বেকারদের মগজ ধোলাইয়ে সুন্দরী নারী

0

beautyঢাকা: প্রথমে বিভিন্ন গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল কোম্পানির নাম করে লোভনীয় অফারে পত্রিকায় দেয়া হতো চাকরির বিজ্ঞাপন। এরপর চাকরিপ্রার্থীরা অফিসে এলে সুন্দরী নারী দিয়ে তাদের দেওয়া হতো অভ্যর্থনা। অভ্যর্থনার পরই এই সুন্দরীরা তাদের মগজ ধোলাই শুরু করতো।

চাকরি হওয়া সময়ের ব্যাপার- এই প্রলোভন দেখিয়ে ১৫ দিনের ট্রেনিং বাবদ পদ অনুযায়ী প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো তিন থেকে ৬০ হাজার টাকা। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর কয়েকদিন তাদের ট্রেনিংও করাতো। এরপর সুযোগ বুঝে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হতো।

মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় দুইটি অফিস ভাড়া নিয়ে একটি চক্র এই অভিনব পদ্ধতিতে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাত করে আসছে। এদের মূল টার্গেট শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ।

সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে চক্রটির মূল হোতা মোতালেব হোসেন সবুজসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মতিঝিলের রহমান ম্যানশনের পঞ্চম তলায় ও ভূঁইয়া ম্যানশনের সপ্তম তলায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ২০ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের অভিযানে উদ্ধার ভুক্তভোগী সাগর হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বললে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনার বিশ্বাস করতেই হবে তাদের কথা। আর সুন্দরী নারীরা যেভাবে ভাইয়া ভাইয়া বলে চাকরি সম্পর্কে বলবে, আপনার মনে হবে জমি বিক্রি করে হলেও এখানে ট্রেনিং করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসি। তাদের কথা বিশ্বাস করে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি ট্রেনিং করার জন্য। আজকে আরো ৬ হাজার টাকা দিতে এসেছিলাম। এসেই দেখি র‌্যাব এখানে অভিযান চালাচ্ছে।’

শুধু সাগরের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল। আর পাশে থাকা আনোয়ার, পারভেজ ও মনির সাগরের কথার সঙ্গে সায় দিচ্ছিলেন। তারাও বলেন, সুন্দরী নারীদের সুন্দর সুন্দর কথায় তারা ট্রেনিং করতে সম্মত হয়েছেন। এখন বুঝতে পারছেন নিজেরা প্রতারিত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে র‌্যাব-৩ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে এই প্রতারক চক্রটি। বিভিন্ন গার্মেন্টসে চাকরি দেবে বলে এখানে ট্রেনিং করানো হতো। তরে যারা এখানে ট্রেনিং করতে আসতো তাদের এখানেই রাখা হতো। কিছুদিন নামমাত্র ট্রেনিং করানো পর তাদের এখান থেকে বের করে দিতো।

তিনি আরও বলেন, এই চক্রটির ব্যবসার কোনো লাইসেন্স ও নিবন্ধন নেই। সবুজ ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More