সুস্থ হওয়ার পর এই প্রথম টিভি ক্যামেরার সামনে ন্যান্সি (এক্সক্লুসিভ ভিডিও)

0

Untitled-1 copyঅবশেষে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গানের পাখি ন্যান্সি তার অগণিত দর্শক শ্রোতা ও মিডিয়ার উদ্দেশ্যে কিছু কথা ও অভিযোগ করেছেন। যার পুরোপুরি পাঠকদের উদ্দশ্যে তুলে ধরা হলো।

ন্যান্সির ফেসবুক লিংক

আমার সকল দর্শক শ্রোতা, শুভাকাঙ্খী এবং মিডিয়ার উদ্দেশ্যে কিছু কথা-

আপনারা ইতিমধ্যেই জানেন, ১০ মাস ধরে কোনো কারণ ছাড়াই আমার সব গানের শো বাতিল হয়ে যাচ্ছিলো। আয়োজকদের জিজ্ঞেস করলে তাঁরা দাবি করেন, আমার শোর নাকি টিকিট বিক্রি হয় না। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য কথা? আমি তো বিশ্বাস করব না। নিশ্চয়ই এর পেছনে একটি মহলের বড় কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে।

কিন্তু কেন?? আমি তো কারও ক্ষতি করিনি। আমি একজন শিল্পী। আমি গান গাই। আমি চলচ্চিত্র, টিভির অনুষ্ঠান এবং অডিও অ্যালবামে গান করছি। কিন্তু একজন শিল্পীর মূল আয় হয় স্টেজ শো থেকে। অথচ গত ১০ মাসে আমার সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, শুধু স্টেজ শোগুলো বাতিল হয়ে যায়। এটা আমাকে চরমভাবে হতাশ করে তুলেছে। এই সমস্ত নানাবিধ চিন্তায় আমার ঘুম কম হত। অনিদ্রা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক ঘুমের ওষুধ দিলেন। যা আমি গত কয়েকমাস থেকেই খাচ্ছি। আমার স্বামী ময়মনসিংহে চাকরি করেন। পেশাগত কারণে কয়েক মাস ধরে আমি দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় আছি। এই সময় কেমন যেন অনিশ্চয়তা অনুভব করছিলাম। আর তাছাড়া ব্যস্ততার কারণে ঈদের সময় কোনো আত্মীয়ের বাসায়ও যাওয়া হয়নি। তাই ঈদের পর মগবাজারের ভাড়া বাসা ছেড়ে নেত্রকোনায় মায়ের বাসায় চলে যাই। ভেবেছিলাম আত্মীয়স্বজনের মাঝে থাকলে হয়তো ভালো থাকব। হতাশা চেপে বসবে না।

ঘটনার দিনও আমার কোনো ভাবেই ঘুম আসছিলো না। যেহেতু সেখানে আমার সকল আত্মীয় স্বজন রয়েছে সেহেতু আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে তেমন একটা চিন্তা না করে, একটু ফ্রেশভাবে ঘুমাতে চাইলাম। তাই নিজের খাওয়া ট্যাবলেট হাতের কাছে না থাকায় আমি আমার মায়ের জন্য দেওয়া ট্যাবলেট থেকেই ৭-৮ টা ট্যাবলেট খেয়েছিলাম। যেহেতু জিওনিল ট্যাবলেটের পাওয়ার খুবই কম, মাত্র .৩ । আর আমাকে আগে থেকেই অনেক হাই পাওয়ারের ট্যাবলেট খেতে হতো, সেহেতু এসব ছোট খাটো ট্যাবলেট আমার তেমন কাজ করেনা। ট্যাবলেট গুলো মা মারা যাওয়ার পরে ফেলা হয়নি। খুব সম্ভবত ওই ট্যাবলেট গুলো অনেক দিন আগের হওয়াতে সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিলো। অথবা আমার সাথে মানিয়ে নিতে পারেনি। আর তাই আমি অসুস্থ হয়ে যাই এবং আমার ভাইয়েরা আমাকে নেত্রকোনায় নিয়ে আসে ট্রিটমেন্টের জন্য।




