শহীদ হওয়ার মানসিকতা নিয়ে ইরাক সিরিয়ায় দখলদারিত্বে কাজে থাকা ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গীদের সাথে যোগ দিয়েছে স্কটিশ এক তরুনী। ইতিমধ্যে সে বিয়েও করেছে একজন আইএস যোদ্ধাকে। আ্ইএস জঙ্গীদের তৎপরতা শুরু হওয়ার পর থেকেই পশ্চিমা অনেক তরুনী ওই ভয়াবহ মিশনে যোগ দিচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আকসা মাহমুদ নামে ওই তরুনী গত নভেম্বরে গ্লাসগো থেকে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে তুরস্ক সীমান্ত হতে তার পরিবারকে তার ওই জঙ্গীদলে যোগদানের কথা জানান। তখন থেকেই সে নিখোঁজ। তবে তার পরিবারের সাথে এসএমএস বিনিময় হয় মাঝে মাঝে।
আকসার বাবা মুজাফফর মাহমুদ সিএনএনকে কান্নাভরা কন্ঠে তার মেয়ের একটি এসএমএস পড়ে শোনান। যেখানে লেখা আছে, “তোমার সাথে আমার কেয়ামতের দিন দেখা হবে। আমি তোমার হাত ধরে তোমাকে বেহেশতে নিয়ে যাব”, এই ম্যাসেজের মাধ্যমে সে শহীদ হওয়ার ইংগিত করেছে বলে আকসার পিতা জানান।
কয়েক সপ্তাহ আগে আকসার মা খালিদা মাহমুদ আকসাকে উদ্দেশ্য করে এসএমএস পাঠান, যেখানে তিনি লেখেন, “আকসা, আমার প্রিয় সন্তান, তুমি ফিরে আস। আমি তোমার অভাব আমাকে অসুস্থ করে ফেলেছে। তোমার আল্লাহর দোহাই তুমি ফিরে আস। আমি তোমাকে ভালবাসি।”
রেডিওগ্রাফী নিয়ে পড়াশোনা করা ২০ বছর বয়সি আকসা মাহমুদের মতো অনেক তরুনী সামাজিক গণমাধ্যম টুইটার এবং ফেসবুকের মাধ্যমে আইএস জঙ্গীদের কর্মকান্ডে আকৃষ্ট হচ্ছে। আকসাও টুইটারে উম্মে লাইথ নামে একটি ‘ফেইক’ একাউন্ট দিয়ে আ্ইএস জঙ্গীদের প্রচারণা করতো। একাউন্টটি মুছে দেওয়ার আগে শেষ স্ট্যাটাসটি ছিল, “তুমি যদি যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু করতে না পার, তবে নিজের মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রকে নিয়ে আস”।
বিষয়টি নিয়ে স্কটল্যান্ডের কিংস কলেজের জঙ্গীবাদ বিষয়ক গবেষক মেলাইন স্মিথের জানিয়েছেন, আইএস জঙ্গীদের তৎপরতা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০০ এর অধিক তরুনী ওই ভয়াবহ কর্মকান্ডে নিজের যুক্ত করেছেন।
সামাজিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন একাউন্ট এবং পোষ্ট দেখে মেলাইন জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে প্রায় ২১ জন ব্রিটিশ নারী ওই জঙ্গীদের সাথে যোগ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ‘জিহাদ আল নিকা’ বা ‘যৌন জিহাদ’ এর ধারণা চালু করেন কট্টরপন্থী মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আরেফি। তখন তিনি নারীদের জঙ্গী যোদ্ধাদের ‘যৌন সেবা’ দানের আহ্বান জানান। যাতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে যেসব যোদ্ধা লড়ছেন তারা এর মাধ্যমে প্রেরণা পাবেন। এরপরে গত জুনে এই জিহাদ আল নিকা বা যৌন জিহাদের ডাক দেয়া হয়েছিল আইএস-এর তরফ থেকে। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে মালয়েশিয়াই, অস্ট্রেলিয়া ও বৃটেনসহ পশ্চিমা দেশগুলো থেকে নারীরা মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন।
Prev Post