স্পেনের হারের কারণ

0

75630377_spain_dejected_getty1ঢাকা: কারণটা যাই হোক দৃশ্যপটটা হৃদয় বিদারক। গ্রুপ পর্বেই স্বপ্নের সমাধি দেখে হতাশ ছিল স্পেনের মহাতারকারা। স্পেনের গত বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ইনিয়েস্তাতো চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না। লা রোজাদের সঙ্গে হয়ত কেঁদেছে সমগ্র স্পেনবাসী। বিষন্ন ছিল রিওডিনেরোর স্টেডিয়ামের একপাশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এমন বিদায়ের হৃদয়চেরা দৃশ্যপট উপহার দেবে ব্রাজিল বিশ্বকাপ তা কী কেউ ভেবেছিল কখনও? ফেভারিটদের তালিকায় সবাই এগিয়ে রাখছিলেন তারকা খচিত স্পেনকে। কিন্তু সেই ভবিষৎ বক্তাদের বোকা বানিয়ে ফুটবল বিধাতা রচনা করলেন স্পেনের করুণ বিদায় মঞ্চ। স্পেন ভক্তদের বিষয়টি মেনে নিতে কষ্ট হলেও সত্যি এটাই। আর সেই মঞ্চ তৈরির পেছনে কাজ করেছে অনেক কিছু।

অনেকে বলবেন, ডাচদের বিরুদ্ধে পাঁচ গোল খাওয়া স্পেনের পাঁজরে এমন ধাক্কা দিয়েছে যে, ওরা সেটা থেকে বেরোতে বেরোতেই বিশ্বকাপটা শেষ হয়ে গেল। মানি না। তুমি যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, এক ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়ে কুঁকড়ে যাবে কেন? চুয়ান্নর বিশ্বকাপে পুসকাসের হাঙ্গেরির কাছে জার্মানরা হেরেছিল ৩-৮। কিন্তু ওরাই শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। সে রকমই ভেবেছিলাম, শুক্রবারের হার অঘটন প্রমাণ করবে স্পেন। কিন্তু সেটা দেখাই গেল না। দ্বিতীয়ার্ধে তো চিলির আক্রমণের সামনে কাঁপতে দেখলাম রামোসদের রক্ষণকে।

অথচ স্পেন শুরুটা কিন্তু ৪-৩-৩ ছকে নিজেদের ছন্দেই করেছিল। কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রাক্তন কোচ মার্সেলো বিয়েলসার ছাত্র দশ মিনিট পর থেকেই হাই প্রেসিং গেম দিয়ে পেড়ে ফেললেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। চিলি কোচ শুরু করেন ৩-৫-২। চিলির দুই সাইড ব্যাক ইসলা আর মেনা পালা করে ওভারল্যাপে যাওয়ায় স্পেন ডিফেন্সিভ থার্ডে সব সময় একজন বাড়তি চিলিয়ান থাকছিল। এটাই ওদের বাড়তি সুবিধা দিল। সঙ্গে স্পেনের তিকিতাকার উৎসস্থল মিডল করিডরটাও লোক বাড়িয়ে ঘেঁটে দিল।

প্রেসিং ফুটবল ও চিলির খেলোয়াড়দের গতি আর কৌশলের বাইরেও এই পরাজয়ের কারণ হিসেবে সবার আগে যা উল্লেখ করতে হবে তা হল স্পেন শিবিরের ছোট ছোট ভুল। যা মূলত চিলির জন্য জয় তোলে নেয়ার জায়গাটা করে দেয়। স্পেনের সেরা গোলরক্ষক ক্যাসিয়াসেরও ভুল হল এদিন। চিলির দ্বিতীয় গোলটা করেন চার্লস আরানগুয়িজ জর্জ। ক্যাসিয়াসের ভুল না হলে প্রথমবারই বল ধরে রাখতে পারতেন তিনি। কিন্তু সেটা আর হল কই। বল ফিরিয়ে দেয়ার পর সেই বল পেয়ে স্পেনকে বিদীর্ণ করল এক চিলিয়ান। আর প্রথম গোলটিও হতো না যদি জাভি আলোনসো তার কাজটা ঠিকমত করতে পারতেন।

অবশ্য ফুটবল বিধাতা যখন ভাগ্য লেখেন তখন এসব বলে লাভ কী। ভাগ্য যদি সহায় হত তাহলে দিয়েগো কস্তা কিংবা বুসকেটস এমন সহজ সুযোগও কাজে লাগাতে পারল না কেন? বুসকুয়েটস তো ছোট  ডি বক্সের ভিতরে বল পেয়েও খালি জালে বল পাঠাতে পারননি। বল পাঠিয়েছেন বাইরে। এমন সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে পরাজয় না জয়ই পাবার কথা ছিল স্পেনের।

বলও বেশি সময় ধরে ছিল স্পেনের খেলোয়াড়দের পায়েই। সেটা হয়তো তাদের খেলার ধরনের জন্য। কিন্তু ৬৩ ভাগ বল দখল বজায়ে রাখার পাশাপাশি গোলে শটও যে প্রায় দ্বিগুন সংখ্যক ছিল স্পেনের এই ম্যাচে! তার মধ্যে ৬ বার নিশানার খুব কাছে দিয়ে পাঠিয়েছেন স্পেনিশ স্ট্রাইকাররা। তবে এদিন ভাগ্য সহায় হয়নি বিশ্বচ্যিাম্পিয়নদের। তবে অনেকেই এই ব্যাপারটাকে ভাগ্য না বলে ব্যর্থতাই বলবেন। তাই তিটিতাকা পদ্ধতির লা রোজাদের বিপক্ষে তাই চিলি দ্রুত আক্রমণে খেলার কৌশলের জয় হল এদিন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More