কল্পনাকেও হার মানিয়ে ছাড়লো অ্যালেস্টার কুকের ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ব্রডের বোলিং তোপে পড়ে অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্টে মাত্র ৬০ রানে অলআউট হয় মাইকেল ক্লার্কের দল। ১১১ বল স্থায়ী হওয়া ইনিংসটিতে অসংখ্য রেকর্ড হয়েছে। পরিসংখ্যানের আলোকে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের কিছু তথ্য ও রেকর্ড দেখে নেয়া যাক।
৬০: প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার করা ৬০ রান তাদের টেস্ট ইতিহাসের সপ্তম সর্বনিম্ন এবং গত ৭৯ বছরের মধ্যে এটা অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১১ সালে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ৪৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অসিরা।
২৫: মাত্র ৪.১ ওভারে (২৫ বল) অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি উইকেটের পতন ঘটেছে। ২০০২ সালের পর কোনো দলের টেস্টে এতো কম বলের ব্যবধানে পাঁচ উইকেটের পতন ঘটলো।
১১১: মাত্র ১১১ বলে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেল। টেস্টের প্রথম ইনিংসে কোনো দলের সবচেয়ে কম বলে গুটিয়ে যাওয়ার নজির এটি। এটি অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় সংক্ষিপ্ততম সময়ে গুটিয়ে যাওয়ার উদাহরণ। ১৯৩৬ সালে ব্রিসবেনে মাত্র ৯৯ বলে গুটিয়ে যায় অসিরা। অস্ট্রেলিয়ার ১৪টি সংক্ষিপ্ততম ইনিংসের ১৩টিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
০: টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪৬তম ইনিংসে এসে শূন্য রানে আউট হলেন ক্রিস রজার্স। যদি অ্যাশেজের বাকি দুটি টেস্টে তিনি শূন্য রানে আউট না হয়ে অবসরে যেতেন (অ্যাশেজের পরই অবসর নিবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন) তবে বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারতেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে শূন্যবিহীন থেকে অবসর নেয়ার এই বিশ্ব রেকর্ডটা ধরে রেখেছেন জিমি বার্ক। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৯ সালের মধ্যে ২৪ টেস্টের ৪৪ ইনিংসে একবারও শূন্য রানে আউট হননি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ব্যাটসম্যান।
৮-১৫: টেস্টের প্রথম দিন লাঞ্চের আগে সেরা বোলিং ব্রডের ৮-১৫। আগের সেরা গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জির। ১৯৬৭ সালে এমসিজিতে ভারতের বিরুদ্ধে ৬-৩৪।
৫: পঞ্চম ইংলিশ বোলার হিসেবে টেস্টে ৩০০তম উইকেট নিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ক্রিস রজার্সকে আউট করে তিনি এই রেকর্ড গড়েন। এর আগে জেমস অ্যান্ডারসন (৪১৩*), ইয়ান বোথাম (৩৮৩), বব উইলিস (৩২৫) ও ফ্রেড ট্রমেন (৩০৭) এই কৃতিত্ব দেখান।
৬.১: ইনিংসের মাত্র ৬.১ ওভার শেষে স্টুয়ার্ট ব্রড পাঁচ পাঁচটি উইকেট তুলে নিলেন। ২০০২ সালের পর থেকে ৬.১ ওভার কোনো বোলার ৩ উইকেটের বেশি নিতে পারেননি।
৩: অ্যাশেজে মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনটি সেঞ্চুরি করেন জো রট। ২৪ বছর বয়সে আর কোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যাশেজে ৩টি সেঞ্চুরি করতে পারেননি। লিও হাটন ২৪ বছর বয়সে দুটি সেঞ্চুরি করেন।
৮/১৫: প্রথম ইনিংসে ব্রডের বোলিং ফিগার, যা তার ক্যারিয়ার-সেরা। এর আগে দুবার ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আর দুটিই লর্ডসে, ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ও ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
৫ এবার নিয়ে পঞ্চমবার অস্ট্রেলিয়ার টপ চার ব্যাটসম্যানের তিনজন শূন্য রানে আউট হলেন। ক্রিস রজার্স (০), ডেভিড ওয়ার্নার (০), স্টিভেন স্মিথ (৬) ও শন মার্শ (০)। আর এই পাঁচবারই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সর্বশেষ এমনটা হয়েছিল ৬৫ বছর আগে, ১৯৫০ সালে ব্রিসবেন টেস্টে।
০: অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সারির সাত ব্যাটসম্যানের কেউ ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। একমাত্র ক্লার্ক দুই অঙ্কের কোটা (১০) স্পর্শ করেন। ৭৯ বছর আগে ১৯৩৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সর্বশেষ এমনটি ঘটে।
১৪: এই নিয়ে ১৪ বার কোনো টেস্ট ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার মিস্টার এক্সট্রা (অলআউট হওয়া ইনিংসে)। অস্ট্রেলিয়ার ৬০ রানে গুটিয়ে যাওয়া ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৪ রান অতিরিক্ত খাত থেকে আসে।
৯: এই নিয়ে নবম বার স্টুয়ার্ট ব্রড টেস্ট ইনিংসে ৬ বা ততোধিক উইকেট দখল করেছেন। ইংলিশ পেস বোলারদের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ এবং সব মিলিয়ে ষষ্ঠ।
১.৮৭: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ বা ততোধিক উইকেট লাভ করা বোলারদের মধ্যে স্টুয়ার্ট ব্রডের গড় সবার সেরা। মাত্র ১.৮৭ গড়ে ১৫ রান দিয়ে তিনি ৮ উইকেট লাভ করেন।