ঝাল বা মরিচ আমাদের কাছে অতিপরিচিত; যা কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই আমরা ব্যবহার করি। রান্না করতে তরকারিতে ঝাল বা মরিচ দিই, তবে এর গুণ সম্পর্কে কম জানি। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই মরিচ চাষ হয়। তবে প্রধানত বগুড়া ও কুমিল্লায় বেশি উৎপাদিত হয়। এ ছাড়া উষ্ণ অঞ্চলে মরিচ ভালো হয়। বাংলাদেশ ছাড়া এশিয়ার সব দেশে, আফ্রিকা, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, দণি ইউরোপ এবং অন্যান্য নাতিশীতোষ্ণ দেশে মরিচ ভালো হয়। তবে প্রধান মরিচ উৎপাদক দেশ হলো ভারত, নাইজেরিয়া, মেক্সিকো, চীন, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া ও জাপান। তরকারি রান্নার প্রধান উপকরণ এই ঝাল। কাঁচামরিচই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তরকারি বা শাকসবজি রান্নায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কাঁচামরিচের পুষ্টিগুণ : (প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচামরিচে থাকে)
মিনারেল ১.০, ফাইবার ৬.৮, কে ক্যালোরি ১৩০, প্রোটিন ১.৬, ফ্যাট ০.১, কার্ব হাই ২৩.৭, ক্যালসিয়াম ১১.০০, আয়রন ১.২, ভিটা বি-১ ০.১৭, ভিটা বি-২ ০.১৬, ভিটা সি ১২ মিলিগ্রাম, ভিটা এ (ক্যারো) ২৩ ৪০ মিলিগ্রাম
শুকনা মরিচে
আর্দ্রতা ১০, লৌহ ২.৩, মিনারেল ৬.১, ফাইবার ৩০.১, কে ক্যালো ২৪৬, প্রোটিন ১৬.৯, ফ্যাট ৬.২, কার্ব হাই ৩১৬, ক্যালসিয়াম ১৬০, ভিটা বি-১ ০.৯৩, ভিটা বি-২ ০.৪৩, ভিটা সি .৫০, ক্যারোটিন ৩৪৫
ঝালে ঠোঁট-জিহ্বা জ্বলে। তবে ক্ষুধা বাড়ায়। হজমে সহায়ক, ডায়ারিয়া প্রতিরোধক এবং শরীরের জ্বালা-যন্ত্রণা দূর করে। স্বাদে ঝাল হলেও শ্লেষ্মা বের করে দেয়, মাথাধরা ছাড়ে, মাংসপেশির ব্যথা প্রশমিত করে, স্বল্প বিরাম জ্বরে উপকারী, বাত ও অজীর্ণ ভালো হয়। দশ গ্রেইন শুকনা মরিচের গুঁড়া এক আউন্স পানিতে মিশিয়ে দৈনিক তিনবার খেলে ডেলিরিয়াম ভালো হয়। সামান্য ঝালের গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে গড়গড়া করলে গলা খুসখুসি বন্ধ হয়। মরিচের ফুল, পাতা ও গাছের ছালও হারবাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কবিরাজ ও হেকিমদের পরামর্শ মোতাবেক পাতা ও বাকল ব্যবহারে যক্ষ্মা, পক্ষাঘাত ও ফোড়া ফাটানো যায়। গনোরিয়া ও সিফিলিসও ভালো হতে পারে। ঝাল বা মরিচ ওরাশ সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম বলে বিশেষজ্ঞরা বলেন। মরিচের মূলও নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক।