আদরের ছেলেকে অপহরণ করে গাড়িতে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে অপহরণকারীরা। আর সন্তানকে উদ্ধারের জন্য বাবা গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছেন। একসময় জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে চালকের ঘাড় চেপে ধরেন। কিন্তু চালক গাড়ি থামাচ্ছে না। অপহরণকারীদের ছুরিকাঘাতে তাঁর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।
এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়। ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপালে এক বাবা তাঁর ছেলেকে উদ্ধারে এভাবেই জীবনকে বাজি রাখেন।
দীর্ঘ দুই ঘণ্টা এ অবস্থায় দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার পর তিনি ছেলেকে উদ্ধার করেন। আর অপহরণকারীদের যেতে হয়েছে শ্রীঘরে।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভোপালের কোয়াম্বত্তুর থেকে বেশ খানিকটা দূরে নরসিংহনাইকেনপালয়মে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন সুরেশ। তিনি ছুরি ও কাস্তে তৈরি করে বিক্রি করেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে অন্যান্য দিনের মতো ঘরের সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। বাইরে গাড়ির শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। জেগে দেখেন, ঘরে তাঁর ছেলে রোহিত নেই। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, ঘুমন্ত রোহিতকে নিয়ে কয়েকজন লোক গাড়ি করে পালিয়ে যাচ্ছে। তখন আর কোনো কিছু চিন্তা না করে তিনি এই গাড়ির পেছনে দৌড়াতে থাকেন।
গাড়ির জানালা ধরে তাঁকে ঝুলতে দেখে ওই রাস্তায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নন্দকুমার ও নন্দু তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তাঁদের সহায়তায়ই গাড়িটি থামাতে সক্ষম হন তিনি। তার পর তিনি তাঁর ছেলেকে ফেরত পান। আর অপহরণকারীদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই গাড়িতে থাকা তিন অপহরণকারীর মধ্যে একজন নারী ছিলেন। তিন অপহরণকারীর নাম পুঙ্গোডি, সিরাজ মহিদীন ও মহম্মদ আলি। মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যেই রোহিতকে অপহরণ করা হয় বলে পুলিশে ধারণা।