অবশেষে বোধদয় হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর এক প্রতিনিধিদল দিল্লিবাসী বিশেষকরে মুসলিমদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে কেজরিওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আওরঙ্গজেব রোডের নাম পরিবর্তন নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর আমীর মাওলানা জালালউদ্দিন উমরীর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, দিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা মৌলিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উর্দু স্কুলে বড় সংখ্যায় শিক্ষকপদ শূন্য রয়েছে। একইভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীকে ওয়াকফ সম্পত্তিতে অবৈধ দখলদারি হঠানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
তারা আরো বলেন, ওয়াকফের ১২৩ টি সম্পত্তি সরকারি দখলে রয়েছে যা বিগত ইউপিএ সরকার দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান এনডিএ সরকার তাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
জামায়াতের আমীর মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘আওরঙ্গজেব রোডের নাম পরিবর্তন করা ঠিক হয়নি। এতে ভালো বার্তা পৌঁছায়নি।’
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এনডিএমসি (নয়া দিল্লি মিউনিসিপাল কাউন্সিল)। কিন্তু অজ্ঞতাবশত আমরাও একে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু আমরা আর কোনো রোডের নাম পরিবর্তনকে সমর্থন করব না।’
প্রতিনিধিদলটি মুখ্যমন্ত্রীকে বাধ্যতামূলক বিবাহ নিবন্ধনে দিল্লি সরকারের নিয়মে মুসলিমদের জন্য মুসলিম পার্সোনাল ল’ অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের পরিবর্তে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে নিবন্ধন প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে সমস্ত সমস্যার ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।
আওরঙ্গজেব রোডের নাম পরিবর্তনের কথা উঠলে সেসময় ‘আপ’ বিধায়ক আমানতউল্লাহ খান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চিঠি লিখে এর বিরোধিতা করেছিলেন। এতে মুসলিমদের অসন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করে তিনি ইংরেজদের নামে যেসব সড়ক আছে তার নাম পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন। যদিও এনডিএমসি যখন নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এতদিন পরে অবশ্য ভুল বুঝতে পেরে এখন ‘আফসোস’ করছেন আপ প্রধান কেজরিওয়াল।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে প্রতিনিধিদলে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের দুই জন ভাইস-প্রেসিডেন্ট নুসরত আলী এবং সাদাতুল্লাহ হুসাইনি, মহাসচিব মুহাম্মদ সেলিম ইঞ্জিনিয়ার, সচিব মুহাম্মদ আহমদ, সহকারি সচিব আতাহার করিম কিদোয়াই এবং ড. কাশিম রসুল ইলিয়াস ছাড়াও দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা ‘আপ’ বিধায়ক আমানতউল্লাহ খান উপস্থিত ছিলেন