গরুর মাংস আছে এমন সন্দেহে ফের ভারতে মুসলিম দম্পত্তির উপর হামলা

0

beef-banএক মুসলিম দম্পত্তির উপর হামলা চালানোর অভিযোগে একটি হিন্দু সমিতির কয়েক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ভারতের মধ্য প্রদেশের পুলিশ। ব্যাগে গরুর মাংস নেয়ার সন্দেহে ওই দম্পত্তির উপর হামলা চালায় ওই গ্রুপটি।

ব্যাগে কোনো গরুর মাংস ছিল না বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ওই দম্পত্তি।

এর আগে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বাড়িতে গোমাংস রাখা আছে এই মিথ্যা রটনা ছড়িয়ে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

মধ্যপ্রদেশের হারদা জেলার বাসিন্দা নাসিমা বানো আর তার স্বামী মুহম্মদ হুসেইন অভিযোগ করেছেন, গোরক্ষক সমিতি নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা গোমাংস খোঁজার নামে তাদেরকে হেনস্থা করেছে।

ওই দম্পতি যখন ট্রেনে করে এক স্টেশন থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছিলেন, তখন খিরকিয়া নামের একটি স্টেশনে ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা উঠে ওই দম্পতিকে বলে যে তাদের কাছে খবর আছে কেউ গোমাংস নিয়ে ট্রেনে উঠেছেন।

তারপর সবার ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে তারা। এই দম্পতির ব্যাগও তল্লাশি করা হয়, কিন্তু তারপরেই শুরু হয় হেনস্থা।

হুসেইন বিবিসিকে টেলিফোনে বলেছেন, প্রত্যেক যাত্রীর ব্যাগ বা সুটকেসে তল্লাশি করছিল ওরা। সব মালপত্র বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। তার স্ত্রী প্রতিবাদ করতে গেলেই স্ত্রীর হাত ধরে টানতে থাকে অভিযুক্তরা।

তিনি বলেন, ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় তার স্ত্রীকে। কিছু ব্যাগ বাইরেও ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

গোমাংস অবশ্য পায় নি ওই গোরক্ষক সমিতির সদস্যরা। দেখা যায় যে ওই দম্পতির কাছে যা রয়েছে তা হল মহিষের মাংস।

কিন্তু শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে পুলিশ ওই সমিতির সদস্যদের গ্রেফতার করেছে।

হারদার পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট রামবাবু শর্মা বিবিসিকে বলেন, কুশীনগর এক্সপ্রেসে কিছু মাংস আটক করা হয়েছিল আর তা নিয়ে বিবাদ শুরু হয়।

তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এলাকায় কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নেই এই ব্যাপার নিয়ে।

ভারতে গত কয়েক মাস ধরেই গোমাংস নিয়ে নতুন করে বিবাদ সৃষ্টি করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো।

বাড়িতে গোমাংস রয়েছে, এই খবর রটিয়ে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে এক মুসলমান ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

এই ঘটনা চূড়ান্ত ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি করেছে – এই অভিযোগ তুলে দেশের বহু কবি, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী তাদের সরকারি পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে থাকেন।

তবে বুদ্ধিজীবীদের সেই প্রতিবাদে বিশেষ কান না দিয়ে একের পর এক বি জে পি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের সরকারগুলোও গোমাংস বিক্রি ও খাওয়া নিষিদ্ধ করতে থাকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More