ঢাকা: হিংস্র মুখগুলো ঝুঁকে পড়ছে রেলিং ধরে, মাঠ দিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে হেঁটে আসতে দেখে গলার শিরা ফাটিয়ে ততধিক বাড়ছে বিদ্রুপের ‘মওকা, মওকা..’ চিৎকার। মনের ভেতর আগুন জ্বললেও চেহারায় অত্যধিক ভাব দেখিয়ে ভারত অধিনায়ক তাকালেন ওপরের দিকে। হেসে হাত নাড়িয়ে যেন বোঝাতে চাইলেন, আমি নই। ও সবের পিছনে আমি নই…।
হাসির ভাবটা যতই ফুটিয়ে তোলা হোক, মাঠের খেলায় তো লজ্জা আর অপমানই সইতে হয়েছে ‘মহাভারতে’র অধিনায়ককে! উপমহাদেশ তো নয়, অস্ট্রেলিয়া ছাড়া এতটা হতশ্রী অবস্থা আর কোথাও ভারতের কখনও দেখা গেছে কি না সন্দেহ। ভারতের আচানক এমন দুর্দশার কারণ একজনই, ১৯ বছরের হাড় ঝিরঝিরে সদ্য কৈশোর পেরুনো এক তরুণ মুস্তাফিজুর রহমান। তার দুর্বোধ্য অস্ত্র স্লোয়ার আর কার্টারেই নাকাল হতে হয়েছে কোহলি-রোহিত শর্মাদের মত বিশ্বখ্যাত ব্যাটসম্যানদের গড়া ব্যাটিং লাইনআপ।
তরুন এই পেসারকে কাঁধের ধাক্কায় মাঠ থেকে ছিটকে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন ধোনি। সেই পেসারই যখন দ্ইু ম্যাচে ১১ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে সিরিজ থেকে ছিটকে ফেলে দিল, তখন তার প্রতিভা নিয়ে আর সংশয় থাকার কথা নয় ধোনির।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে সেটাই স্বীকার করে গেলেন ধোনি। জানিয়ে গেলেন, মুস্তাফিজের বলগুলো বুঝতেই পারছি না আমরা। তার বেশ কিছু ডেলিভারি ছিল যেগুলো ভীষণ অসুবিধায় ফেলেছে আমাদেরকে। বিশেষ করে তার স্লোয়ারগুলো যেন জটিল ধাঁধা।
এ কারণে শুরুতেই মুস্তাফিজের প্রশংসা করেন ভারত অধিনায়ক। ধোনি বললেন, ‘সে অবশ্যই খুব ভালো বোলার। কন্ডিশনকে দারুণভাবে কাজে লাগাচ্ছে।’
এরপরই ধোনি বললেন, কেন তার বল খেলতে দুর্বোধ্য মনে হচ্ছে তাদের কাছে, ‘তার স্লোয়ারগুলো সত্যি খুব দারুণ। হাত বেশ দ্রুত গতিতে ঘোরে। দ্রুত গতির ও স্লোয়ার ডেলিভারির সময় হাত ঘোরানোর ক্ষেত্রে খুব একটা পার্থক্য থাকছে না ওর। এটা তার জন্য বাড়তি পাওয়া। আর বেশির ভাগ ফাস্ট বোলারদের স্লোয়ারগুলো উইকেটররক্ষকের হাতে সরাসরি যায় না। ডানহাতি ও বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে তার স্লোয়ারগুলো সরাসরি উইকেটরক্ষকের হাতে চলে যাচ্ছে। এর ফলে সাধারণত ব্যাটের কানায় লেগে আউটের সম্ভাবনা থাকে। এটা তার জন্য বাড়তি সুবিধা। যদিও আমাদের দুই-একজন ব্যাটসম্যান বাজে শট খেলে আউট হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে মুস্তাফিজের অসাধারণ সব বলেই।’