যেখানে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

0

PAK VS BAN copyঅপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে এখন দিন থেকে ঘণ্টায় এসে পৌঁছেছে। আগামীকাল শুরু বাংলাদেশ-পাকিস্তান ওয়ানডে সিরিজ। এই সিরিজে কে ফেবারিট? পাকিস্তান নাকি বাংলাদেশ! এমন প্রশ্নে কেউ কেউ বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানকেই ফেবারিট বলছেন অতীত রেকর্ডের কারণে। কিন্তু কিছুদিন আগেই সাকিব আল হাসান বলেছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশই ফেবারিট। শুধু তা-ই নয়, আজও সংবাদ সম্মেলনে নিজের মতে অটল থাকলেন প্রথম ওয়ানডের অধিনায়ক।

সাকিব কি ভুল বলেছেন?
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান, দুদলই কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেটের দীর্ঘ ঐতিহ্য আর অভিজ্ঞ, বড় দলের তকমার কারণে কেউ কেউ পাকিস্তানকে এগিয়ে রাখছে। কাগজে-কলমে এবং র‍্যাঙ্কিংয়েও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে পাকিস্তান। তবে ক্রিকেটে আসল ব্যাপারটি হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা। আর সেখানেই এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তরুণ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের মিশেলে ১৪ জনের দল ঘোষণা করেছে। আবার পাকিস্তানেরও ১৫ সদস্যের দল ঢাকায় এসেছে। পাকিস্তান দলে শত ম্যাচ খেলেছেন মাত্র দুজন (মোহাম্মদ হাফিজ ও সাঈদ আজমল)। সেখানে বাংলাদেশ দলে শত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে পাঁচ ক্রিকেটারের-মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিম ও মাহমুদুল্লাহ।
পাকিস্তান দলের ১৫ জন ক্রিকেটারদের খেলা মোট ম্যাচ সংখ্যা ৫৪০টি। গড়ে একজন খেলেছেন ৩৬টি ম্যাচ। আর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের খেলা মোট ম্যাচ সংখ্যা ৮৬৭টি। অর্থাৎ গড়ে একজন খেলেছেন ৬২টি ম্যাচ। ম্যাচ খেলার দিক দিয়ে পাকিস্তানের চেয়ে ঢের অভিজ্ঞ বাংলাদেশ। পাকিস্তান দলের ক্রিকেটারদের মোট রান সংখ্যা ৯ হাজার ১১৬, সেখানে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের মোট রান সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৯১।
বর্তমান পাকিস্তান দলের ব্যাটিং গড় ২৫.৭৫, আর বর্তমান বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং গড় ২৮.৪২। পাকিস্তান এই দলের ব্যাটসম্যানরা সেঞ্চুরি করেছেন ১১টি, বাংলাদেশের সেঞ্চুরি করেছেন ১৫টি। পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ একাই ৯টি সেঞ্চুরি করেছেন। বাকি ২টি সেঞ্চুরি ফাওয়াদ আলম ও সরফরাজের। আর বাংলাদেশ দলে সেঞ্চুরি করার অভিজ্ঞতা আছে পাঁচজনের। পাকিস্তান দলের ব্যাটসম্যানরা যেখানে ফিফটি করেছেন মাত্র ৪৭টি, সেখানে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা ফিফটি হাঁকিয়েছেন দ্বিগুণেরও বেশি-১০১টি।
এবার বোলারদের দিকে তাকানো যাক। সেখানেও অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বোলারদের মোট উইকেট সংখ্যা ৪৮৪টি আর বাংলাদেশ দলের বোলারদের উইকেট সংখ্যা ৫৬৪টি। পাকিস্তান দলের বোলাররা ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার এবং ৪ উইকেট ১১ বার। সেখানে বাংলাদেশ দলের বোলাররা ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার এবং ৪ উইকেট নিয়েছেন ১৮ বার। পাকিস্তানের সবচেয়ে অভিজ্ঞ আজমল ও হাফিজ। এর মধ্যে হাফিজ বোলিং থেকে নিষিদ্ধ আর আজমল মাত্র নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরেছেন, সেটাও অ্যাকশন শুধরে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ অনুপস্থিতি আর অ্যাকশন ​বদলানোর ফলে আজমল আর আগের মতো ধারালো হবেন না বলেই অনুমান করা হচ্ছে। অ্যাকশন শুধরে আইপিএলে ফেরা সুনীল নারাইন দুই ম্যাচে একটা উইকেটও পাননি। এই নারাইনই দুবার কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন ২৪ ও ২২ উইকেট নিয়ে।
দলগত র‍্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তান সাতে, বাংলাদেশ নয়ে। কিন্তু ব্যক্তিগত র‍্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের চেয়ে ঢের এগিয়েই বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে মুশফিক (৩০)। এরপর হাফিজ (৩৩), সাকিব (৩৬), মাহমুদুল্লাহ (৪৫), তামিম (৪৮), নাসির (৫৪), ফাওয়াদ (৯২) এবং হারিস সোহেল (৯৬)। বোলারদের মধ্যে সেরা দশে আছেন পাকিস্তানের আজমল (৩ ) এবং বাংলাদেশের সাকিব (১০)। এরপরেই মাশরাফি (২৬), জুনায়েদ (৩৯), রুবেল (৬২), ওয়াহাব (৭২), মাহমুদুল্লাহ (৮১) এবং আরাফাত সানি (৯৬)। র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা ১০০ জনের তালিকায় বর্তমান বাংলাদেশ দল থেকে আছেন ৫ জন, পাকিস্তানের ৩ জন। বোলারদের তালিকাতেও তা-ই। অলরাউন্ডার র‍্যাঙ্কিংয়ে সাকিব দুইয়ে, চারে থাকা হাফিজ বোলিং থেকেই নিষিদ্ধ।
আফ্রিদি-মিসবাহর অবসরের পর বর্তমান পাকিস্তান দলটা অনেকটাই অনভিজ্ঞ। সাকিব ঠিকই বলেছেন, পাকিস্তানকে হারানোর এখনই আমাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ!

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More