আমি যে অসুস্থ হয়েছিলাম তার ট্রিটমেন্ট নেত্রকোনাতেই সম্ভব ছিলো। কিন্তু তারা সেখানে আমার ট্রিটমেন্ট না করে আমাকে ময়মনসিংহ পাঠিয়ে দিলো। ময়মনসিংহ আনার পর ডাক্তার জানালো এটি তেমন কোনো বড় সমস্যা নয়, শুধুমাত্র একটি এন্টিডোজ হলেই চলবে। সেটি ঘুমের রেশ কাটিয়ে দিবে। আর কিছুই করতে হবেনা।

কিন্তু ময়মনসিংহে ডাক্তাররা পুলিশ/সাংবাদিক দেখে ঘাবড়ে যায় এবং তারা আমাকে ঢাকায় ট্রান্সফার করে। ঢাকায় নিয়ে এলে ডাক্তার আমাকে সরাসরি ICU তে ভর্তি করিয়ে নেয়। আমার ধারণা, একটি কুচক্রী মহল আমাকে ICU তে ভর্তি করিয়ে এটি প্রুব করার চেষ্টা করলো যে, এটি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি বা আমি সুস্থ নয়।

সেখান থেকে আমার ফ্যামিলি ডাক্তার ড. ফরহাদ উদ্দিন খান আমাকে নিয়ে আসে। উনার স্ত্রী ডালিয়া একজন গাইনোকলজিস্ট, আমি দীর্ঘদিন থেকেই উনার কাছে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছি। তারাই আমার দেখাশুনা করলো এবং এখনো করছে।

আমি বর্তমানে আমার ভাইয়ের বাসায় রয়েছি। কিন্তু বাসায় আসার পর আমি জানতে পারি এই বিষয়টি নিয়ে কিছু মিডিয়া অসত্য তথ্য প্রচার করছে। কোনো কোনো মিডিয়া প্রচার করেছে আমি নাকি আত্মহত্যা করার উদেশ্যে ৬০ টি ঘুমের বড়ি খেয়েছি!! কোনো সুস্থ সচেতন ও বিবেকবান মানুষ মিডিয়ার এ সমস্ত বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর বিশ্বাস করবে বলে আমার মনে হয় না। শুধু তাই নয় গত কয় দিনে আমার স্বামী, পরিবারকেও জড়িয়ে দেখলাম অনেক মিথ্যা ও মুখরোচক সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। যা কোনভাবেই সঠিক নয়। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সমাজের চোখে আমাকে হেয় করতেই এসব বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে ।

আমি শিল্পী মানুষ। গানই আমার জীবন, গানই আমার মরণ। সারাটা জীবন আমি গান নিয়েই থাকতে চাই। তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ, প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। নানাভাবে হয়রানি করে দিন দিন আমাকে যেভাবে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে তাতে ভয় হয়, ভবিষ্যতে গান করতে পারব তো!?? তবে এভাবে চলতে থাকলে হয়তো গানকে চিরদিনের মতো বিদায় জানাতে হতেও পারে। তখন স্বামী-সন্তান নিয়েই থাকব।

মিডিয়ার উদ্দেশ্যে আমি দুটি কথা বলতে চাই-
একটি দেশের বা জাতির প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে মিডিয়া। কিন্তু সেই মিডিয়া যদি একটি মানুষ সম্পর্কে এমন মিথ্যা অপপ্রচার করে তাহলে তা খুবই নিন্দনীয় ব্যাপার। আমি চাই আমার দেশের মিডিয়া হলুদ সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে এসে সুস্থ এবং সুন্দর তথ্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিক। তিলকে তাল না করে, বরং দেশে যে তাল পরিমান সমস্যা গুলো রয়েছে সেগুলোকে তিলে পরিনত করার চেষ্টা করুক।

আমার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে প্রথম সারির বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল, পত্রিকা ও অনলাইনে প্রকৃত সত্য প্রচার না করে যে ভিত্তিহীন নির্জ্বলা মিথ্যাচার চালিয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন জীবনের বাকি দিনগুলিতেও অগণিত দর্শক শ্রোতাদের গান উপহার দিতে পারি। সেইজন্য আমি সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি আমার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

ন্যান্সি

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More