তবে কি আত্মহত্যা করেছেন মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানের ক্যাপ্টেন জাহারি আহমদ শাহ! থাইল্যান্ড ভারত মহাসাগরে কমপক্ষে ৩০০ ভাসমান জিনিস দেখতে পেয়েছে। এমন দাবি করেছেন থাইল্যান্ডের মহাকাশ প্রযুক্তি উন্নয়ন বিষয়ক এজেন্সির প্রধান আনন্দ স্নিদভোঙ্গস। ধারণা করা হচ্ছে এগুলো ওই বিমানের। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, চীন এমন জিনিস ভাসতে দেখে সমুদ্রে।
এ থেকে এখন ধরে নেয়া হচ্ছে ওই বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরেই বিধ্বস্ত হয়েছে। এমনটা ধরে নিয়ে বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে এখন। তবে ব্ল্যাক বক্সের স্থায়িত্ব খুব অল্প।
মাত্র ৩০ দিনের মতো এর ব্যাটারি কার্যকর থাকে। ওই ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা না গেলে এই বিমান নিখোঁজ হওয়ার কোন কূল-কিনারা পাওয়া যাবে না। ক্রানফিল্ড ইউনিভার্সিটির বিমান চলাচল বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড বেরি বলেছেন, ওই ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ওদিকে প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন ক্যাপ্টেন জাহারি আহমদ শাহ-এর ছেলে আহমেদ শেঠ (২৬)। তিনি বলেছেন, ওই বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার জন্য তার পিতা দায়ী নন।
থাইল্যান্ড গতকাল বলেছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে ২৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে সমুদ্রের ভিতরে দেখতে পেয়েছে ভাসমান বস্তু। এগুলোর আকার দুই থেকে ১৫ মিটার। থাইল্যান্ড গতকাল যেসব ছবি প্রকাশ করেছে তা ধারণ করা হয় ২৩শে মার্চ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্ল্যাক বক্সে যেসব ডাটা থাকার কথা তা মুছে ফেলা হয়ে থাকতে পারে। ওদিকে যে ছবিগুলো থাইল্যান্ড প্রকাশ করেছে তা সেদেশের জিও ইনফরম্যাটিকস অ্যান্ড স্পেস টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি ধারণ করে। এর আগে ভারত মহাসাগর থেকে এমন ছবি ধারণ করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও ফরাসি উপগ্রহ। আনন্দ স্নিদভোঙ্গস বলেছেন, যেসব ভাসমান জিনিসের ছবি পেয়েছি আমরা বলছি না যে, সেটা ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এর। এখন পর্যন্ত এগুলোকে শুধু ভাসমান জিনিস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখনও ৭৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে অনেক জাহাজ। রয়েল কানাডিয়ান এয়ারফোর্সের ক্যাপ্টেন মাইক ম্যাকসোয়িন বলেছেন, আমরা মাত্র ৫০০ ফুট উড়ে যেতে পেরেছি। কিন্তু দৃষ্টিসীমা ২০০ ফুটের বেশি নয়।
আমরা পানির ভিতরে ২০০ ফুটের বেশি দেখতে পারি নি। আমরা এমন পরিস্থিতিতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছি। উদ্ধার অভিযানের এক মুখপাত্র স্যাম কার্ডওয়েল বলেছেন, ইউএস নেভি পি-৮ সাইডন জাপানি পি-৩ ওরিয়ন ও গালফ স্ট্রিম জেট বাদে অন্য সব বিমান গতকাল পার্থ থেকে ২৫০০ কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারপরই উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। ওদিকে এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা উপগ্রহের ছবির উপর ভিত্তি করে নিশ্চিতভাবে ধরে নিয়েছেন যে, বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর ভিত্তিতে গতকাল মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস দেশের বড় বড় পত্রিকাগুলোতে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে পূর্ণ পৃষ্ঠার শোকবার্তা প্রকাশ করেছে।
নিউ স্ট্রেইট টাইমস-এ এমন একটি শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ওই বিমানের ২৩৯ আরোহী, তাদের স্বজন, বন্ধু ও সহকর্মীদের প্রতি আমরা আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। এ বিষয়ে আমাদের শোক ও বেদনা প্রকাশের কোন ভাষা নেই। ওদিকে বিমানটির সম্ভাব্য এতগুলো নমুনা পাওয়ার পর যখন সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে ক্যাপ্টেন জাহারি আহমদ শাহকে কেন্দ্র করে। বিমানে উড্ডয়নের আগে তার মানসিক অবস্থা কি তা জানার জন্য গোয়েন্দারা কাজ করছেন।