‘আমার মনে হচ্ছে, একে একে আমাদের হত্যা করা হবে।’ রাজধানীর গুলশানে স্পানিশ রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ভারতীয় তরুণী তারিশা জাইন জিম্মি অবস্থায় তার বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে এ কথা বলেছিলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৬টার কিছু আগে তারিশা জাইনের মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে তিনি তার বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে সমর্থ হন। তারিশা জাইনের বাবা সঞ্জীব জাইন গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর অদূরে তার মেয়ের জন্য সারা রাত অপেক্ষায় ছিলেন। রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীদের হামলার খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে আরো বলা হয়েছে, ফারাজ আয়াজ হোসাইন ও অবিন্ত কবির নামে দুজন বন্ধুর সঙ্গে টয়লেটে লুকিয়ে ছিলেন তারিশা জাইন। তখন টয়লেটের দরজার ওপাশে গুলি চলছিল। মুঠোফোনে তারিশা তার বাবাকে জানান, ‘সন্ত্রাসীরা রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়েছে।’ রেস্টুরেন্টের ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনা দেন তিনি।
সঞ্জীব জাইন তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভারতের ফিরোজাবাদে ছুটিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তার মেয়ে তারিশা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করতেন। ইন্টার্নশিপ করতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়া আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে ফিরোজাবাদে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। হলি আর্টিজানে থাকা অবস্থায় তারিশা তার বাবাকে আরো বলেছিলেন, ‘আমি খুবই আতঙ্কিত। ‘সবাইকে একে একে হত্যা করা হচ্ছে, জীবিত অবস্থায় ফিরতে পারব কিনা জানি না’ ১ জুলাই শুক্রবার রাতে ঢাকার গুলশানে স্পানিশ রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। সন্ত্রাসীরা ২০ জিম্মিকে হত্যা করে। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে শেষ হয় ১২ ঘণ্টার জিম্মি সংকট। এ সময় নিহত হয় ছয় হামলাকারী। একজনকে সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।