নাচ দিয়ে শোবিজ ক্যারিয়ার শুরু। এর পর কয়েকটি নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয়। এবার বড় পর্দায় অভিষেক। অভিনেতা ও নির্মাতা নাদের চৌধুরী পরিচালিত সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘লালচর’-এর প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকের সামনে হাজির হয়েছেন মোহনা মিম।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ‘যমুনা ব্লকবাস্টারস’-এ হয়ে গেল ‘লালচর’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো। ওই অনুষ্ঠানের আগে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন মোহনা মিম। কথোপকথনে নবাগত এই অভিনেত্রী জানালেন তাঁর স্বপ্নের কথা।
মোহনা মিম বলেন, চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো ‘সেরা নাচিয়ে’র মধ্য দিয়ে তাঁর স্বপ্নের ডানা মেলা শুরু। এর পর নিয়মিত হন টিভি নাটক ও টেলিফিল্মে। নাদের চৌধুরীর ‘আনসার আলী টকার’, মেহের আফরোজ শাওনের ‘এই বৈশাখে’র মতো টেলিফিল্ম ও নাটকে অভিনয় করেন। তিনি জানান, ‘আনসার আলী টকার’-এ অভিনয় তাঁর ক্যারিয়ারে বড় অর্জন। এতে অভিনয়ের কারণেই নাদের চৌধুরীর চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় সুযোগ পেয়েছেন।
‘‘আমি তখনো সিনেমা নিয়ে মোটেই কিছু ভাবিনি। সিনেমা করব, এমন কোনো পরিকল্পনাও ছিল না আমার। ‘আনসার আলী টকার’ নাটকের শুটিংয়ে হঠাৎ নাদের স্যার এসে আমাকে বললেন তাঁর সিনেমার কথা। ইমদাদুল হক মিলনের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘নদী উপাখ্যান’ অবলম্বনে নির্মিত হবে তাঁর ‘লালচর’ সিনেমা। আমি সবকিছু ভেবে তাঁকে হ্যাঁ বলে দিলাম। সবকিছুই না কেমন স্বপ্নের মতো লাগছে এখন”, বলেন মিম।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতনাট্যমের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মোহনা মিমের জন্য সিনেমার শিডিউল মেলানো বেশ কঠিন ছিল। ভারত থেকে এসে সিনেমায় অভিনয় করা তো সহজ ছিল না।
কথা প্রসঙ্গেই মিম জানালেন, ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে মেলা সময়ের সবটুকুই তাঁকে দিতে হয়েছে ‘লালচর’ সিনেমার জন্য। সিনেমাটিতে তিনি অভিনয় করছেন ‘সখিনা’ চরিত্রে।
‘আমি যতদিন সিনেমার ইউনিটের সঙ্গে ছিলাম, ততদিন আমি সখিনা হয়ে ছিলাম। শুটিংয়ে গেলেই মিম হয়ে যেত সখিনা। একটি চরিত্রকে নিজের মধ্যে ধারণ করা তো সহজ ব্যাপার না। আমি তা রপ্ত করেছিলাম’, বলেন মিম।
শুটিংয়ের স্মরণীয় ঘটনার কথা বলতে গিয়ে মিম বলেন, ‘সিনেমার শেষ অঙ্কে এসে আমার কান্নার সিকোয়েন্স রয়েছে একটি। সিনেমার নায়ক রতনের সঙ্গে (অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন) বিচ্ছেদের সেই পর্বে কাঁদতে হবে। আমি চরিত্রের ভেতরে এতই ঢুকে পড়েছি যে সত্যিই কেঁদে উঠেছিলাম। সেই দৃশ্যটি সত্যি এমন লেগেছিল, বুঝি আমার কাছের মানুষ আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমি কান্না থামাতে পারিনি।’
ঢাকাই সিনেমার নবাগত অভিনেত্রীদের ভিড়ে মিম ঠাঁই করে নিতে পারবেন তো! প্রথম সিনেমা ‘লালচর’-এ কী এমন ভিন্নতাই বা আছে? জবাবে মিম বলেন, ‘আমার চরিত্রে খুব কঠিন কিছু নেই। গ্রামের এক উচ্ছ্ল তরুণীর গল্প এটি। তার সুখ, আনন্দ, অভিমান আর বিদ্রোহের কথাও বলবে এই সিনেমা। গ্রামীণ পটভূমিতে ঠিক যে ধরনের গল্প দর্শক দেখতে ভালোবাসে, সেই ধরনের একটি গল্পেই নির্মিত এই সিনেমা।’
‘লালচর’-এর পর মিমের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ঠিক কোন দিকে যাবে? উত্তরে মিম বলেন, ‘‘আমি বাংলাদেশের গতানুগতিক ধারার ছবিতে কাজ করতে চাই না। সুস্থ, সুন্দর, সামাজিক ছবিতে আমি অভিনয় করতে চাই। আমি সত্যিই সিনেমা নিয়ে ভাবছি। তবে ‘লালচর’ সিনেমাটি তো মুক্তি পেতে চলল। সিনেমাটি দেখে দর্শক কী বলে, তা আগে জেনে নিই। তার পর আমি সিদ্ধান্ত নেব।”