ব্রাসেলসঃ চলমান রাজনৈতিক সংকট ও ঢাকার গুলশান এবং কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসছে ইউরোপিয় পার্লামেন্ট । আগামীকাল সোমবার ব্রাসেলসে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।[ads1]
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে আইএস জড়িত আছে কি-না, তার পাশাপাশি সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। কূটনৈতিক সূত্রটি জানিয়েছে, বৈঠকে বিশেষ এজেন্ডা হিসেবে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। বিশেষ করে জঙ্গি হামলা ও নিরাপত্তা বিষয়টি আলোচিত হবে। দেশে যে জঙ্গি হামলা হয়েছে তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সম্পৃক্ততা রয়েছে রয়েছে কি-না, সে বিষয়েও আলোচনা। পর্যালোচনা করে দেখা হবে বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি।
এজন্য ঢাকায় থাকা তাদের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করেছে এ বিষয়ে দায়িত্বে থাকা ইইউর রাজনৈতিক শাখার কর্মকর্তারা। সূত্র আরো জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় মানব পাচার নিয়েও আলোচনা হবে এবারের বৈঠকে। সেখানেও নাম আসতে পারে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের যেকোনো সংকটকালেই তৎপরতা দেখায় ইউরোপিয় ইউনিয়ন। রাজনৈতিক সংকট সমাধানে দিয়ে আসছে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব। সরকারের নীতি নির্ধারক ও প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছে ইইউ প্রতিনিধি দল।[ads2]
বিভিন্ন সময়ে জোটভুক্ত এই দেশগুলোর পক্ষ থেক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করেছেন। সংকট সমাধান করতে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুরত্ব মেটানোর চেষ্টা করেছে। দিয়ে আসছেন বিবৃতি। সমঝোতার জন্য করেছে দূতিয়ালি। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশ্বনেতারা। এই নির্বাচন বর্জন করেছিলো প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোট। এখনো পূণঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে তারা। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কবলে পড়ে দেশ।
নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অর্থনীতিতে। বিনিয়োগে নেমে আসে স্থবিরতা। বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগের সেই ধকল থেকে এখনো উতরে উঠতে পারেনি দেশের অর্থনীতি। সংকটে পড়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত। এই সংকট কাটিয়ে উঠতেই তারা উঠেপড়ে নেমেছিলো মাঠে। এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন। সেই ধকল সামাল না দিতেই ঢাকার অভিজাত ও কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের আর্টিজান নামক রেস্তোরাঁয় হামলা করেছে জঙ্গিরা। এ হামলায় ইতালী, জাপান, ভারত ও আমেরিকার নাগরিকসহ ২৮ জন নিহত হয়েছে।[ads1]
বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন ১৭ জন। বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক ও হামলাকারি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। হামলার দায় স্বীকার করে বার্তা দিয়েছিলো আইএস। হামলার শুরু থেকে পরেরদিন ভোর পর্যন্ত তাদের দেওয়া তথ্যই অনেকটা হুবহু মিলে যায়। উদ্ধার অভিযানে হামলাকারী জঙ্গিদের সবাই নিহত হয়। স্পর্শকাতর এলাকা হলো ঢাকার কূটনৈতিক পাড়া হিসেবে পরিচিত গুলশান। সেই বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা ভাবিয়ে তোলে গোটা বিশ্বকে। প্রশ্ন উঠে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়ে।
এর রেশ না কাটতেই ঈদের দিন শোলাকিয়ায় ঘটে আরেক হামলা। যদিও শোলাকিয়ার হামলার পূর্বে আইএস ভিডিও বার্তায় বলেছিলো, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এধরনের হামলা আরো হবে। জঙ্গি হামলা বাংলাদেশ সংকটে নতুন মাত্রা যোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে ইইউ’র বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি পিয়েরে মায়েদুন সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ইইউ’র দেশ থেকে প্রতিনিধিরা আসতে পারেন। প্রতিনিধি দল আসার আগেই এ বৈঠক হচ্ছে। বৈঠক হওয়ার পরেই বুঝা যেতে পারে বাংলাদেশ বিষয়ে ইইউ নতুন কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কি-না। এর আগের ইইউ পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে এক এমপি প্রস্তাব করেছিলেন, বাংলাদেশের উপর ইইউ’র পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করার। তখন সেই প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি পার্লামেন্টে।[ads2]