টানা চারবার পুরস্কার জিতেছেন। আফ্রিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা ইয়াইয়া তোরে বলতে গেলে নিজেরই করে নিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চমবার এসে সেটি হাত ফসকে গেছে ম্যানচেস্টার সিটির আইভরি কোস্ট মিডফিল্ডারের। পুরস্কারটা এবার গেছে ডর্টমুন্ডের গ্যাবনিজ স্ট্রাইকার পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের কাছে। আর তাতেই বেজায় খেপেছেন তোরে, বলছেন তাঁর এই বঞ্চনা পুরো আফ্রিকারই অপমান!
‘অভিমান’ করার অভ্যাস অবশ্য তোরের আগে থেকেই আছে। এর আগে জন্মদিনে সিটি কেক পাঠায়নি বলে রেগেমেগে ক্লাব ছাড়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। তবে এবার তোরের রাগটা একটু বেশিই। গত বছর আফ্রিকান নেশনস কাপের শিরোপা এনে দিয়েছিলেন দেশকে। ট্রফিটা তাঁরই প্রাপ্য বলে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু দেশের হয়ে অর্জনের চাইতে এই পুরস্কার দিতে ক্লাবের প্রাপ্তিকেই বড় করে দেখা হয়েছে। সেটা নিয়েই ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি তোরে, ‘আফ্রিকাকে এভাবে গুরুত্বহীন দেখাটা খুব কষ্টের। যা হয়েছে সেটা পুরো আফ্রিকারই অপমান। আফ্রিকা আমাদের চোখে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং মহাদেশের বাইরে যা হচ্ছে সেটা নিয়েই আমাদের মাথাব্যথা। ব্যাপারটা দুঃখজনক।’ গত বছরটা ক্লাবের হয়ে অবশ্য দুর্দান্ত কেটেছে অবামেয়াংয়ের, বুন্দেসলিগায় এই মৌসুমেই ১৭ ম্যাচে করে ফেলেছেন ১৮ গোল। কিন্তু গ্যাবনকে তিনি নেশনস কাপের প্রথম রাউন্ডই পার করাতে পারেননি।
শুধু এটুকু হলে কথা ছিল। তোরে ভোটে কারচুপির অভিযোগ পর্যন্ত তুলেছেন, ‘ফিফার মতো দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠানও এমন কাজ করবে না। আপনি শুধু চিন্তা করুন, গত বছর লিওনেল মেসি সব ট্রফি জেতার পরও ব্যালন ডি’অর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছে গেলে ব্যাপারটা কেমন হবে?’
কিন্তু তোরে যতই বলুন, ১৪৩ পয়েন্ট পেয়ে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়েছেন অবামেয়াংই। তোরে সাত পয়েন্ট পেছনে থেকে হয়েছেন দ্বিতীয়, সোয়ানসি সিটির ঘানার স্ট্রাইকার আন্দ্রে আইয়ু ১১২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
আইয়ুও তোরেকে দ্বিতীয় হতে দেখে বিস্মিত, ‘আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি, অবামেয়াং আমার বন্ধু। আমি জানি, ওর এই বছরটাও দুর্দান্ত কেটেছে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিতাটিকে শ্রদ্ধা করতে হবে। আমরা আফ্রিকানরা না করলে সেটা কারা করবে? সত্যি বলতে এটা ইয়াইয়া বা আমারই পাওয়ার কথা।’ আইয়ু নিজেও নেশনস কাপে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ঘানাকে ফাইনালে নিয়ে গেছেন, টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন।
তবে অবামেয়াংয়ের এখন এসব নিয়ে ভাবার সময় কই? প্রথমবারের মতো এই অর্জনের পর দেশে বীরের সংবর্ধনাই পেয়েছেন। গ্যাবনের রাষ্ট্রপ্রতি প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অবামেয়াংকে দেশটির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়ে দিয়েছেন।