শেষ ওয়ানডে জিতলে, সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ে জিতলে, সিরিজ হারের লজ্জা এড়াবে সফরকারীরা। তাই সিরিজ নিয়েই চিন্তাটা বেশি বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের। সিরিজের ভাবনা নিয়েই ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজের ৪র্থ ও শেষ ম্যাচ শুক্রবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিকেল ৩টায় মুখোমুখি হচ্ছে দু’দল।
বাংলাদেশ দলে নেই চার তারকা ক্রিকেটার। দলের কাটার মুস্তাফিজুর রহমান ও আল আমিনকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। চোটের কারণে খেলতে পারছেন না মুশফিকুর রহিম। বিশ্রামে গেছেন ওপেনার তামিম ইকবালও। ফলে টাইগারদের ব্যাটিং ও বোলিং সাইড কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। বুধবারের তৃতীয় সিরিজে এটি স্পষ্ট হয়েছে জিম্বাবুয়ের ১৮৮ রানের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেনি টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের কাছে ৩১ রানে পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। ম্যাচ হেরে যাওয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। অধিনায়ক হিসেবে আমার সব সময় গুরুত্ব থাকে ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে। টিমের পক্ষ থেকে বলতে পারি আমরা অবশ্যই ম্যাচ হারতে চাইনি। যেই খেলুক, তাদের সবার সুর্নিদিষ্ট করে পরিকল্পনা দেওয়া ছিল। মাশরাফির এই বক্তব্যই ইঙ্গিত দিচ্ছে আজকের শেষ ম্যাচটি নিয়ে টাইগারদের ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। অভিষিক্তদের সাথে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা তাল মেলাতে পারলে সিরিজ টাইগাররাই জিততে পারবে।’
বৃহস্পতিবার হোটেলে বাংলাদেশে দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস আছে কালকে আমরা ঘুরে দাঁড়াব। বাংলাদেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে নিতেই হয় তাহলে সেকেন্ড স্ট্রেন্থ বোলারদের তৈরি করতে হবে। একটা না একটা সময়ে তাদের অভিষেক হতই। যদি মনে করে দেখেন গত অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আল-আমিনের পরিবর্তে শফিউল গিয়েছিল। বিজয়ের পরিবর্তে ইমরুল গিয়েছিল। তারা কিন্তু রেডি ছিল না। অনুশীলন ছিল না তাদের। আমরা চাচ্ছি ১৯-২০ জনের একটা পুল রেডি থাক। আমাদের বিশ্বকাপে ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ ও এশিয়া কাপে পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। মূল বিশ্বকাপের আগেও কিন্তু তিনটি প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে হবে। যদি কোনো না কোনো কারণে কেউ যদি ইনজুরিতে পড়ে তাহলে তার পরিবর্তে কাউকে রেডি করতে হবে। সব চিন্তা করেই এগুলো আসছে। এটা মনে রাখতে হবে সবাই জাতীয় দলে খেলার মত যোগ্য ক্রিকেটার। তারা যোগ্য বলেই আজ জাতীয় দলে খেলছে।’
সুজন আরো বলেন, ‘দলের পরাজয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে আমি মনে করি না। এটা নেতিবাচক একটি প্রশ্ন। আমরা সব সময় মনে করি আমরা হারতে পারি, জিততে পারি। মাঠে আমরা সব সময় জয়ের জন্যেই খেলি। নেতিবাচক মনোভাব তৈরী হবে এরকম কোনো কিছু হয়ে যায়নি। সবাই জানে সব কিছু। সবাই জানে আমরা গতকাল (বুধবার) আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারিনি। জিম্বাবুয়ে আমাদের থেকে বেটার ক্রিকেট খেলেছে। তাদেরকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। টি-টোয়েন্টিতে সবাই স্ট্রং। আমার মনে হয় আমাদের বিশ্বাস আছে কালকে আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’
দলের টেকনিক্যাল সাইড নিয়ে সুজন বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি কোনো কিছু বলতে পারছি না। আমি টেকনিক্যাল কোনো কিছু বলতে পারছি না। টিম করে কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক। কে হলে ভালো হবে, কোনো পরিবর্তন আসবে কি না তা ওনারা চিন্তা করবে। আমার ক্রিকেট নলেজ ও অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আমরা সঠিক পথেই এগুচ্ছি। যেই দলই খেলুক না কেন সেরা কম্বিনেশন ঠিক করবেন তারা। ভালো খেলানোর চিন্তা করবেন তারা।’
অপরদিকে সিরিজের তৃতীয় আসরে জয়ী জিম্বাবুয়ের ম্যালকম ওয়ালার সংবাদ সম্মেলনে ফুরফুরে মেজাজে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আশা করি আমরা সিরিজ ড্র করতে পারব। সিরিজ ২-১ হওয়ায় পরের ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজকে যা করেছি, পরের ম্যাচে মাঠে নেমে আমরা ঠিক সেগুলোই করার চেষ্টা করব। এই ধরণেরই ক্রিকেট খেলা, সবকিছু ঠিকঠাক কার চেষ্টা করব। আশা করি আমরা সিরিজ ড্র করতে পারব।’
গতকাল জিম্বাবুয়ের কোচ ডেভ হোয়াটমোর বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ দলের বেশ কয়েকজন নিয়মিত ক্রিকেটার থাকছেন না পরের দুটি ম্যাচে। মুশফিক বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়দের একজন, মুস্তাফিজও ভালো করছে। এদের দলে না থাকাটা আমাদের জন্য সেরা সুযোগ। তাই আমরা এ সুযোগটাকে ভালোভাবেই কাজে লাগাতে চাই।’