ঢাকা: হংকংয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার আগে তারা বলেছিল, বাংলাদেশকে হারানোর স্বপ্ন দেখেছে তারা। প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ তাদের কাছে হারল দুই উইকেটে। তবে হংকংয়ের এই জয় বাংলাদেশের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া ঠেকাতে পারেনি। নেপালের চেয়ে নিট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে এই ইনিংসের ৮০ বল পরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘সুপার টেন’ বা দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।
২৫ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম খেলায় মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় হংকং। বাংলাদেশ অল আউট হয়ে যায় ১০৮ রানে। তখন হিসাব ছিল, যদি হংকং ৮০ বলে ওই ১০৮ রান টপকে যায়, তাহলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা । আর তাতে একরকম আতঙ্কই ভর করে বাংলাদেশের সমর্থকদের মনে।
এ সময় খেলায় না থেকেও বাংলাদেশের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিল নেপাল। এর আগের দুই খেলায় বাংলাদেশের পয়েন্ট চার এবং নেপালের তিন খেলায় চার পয়েন্ট। হংকংয়ের বিপক্ষে ৮০ বলের সমীকরণ বাস্তব হয়ে গেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যেত নেপাল। যাক, শেস পর্যন্ত তা হয়নি। শেষ খেলায় হংকংয়ের কাছে হেরেও নিট রানরেটে এগিয়ে থাকায় পরবর্তী রাউন্ডে গেল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশের গ্রুপসঙ্গী ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সুপার টেনের ১ নম্বর গ্রুপে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে প্রথম পর্বের গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন দল। সেখানে এই মহূর্তে দুই খেলায় চার পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে আছে আয়ারল্যান্ড। সমসংখ্যক খেলায় জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডের পয়েন্ট দুই। শুক্রবার আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডের এবং জিম্বাবুয়ে নামবে আরব আমিরাতের বিপক্ষে।
বাংলাদেশের দেয়া ১০৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে হংকং তা পেরিয়ে যায় ১৯.৪ বলে, আট উইকেট হারিয়ে। ১৯.৩ ওভারের সময় তাদের প্রয়োজন ছিল তিন বলে এক রান। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে হংকংয়ের ব্যাটসম্যান হাসিব আমজাদ ছক্কা হাকিয়ে দলের স্কোর নিয়ে যান ১১৪তে। হংকং জিতে যায় দুই উইকেটে।
হংকংয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন মুনির দার। অন্যদের মধ্যে ইরফান আহমেদ ৩৪, নিজাকাত খান ১২, হাসিব আমজাদ অপরাজিত ১২ রান করেন। এ ছাড়া অ্যটকিংসন সাত, চ্যাপম্যান ৫. নাদিম আহমেদ অপরাজিত ২ ও বাবর হায়াত ১ রান করেন।
বাংলাদেশের সাকিব তিনটি, মাহমুদুল্লাহ দুটি এবং আল আমিন, রাজ্জাক ও সাব্বির একটি করে উইকেট নেন্।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন হংকংয়ের নাদিম আহমেদ।
এর আগে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে ১৬.৩ ওভারে ১০৮ রানে অল আউট হয়্। শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। প্রথম ওভারেই পতন ঘটে দুটি উইকেটের। দ্বিতীয় বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম এবং ষ্ষ্ঠ বলে ফিরে যান সাব্বির (২)। দলীয় রান তখন তিন।
দলের এই বিপর্যয় থেকে টেনে তোলেন সাকিব আর এনামুল। তারা ৪৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন। এনামুল ব্যক্তিগত ২৬ রানে আউট হন। দলীয় রান ৩ উইকেটে ৫১।
এরপর সাকিব ও মুশফিকের ৩৪ রানের জুটি দলকে আরো একটু এগিয়ে নেয়। দলীয় ৮৫ রানে সাকিব সাজঘরে ফেরেন। তার ব্যক্তিগত স্কোর ৩৪ রান। এরপর দ্বিতীয়বারের বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২৩ রান তুলতেই সব কটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮৯ রানে মুশফিক (২৩)আউট হওয়ার পর হুড়মুড় ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাটিং। যা একটু লড়ার চেষ্টা করেছেন নাসির (অপরাজিত ১২); কিন্তু আর কেউ তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। ওপাশে সতীর্থদের শুধু আসা-যাওয়া দেখেছেন নাসির। পরের তিনজনই-ফরহাদ রেজা, আবদুর রাজ্জাক ও রুবেল হোসেন্- শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে যান। ২১ বল বাকি থাকতেই ১০৮ রানে ঐল আউট বাংলাদেশ।
হংকংয়ের পক্ষে নাদিম আহমেদ চারটি, নিজাকাত খান তিনটি তানভির আফজার দুটি ও ইরফান আহমমদ একটি উইকেট নেন।