দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের জন্য ২৩২ রানের লক্ষ্যটা খুব একটা কঠিন ছিল না। কিন্তু উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে পাকিস্তানকে দারুন এক জয় এনে দিয়েছেন পেসাররা। ১৪.৩ ওভার বাকি থাকলেও সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ২০২ রানে থেমে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ২৯ রানের জয় দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার পথে বড় একটা বাধা পেরিয়েছে পাকিস্তান। দলের ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে প্রায় একাই লড়াই চালিয়েছিলেন অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৫৮ বলে ৭৭ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে জয়ের অনেক কাছাকাছিও নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু জয় থেকে মাত্র ৩১ রান দূরে থাকার সময় সোহেল খানের বলে আউট হয়েছেন ভিলিয়ার্স। এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কুইনটন ডি কককে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য ওপেনার হাশিম আমলা ও ফাফ ডু প্লেসি। কিন্তু দশম ও একাদশ ওভারে দুজনকেই হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। ডু প্লেসিকে (২৭) ফিরিয়েছেন রাহাত আলী, আমলা (৩৮) ওয়াহাব রিয়াজের শিকার। দুজনই কট বিহাইন্ড। এরপর ওয়াহাব রিলি রুসোকে (৬) সোহেল খানের ক্যাচ বানানোর পর ডেভিড মিলারকে (০) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাহাত। ৭৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপদ বাড়িয়ে ২০তম ওভারে আউট হয়ে গেছেন জেপি ডুমিনি (১২)। দক্ষিণ আফ্রিকার ভরসা হয়ে উইকেটে আছেন অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাট করছেন ৫৬ রান নিয়ে। অকল্যান্ডে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের দারুণ বোলিংয়ে তেমন বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি পাকিস্তান। ৪৭ ওভারের ম্যাচে দুই বল বাকি থাকতেই ২২২ রান জমা করে গুটিয়ে গেছে মিসবাহর দল। তবে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হবে ২৩২ রান। গ্রুপ পর্বের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে দুই দফায় খেলা বন্ধ হওয়ায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ৪৭ ওভারে। পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস এসেছে অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের ব্যাট থেকে। বিশ্বকাপে অভিষেককে রঙিন করে রেখে ৪৯ বলে ৪৯ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছেন ওপেনার সরফরাজ আহমেদ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। নবম ওভারে ডেল স্টেইনের দারুণ এক ক্যাচের সুবাদে আহমেদ শেহজাদকে (১৮) ফিরিয়েছেন কাইল অ্যাবট। মিডউইকেটের ওপর দিয়ে বলটা আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন শেহজাদ। ভেবেছিলেন বলটা পথ পেয়ে সীমানার বাইরে চলে যাবে। পেছনে ফিরতে ফিরতে প্রায় পাখির মতো উড়ে গিয়ে ক্যাচটি লুফে নিয়েছেন স্টেইন। দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন সরফরাজ আহমেদ ও ইউনিস খান। পাকিস্তানের এই প্রতিরোধও ভেঙে গেছে প্রোটিয়াদের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। ৪৯ বলে ৪৯ রান করে রানআউট হয়েছেন সরফরাজ। ৩৭ রান করা ইউনিস খানের উইকেট নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি শোয়েব মাকসুদ (৮) ও উমর আকমল (১৩)। মিসবাহর দৃঢ়তার সঙ্গে শহীদ আফ্রিদির ১৫ বলে ২২ রানের ‘ক্যামিও’ ইনিংস সোয়া দুশর কাছাকাছি নিয়ে গেছে পাকিস্তানকে। ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩০ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নেওয়া স্টেইন প্রোটিয়াদের সেরা বোলার। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যাবট ও মর্নে মরকেল।