ঢাকা: ভোক্তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ বা পচা মাংস খাইয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাস্টফুড চেইন কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন (কেএফসি), পিৎজা হাট, ম্যাকডোনাল্ডস-সহ বেশ কিছু প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান। আর তাদের এ পচা বা বাসি মাংস সরবরাহ করছে চীনের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওএসআই গ্রুপের মালিকানাধীন সাংহাই হুসি ফুড কোম্পানি লিমিটেড।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ পচা মাংস কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার হুসি ফুডের পাঁচ কর্মকর্তাকে আটক করেছে চীনা পুলিশ। এই অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে হুসি’র কোয়ালিটি ম্যানেজারকেও আটক করা হয়েছে।
চীনের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা (সিএফএসএ) তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্তকারী দল হুসি কর্মকর্তাদের বেআইনি কার্যক্রমের প্রমাণ পেয়েছে।
তবে সেটা কী ধরনের প্রমাণ এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
সিএফএসএ‘র সাংহাই ব্যুরোর উপ-পরিচালক জু ঝেংজুয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, হুসি যে খাদ্য নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে কিছু কর্মকাণ্ড করেছে তার প্রমাণ পেয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা।
অবশ্য এ অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এ ব্যাপারে কিছু জানাননি সিএফএসএ কর্মকর্তা।
চীনা সংবাদ মাধ্যমগুলো চলছে, হুসি’র সঙ্গে কেএফসি ও ম্যাকডোনাল্ডসের চীন শাখার এ কেলেঙ্কারি অন্য ফাস্টফুড চেইনগুলোকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার কেএফসি-ম্যাকডোনাল্ডস, পিৎজা হাট-সহ হুসি থেকে মাংস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পাপা জন’স, স্টারবাকস, বার্গার কিং ও ডিকসের মতো ফাস্টফুড প্রতিষ্ঠানগুলো।
পচা মাংস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জাপানেও। হুসির এই কেলেঙ্কারি নিশ্চিত হওয়ার পর জাপানের ম্যাকডোনাল্ডস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা চিকেন নাজেটসের জন্য হুসি থেকে যা আমদানি করতেন সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বুধবার এক বিবৃতিতে চীনের রাষ্ট্রীয় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বিভাগ জানায়, অভিযান চালিয়ে হুসি’র ১৬০ টন কাঁচামাল ও ১১০০ টন প্রস্তুত পণ্য জব্ধ করেছে তদন্তকারী দল।
মূলত রোববার সাংহাইয়ের ড্রাগন টেলিভিশনে হুসি’র পচা মাংস সরবরাহ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হলেই হইচই পড়ে যায়
প্রতিবেদনে দেখানো হয়, হুসির কর্মীরা মেয়াদোত্তীর্ণ গরুর মাংস ও মুরগির মাংসকে পুনরায় প্যাকেটজাত করে নতুন মেয়াদের সিল মেরে দিচ্ছেন।
হুসি স্বীকার করেছে, তাদের এসব মেয়াদোত্তীর্ণ মাংস কেএফসি, পিৎজা হাট ও ম্যাকডোনাল্ডসের কাছেও সরবরাহ করা হতো।
হুসির কেয়ালিটি বিভাগের ব্যবস্থাপক ঝেং হুই স্বীকার করে বলেন, কোম্পানির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অলিখিত অনুমতি নিয়েই বেশ ক’বছর ধরে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ মাংস সরবরাহ করা হচ্ছিল।
এমন কেলেঙ্কারি ছড়ানোর পর কেএফসি, পিৎজা হাট বা ম্যাকডোনাল্ডস কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।