আগের ম্যাচেই গোল পেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, গ্যারেথ বেল আর করিম বেনজেমা। ‘বিবিসি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা এই আক্রমণ ত্রয়ীর চেয়ে বার্সেলোনার লিওনেল মেসি, নেইমার আর লুইস সুয়ারেস কম কীসে! গোল করা আর করানোয় ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর অসাধারণ দক্ষতায় আথলেতিক বিলবাওকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কাম্প নউয়ের দলটি।
লা লিগার এই মৌসুমে গোলসংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে দারুণ এক হ্যাটট্রিক করেন সুয়ারেস। বাকি তিনটি গোল মেসি, নেইমার আর রাকিতিচের।
রোববার রাতে ম্যাচ শুরুর আগেই আনন্দের একটা উপলক্ষ ছিল কাম্প নউয়ের সমর্থকদের জন্য। তুমুল করতালির মধ্যে সম্প্রতি জেতা পঞ্চম ব্যালন ডি’অর প্রদর্শন করেন মেসি।
আর ম্যাচের প্রথম থেকেই সমর্থকদের আনন্দ জুগিয়ে যান ‘এমএসএন’। প্রথম মিনিটেই বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন নেইমার।
পরের মিনিটেই জেরার্দ পিকের ব্যাক পাসে সুযোগ এসেছিল আথলেতিকের। তবে হাভিয়ের এরাসোর চিপে বল ক্রসবারের একটু উপর দিয়ে চলে যায়।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়া আথলেতিকের অর্ধে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ২২তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া নেইমারে শট কোনোমতে ঠেকান এক ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক। একটু পর সুয়ারেসের ভালো একটি চেষ্টাও ব্যর্থ হয়।
২৯তম মিনিটে আলেইশ ভিদালের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোল পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হলো স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারকে।
তবে পরের গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বার্সেলোনাকে। ৩১তম মিনিটে নেইমারের ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলটির পেছনে লুইস সুয়ারেসেরও অবদান কম নয়। দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বাঁ দিকে দারুণভাবে বল বাড়িয়েছিলেন তিনি। নিখুত ফিনিশিংয়ে চিপ করে বল জালে পাঠান ব্রাজিল অধিনায়ক।
রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আর করিম বেনজেমার সঙ্গে লা লিগার এ মৌসুমে নেইমারেরও গোল হলো ১৬টি।
চার মিনিট পরই দারুণ একটা সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। নেইমারের নীচু ক্রসে খুব কাছ থেকে শট নিলেও বল চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।
বিরতির পর মাঠে আর নামেননি মেসি। তার বদলি হিসেবে কোচ লুইস এনরিকে মাঠে নামান আর্দা তুরানকে। আর দেড় মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান বাড়ান সুয়ারেস।
সুয়ারেসের এই গোলের কারিগর আবার নেইমার। আক্রমণের সূচনা করার পর সুয়ারেসের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে দারুণভাবে তিনি বল পাঠিয়েছিলেন ডি-বক্সে।
৬১তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর একটা ভালো সুযোগ নষ্ট করে আথলেতিক। পাল্টা আক্রমণে গোল করে উল্টো ব্যবধান বাড়ান ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ।
গোলটির ৮০ শতাংশ কৃতিত্বই নেইমারের প্রাপ্য। বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পায়ের জাদুতে ডিফেন্ডারদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে বলটা তিনি ঠেলে দিয়েছিলেন রাকিতিচের পায়ে।
৬৯তম মিনিটে তুরানের ক্রসে বুক দিয়ে বল নামিয়ে ডান পায়ের টোকায় বল জালে জড়ান সুয়ারেস।
৮২তম মিনিটে নেইমারে পা থেকে বল বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক। তবে কয়েক মুহূর্ত পরেই বুসকেতসের ক্রসে লাফিয়ে উঠে হেড করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সুয়ারেস।
রিয়াল মাদ্রিদের রোনালদো ও বেনজেমা এবং সতীর্থ নেইমারকে ছাড়িয়ে সুয়ারেসের লা লিগার এ মৌসুমে গোল হলো সর্বোচ্চ ১৮টি।
এই জয়ে ১৯ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকল বার্সেলোনা।
আগের ম্যাচে লাস পালমাসকে ৩-০ গোলে হারানো আতলেতিকো মাদ্রিদ ২০ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখে। স্পোর্তিং গিহনকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া রিয়াল মাদ্রিদ ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।