সুন্দরের প্রতি মানুষের আকর্ষণের বিষয়টি একটি সহজাত প্রবৃত্তি। নারী-পুরুষ উভয়েই সুন্দরের প্রতি আকর্ষন বোধ করেন আর সেটা খুবই স্বাভাবিক এক ব্যাপার। তবে সৌন্দর্যের প্রতি এই আকর্ষনের সামনে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই যেন বুদ্ধির গুরুত্ব ফিকে হয়ে যায়। বিশেষ করে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত সমাজেই পুরুষেরা নিজের প্রেমিকা কিংবা স্ত্রী হিসেবে একজন সুন্দরী নারীকেই কল্পনা করে থাকেন, একজন গুণবতী অসুন্দর নারী কখনো তাদের কল্পনায় স্থান পায় না। নিজের যোগ্যতা কিংবা চেহারা যেমনই হোক না কেন, স্ত্রী হিসেবে একজন সুন্দরী নারী সকল পুরুষের চাই-ই চাই।
বিষয়টা আরো অনেক বেশি গুরুতর হয়ে দাঁড়ায়, যখন সৌন্দর্যে ঘাটতি থাকলে একজন নারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা বুদ্ধিমত্তারও কোনো মূল্য থাকে না। সমস্ত ক্ষেত্রেই যেন নিজের গুণ, শিক্ষা কিংবা সুন্দর মনটার চাইতে গায়ের রঙ, রূপ ও দৈহিক সৌন্দর্যই প্রধান হয়ে ওঠে। ফলে সমাজে পদে পদে অবহেলার শিকার হতে হয় অনেক নারীকেই। নিজের চারপাশে তাকালেই দেখবেন, এমন অনেক গুণবতী নারী আছেন যাদের বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি কেবল রূপের ঘাটতির জন্য। মানুষটি হয়তো দারুণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন একজন ভালো মনের মানুষ। কিন্তু এই সমাজ কেবল তার রূপের ঘাটতিটাই দেখেছে, তার মন নয়।
মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, যদি একজন “বুদ্ধিমতী” সুন্দরী নারী ও একজন “বুদ্ধিহীন সুন্দরী” নারীর মাঝে বেছে নিতে বলা হয়,তাহলেও কিন্তু বেশিরভাগ পুরুষেরা বুদ্ধিমতী নারীকে বাদ দিয়ে বুদ্ধিহীন সুন্দরী নারীটিকেই বেছে নেন! স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন পুরুষেরা পছন্দ করেন বুদ্ধিহীন সুন্দরী নারী? আসুন জেনে নেয়া যাক ৫টি কারণ।
কেবল দৈহিক সৌন্দর্যের প্রতি মোহ
যে সকল পুরুষদের কাছে মনের সম্পর্কের চাইতে শারীরিক সম্পর্কটাই বেশি জরুরি,মূলত তারাই বুদ্ধিহীন সুন্দরী নারীদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। কেননা এসব প্রেমে কেবল শরীরের সম্পর্কটাই গুরুত্ব পায়। সুন্দরী নারীদের প্রতি পুরুষদের আছে সহজাত মানসিক ও দৈহিক আকর্ষন। স্বভাবতই তারা সুন্দর নারীর সঙ্গ পছন্দ করেন। এমনকি এই আকর্ষণ এতোটাই প্রবল যে নিজের স্ত্রী/প্রেমিকা সঙ্গে থাকলেও পাশ দিয়ে সুন্দরী নারী হেঁটে গেলে সেদিকে মনের অজান্তেই তাকিয়ে থাকেন অধিকাংশ পুরুষ।
সুন্দরী নারীদের প্রতি এই দূনির্বার আকর্ষনের কারণেই পুরুষরা চায় তাদের স্ত্রীও নজর কাড়া সুন্দরী হোক। আর তাই বিয়ে করার ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা অন্যান্য গুণাবলীর চাইতে সৌন্দর্যকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তারা। বেশিরভাগ পুরুষের কাছেই স্ত্রী/প্রেমিকা বুদ্ধিহীন হলে কিছু যায় আসে না, কেবল সুন্দরী হলেই তারা খুশি।
নিজেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়া
