথে বন্ধুত্ব আড্ডায় মেতে উঠতে চাই। ছোট্ট বাচ্চাটাকে বড় হতে দেখতে চাই। আমার ৭ বছরের বাচ্চাটা তো কিছুই বোঝেনা, সে জানে তার মাকে ব্লাড দিলেই সুস্থ হয়ে উঠবে। আমিও বাঁচতে চাই আমার সন্তানের জন্য।
প্লিজ আল্লাহ্ আমাকে সাহায্য করো। আমার আপনজনদের হেল্প আমি কামনা করছি। আমি ঢাকা ফিরবো, কারণ অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ও আপনজনদের পরামর্শ নেবো। এত এত টাকা আমার একার পক্ষে সংগ্রহ করা তো সম্ভব নয়। আমার গুরুজন ও বন্ধু জন মিলে যে ডিসিশন নেবেন সেভাবেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। ডাক্তার বলেছে খুব জলদি মানে খুব দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে।
আল্লাহ্ মহান, আল্লাহ্ অবশ্যই ভাল পথ দেখাবেন ইনশাল্লাহ। আপনাদের দোয়া ও ভালবাসা সব সময় আমার সাথে ছিলো আছে থাকবে তা আমি বিশ্বাস করি’।
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয় স্বীকৃতির।
স্বীকৃতি বাংলাদেশ বেতারে প্রথমেই ‘ক’ শ্রেণীর শিল্পী হিসেবে শ্রেণীভুক্ত হন। এখন পর্যন্ত সাতটি একক অ্যালবাম ও পঞ্চাশটির বেশি মিশ্র অ্যালবাম বাজারে এসেছে তার । চলচ্চিত্রে গেয়েছেন প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ গান । সর্বশেষ ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ছবিতে স্বীকৃতির গাওয়া ‘পান জর্দা চমন’ শিরোনামের গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
এই কঠিন ব্যাধির চিকিৎসা স্বীকৃতি ও তার পরিবারের একার প্রতি বহন করা সম্ভব নয়। তাই তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীতশিল্পীরা।