অবশ্যই একজন নারী তার প্রেমিক বা স্বামীকে ভালোবাসবেন। কিন্তু কাউকে ভালোবাসার অর্থ এই নয় যে জীবনের সকল তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়টি নিয়েও অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়া। স্বল্প বুদ্ধি সম্পন্ন নারীদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি প্রবল। তারা সমস্ত বিষয়েই স্বামী বা প্রেমিকের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল হয়ে থাকেন। সমস্ত ব্যাপারে পুরুষটির মতামতকেই শেষ কথা হিসেবে ধরে নেন, কেননা আত্মনির্ভর হওয়ার মতন যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা তাদের নেই। ফলে পুরুষটি নিজেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে থাকেন। বুদ্ধিহীন সুন্দরী নারীদের সংস্পর্শে নিজেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় বলেই পুরুষদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে তারা।
আধিপত্য বিস্তার করতে চাওয়া
স্বল্প বুদ্ধি সম্পন্ন সুন্দরী নারী বিয়ে করতে চাওয়ার পেছনে আরেকটি মূখ্য কারণ হলো সহজে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে পারা। নিজের বুদ্ধিমত্তার চাইতে কিছুটা কম যোগ্যতা ও কম বুদ্ধি সম্পন্ন নারীর সাথে সংসার করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে পুরুষরা। কেননা এতে সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে রাখা সম্ভব হয়, সংসারে বা সম্পর্কে নিজের কথাটাই একমাত্র সিধান্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়। বুদ্ধিহীন সুন্দরী নারীরা অন্ধের মতন স্বামী বা প্রেমিকের সব কথা মেনে নেয়, সকল বিষয়ে যথেষ্ট মাথা ঘামানোর মতন বুদ্ধিমত্তা তাদের থাকে না।
প্রতারণা করা সহজ
ঘরে সুন্দরী বুদ্ধিহীন স্ত্রী রেখে বাইরে প্রতারণা করা বেশ সহজ। নিজের চাইতে কম শিক্ষিত ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন নারীকে বিয়ে করার পর কিছুদিনের মধ্যেই বেশ একঘেয়েমীতে ভুগতে শুরু করেন বেশিরভাগ পুরুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মন মানসিকতা ও চিন্তাধারা মেলাতে পারেন না তারা। অনেক সময় “বোর” হয়ে যান শারীরিক আকর্ষণ কমতে শুরু করলে। তখন নিজের স্ত্রীর সাথে প্রতারণার মত ঘৃনিত কাজ করেন অনেকেই, স্ত্রীর অজান্তেই এ ধরনের অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। আর বিষয়টি অদ্ভুত হলেও সত্যি যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরকীয়া করার সময় বুদ্ধিমতী ও সুযোগ্য নারীদেরকেই বেছে নেন তারা। পরকীয়ার সময় সৌন্দর্যের চাইতে বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বকেই প্রাধান্য দেন তখন।
সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি
সুন্দরী নারী বিয়ে করার পেছনে আকাঙ্ক্ষার আরেকটি মূল কারণ হলো সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি। বন্ধু মহলে নিজের সুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া কিংবা পরিবারের বিভিন্ন দাওয়াতে সুন্দরী বউ নিয়ে তাক লাগিয়ে দিতে পছন্দ করেন পুরুষরা। সেই সঙ্গে যদি স্ত্রী কিছুটা কম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন হন, তাহলে তাকে নিয়ন্ত্রণও করা যায় নিজের ইচ্ছে মত। নিজের সুন্দরী স্ত্রীকে শোপিসের মত সাজিয়ে রাখতেই বেশি পছন্দ করেন অধিকাংশ পুরুষ, আর একজন বুদ্ধিমতী নারী নিজের এই অপমান কখনোই মেনে নিতে রাজি থাকবেন না। অনেক পুরুষই চান তাদের স্ত্রী একজন অত্যন্ত সুন্দরী নারী হবেন,কিন্তু তার নিজস্ব কোন মতামত থাকবে না এবং সে থাকবে পুরোপুরি স্বামীর নিয়ন্ত্রণে। এতেই নিজের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন অনেক পুরুষ। আর সেজন্যই তাদের আগ্রহ স্বল্প বুদ্ধির সুন্দরী নারীদের প্রতি।
এম এস